অজয় দাশগুপ্ত: সামাজিক মিডিয়ার গুরুত্ব অসামান্য। কিন্তু আন এডিটেড কোনো মিডিয়া মিডিয়া হয় না, হতে পারে না। যে কেউ ইচ্ছেমতো কিছু লিখে আবার মুছে দিতে পারা প্রযুক্তি হতে পারে, কিন্তু মিডিয়া কিনা সে তর্ক থাকবেই। প্রকৃত মিডিয়ায় অক্ষর অবিনশ্বর আর তার দায়ভার নেন একজন মানুষ। যার নাম সম্পাদক। যার কথা লিখছি তিনি ছিলেন প্রকৃত একজন এডিটর। আমাদের যে আপনারা লেখক বলেন, এর স্তম্ভের নির্মাতা হলেন তারা। ইত্তেফাক দেশের একটি জনপ্রিয় পত্রিকা। ছেলেবেলা থেকে তা পড়ার শুরু কিন্তু ৭৫-এর পটপরিবর্তন ও তারপরে এর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। লুব্দক, স্পষ্টভাষী এসব নামের কলাম লেখকদের আধিপত্যের পত্রিকাটিতে লেখার ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু ততোদিনে তার গায়েও লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। সে পত্রিকার সম্পাদক তখন তিনি। মাঝে মাঝে ফোনে কথা হতো, একসময় তিনিই আদেশ দিলেন লেখা শুরু করতে। যতোদিন তিনি ছিলেন, ততোদিন ইত্তেফাকে লিখেছি নিয়মিত।
একসময় তিনি চলে গেলেন দৈনিক বর্তমানে। সেখানেও লিখলাম নিয়মিত। ততোদিনে শরীর তার সাথে বিশ^াসঘাতকতা করতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে যোগাযোগও হয়ে গেলো অনিয়মিত ও বিচ্ছিন্ন। কৈশোরে দিলুর গল্প লিখে মন ভরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। জেনে অবাক হবেন না তার উপন্যাসের নাম, মন্ত্রিসভার পতন। আজীবন স্মার্ট সুবেশী, রুচিবান লেখক তিনি। ভাবতে পারেন তাকে ঘিরেই রচিত হয়েছিল মাসুদ রানা সিরিজের রাহাত খান চরিত্রটি? কথা বলতে গিয়ে বারবার আবিষ্কার করতাম কতোটা গভীর ও ব্যপ্ত তার জানার পরিধি। ব্যক্তিত্ব বিকিয়ে দেওয়া নাম যশ ও পুরষ্কার প্রত্যাশীদের যুগে বিরল আধুনিক মানুষ ও লেখক গতকাল পাড়ি দিয়েছেন অজানা, না ফেরার দেশে। শ্রদ্ধা ভালোবাসায় শেষ প্রণাম প্রিয় রাহাত খান।
আপনার মতামত লিখুন :