গোলাম সারোয়ার : [২] তাদের জীবন চলত অন্যের উপর নির্ভর করে। কোনো কারণে অন্যের দুয়ারে যেতে না পারলে তারা উপবাসে দিন কাটাতো। ভিক্ষাবৃত্তি যখন তাদের নিত্য ঘটনা, তখন কেউ তাদের ফিরিয়ে দিত, কেউবা আবার করুণা করতো যৎসামান্যই যা পাওয়া যেত সারা দিনভর তা দিয়ে পেট চালানোই ছিল কঠিন! সেখানে স্বাস্থ্য, বস্ত্র তো অনেক দূরের বিষয়। ব্রাহ্মণবাড়িযার আশুগঞ্জ উপজেলার এমন ৬জন ভিক্ষুকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
[৩] প্রধানমন্ত্রীর ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন মার্কেটের সামনে শেড নির্মাণ করে কাঁচামাল, মাছ ও ফলের দোকান করে দেয়া হয়েছে তাদের জন্য।
[৪] শুক্রবার (২১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ এনডিসি উক্ত পুনর্বাসন মার্কেটের উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ হায়াত উদ-দৌলা খান, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ মুন্সী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজিমুল হায়দার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
[৫] পুনর্বাসন হওয়া ৬জন হলেন- উপজেলার সদর ইউনিয়নের রমজান মিয়ার স্ত্রী মমতাজ বেগম, চরচারতলা ইউনিয়নের মৃত রবিউল্লাহর ছেলে শফিকুল ইসলাম, আঃ বারিক মিয়ার ছেলে আঃ কাদির, চান মিয়ার স্ত্রী আমিনা বেগম, পুরাগুদাম এলাকার আশ্রাব আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও যাত্রাপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের স্ত্রী মোছাঃ ফাতেমা বেগম।
[৬] আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজিমুল হায়দার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেয়া ভিক্ষুক পুনবার্সন কর্মসূচির আওতায় উল্লেখিত ৬জন ভিক্ষুককে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য শেড নির্মাণ ছাড়াও প্রত্যেককে দোকান পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার টাকার মালামাল কিনে দেয়াহয়েছে। মোট ৬টি দোকানের মধ্যে ২টি ফলের, ২টি কাঁচামালের ও ২টি মাছের দোকান রয়েছে। তারা যেন সুন্দরভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে লাভবান হতে পারে এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হবে।
[৭] দোকান পেয়ে মহাখুশি পুনর্বাসিত ভিক্ষুকরা। তারা কোনো দিন ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে যাবেন না বলে দৃঢ় অঙ্গিকার করেছেন। গৃহিত কর্মসূচির ফলে পুনর্বাসিতদের পরনির্ভরশীল সেই ভিক্ষাবৃত্তির জীবনের অবসান হবে, তাদের দুঃখ যাবে ঘুচে, বদলে যাবে দিন এমন প্রত্যাশা সকলের। সম্পাদনা : হ্যাপি