মো.সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও: [২] সময়ের বিবর্তনে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে কবি রজনীকান্ত সেনের কাল জয়ী কবিতার সেই বাবুই পাখির বাসা।
[৩] শুধু বাবুই পাখি নয়, প্রায় সব ধরনের পাখিই আজ হারিয়ে যাচ্ছে। আর এ দু:সময়ে বাবুই পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাউথনগর, কাঁঠালডাঙ্গী , ভাতুরিয়া ও রামপুর গ্রাম ।
[৪] প্রকৃতির অপরুপ শিল্পের কারিগর বাবুই পাখির বাসা বাতাসে দুলছেএই গ্রাম গুলোতে । ভারত সীমান্ত ঘেষা গ্রামগুলোর তাল - নারিকেল, বট-পাখুরির গাছে গাছে দেখা মিলছে বাবুই পাখির শৈল্পিক অট্টালিকা । চোখ জুড়ানো মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্য দেখতে ভীড় জমাচ্ছে দর্শনাথর্ী ও পাখি প্রেমিক ওই গ্রাম গুলোতে ।
[৫] রাম পুর গ্রামের শামিরুল ইসলাম বলেন , নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এসে এই গ্রাম গুলোতে বাসা তৈরি করছে বাবুই পাখি।তিনি জানান প্রকৃতির নৈসর্গিক এই দৃশ্য উপভোগের জন্য প্রতিদিন অনেকে আসছে গ্রাম গুলোতে ।
[৬] পাখি প্রেমিক রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাচীন বৃক্ষ নিধন, ফসলে কীটনাশক ব্যবহার আর জলবায়ুর পরিবর্তনে আশংকাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে পাখির সংখ্যা। ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও সাহিত্য। ঠাকুরগাঁও সুগার ক্রপ গবেষণা ইন্সিটিটিউটের কৃষি বিজ্ঞানী ড. শরিফুল ইসলাম বলেন ,কীটনাশক ব্যবহারে পরিবেশ অসুস্থ হচ্ছে আর উৎপাদন খরচ বাড়ছে কৃষিতে । তিনি বলেন পোকা দমন ও পরিবেশ সুস্থ রাখতে পাখির ভুমিকা উল্লেখ্য করার মতো ।
[৭] সাহিত্যিক অধ্যাপক মনতোষ কুমার দে বলেন,পাখি নিয়ে কবি সাহিত্যকরা রচনা করেন গান-কবিতা-গল্প ও ছড়া। কিন্তু আজ বৈষ্মিক উষ্ণতায় হারিয়ে যাচ্ছে জীব বৈচিত্র। তিনি বলেন ফসলে অতিরিক্তি কীটনাশক ব্যবহার, নির্বিচারে পাখি হত্যা, প্রাচীন বৃক্ষ নিধন ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে না পাখির। তাই দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে পাখি ।
[৮] হরিপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার এ জি এম আরিফ বেগ বলেন , হরিপুরে প্রাচীন ও উচু গাছের আধিকতার কারণে এই উপজেলায় পাখির সংখ্যা উল্লেখ করার মত ঠাকুরগাঁও আইন জীবি সমিতির সদস্য অ্যাড. সোহরাব হোসেন প্রধান বলেন ,প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র রক্ষায় পাখি হত্যা বন্ধ ও বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাখির অভয় আশ্রম গড়ে তোলা সহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের প্রচলিত আইন প্রয়োগ দরকার।