মো.ইউসুফ মিয়া, রাজবাড়ী প্রতিনিধি : [২] যুগের পর যুগ ধরে বাঙালী যে সকল দেশীয় প্রজাতির মাছের সাথে পরিচিত, সে সকল মাছ এখন বিলুপ্তপ্রায়।
[৩] গত কয়েক দশকে এ দেশের অনেক প্রজাতির পরিচিত দেশীয় মাছ বাজার থেকে প্রায় উধাও হয়ে গেছে। দেশীয় প্রজাতির এসব মাছ বিলুপ্তির কারণে স্থানীয় জেলেদের দুর্দিন যাচ্ছে।
[৪] দেশীয় প্রজাতির এ সকল মাছ মানুষের দেহের পুষ্টি যোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একসময় বাজারে এ সকল মাছের সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ তা বিলুপ্তপ্রায়। কল-কারখানার বর্জ্য, নদী, খাল-জলাশয় ভরাট, জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যবহার বৃদ্ধি, নদী ও হাওরে নাব্যতা সংকট দেশীয় প্রজাতির মাছ কমে যাওয়ার বড় কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
[৫] দেশের কৃষি কাজে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ টন রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহৃত হয়, যা মাটি চুইয়ে জলাভূমিতে যায়। এর কারণেও মাছের উৎপাদন কমছে। জলাশয়-ডোবা ভরাট, অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা, জমিতে কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারসহ মাছের অনূকূল পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মাছের বিচরণ এলাকা নদী, হাওর বাওড় ও বিল দূষিত হয়ে যাচ্ছে।
[৬] মৎস্যজীবীরা জানান, অধিক মুনাফার জন্য হইব্রিড মাছের চাষ করতে গিয়ে জলাশয়গুলো থেকে দেশীয় মাছের বিলুপ্তি ঘটানো হয়েছে। দেশীয় মাছের খাদ্যগুণ অনেক বেশী। চিকিৎসকরা শিশু ও বৃদ্ধসহ সব মানুষের পুষ্টির জন্য সাধারণত এসব দেশীয় মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাজারে সরবরাহ না থাকায় এসব মাছের দাম খুবই বেশী। তাই ক্রেতার চাহিদা মেটাতে আবার পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশীয় মাছ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে।
[৭] রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তারিনা আফরোজ বলেন, পরিবেশ ও নদী দূষণের ফলে এবং নদী ভরাটের জন্য যে সকল দেশীয় প্রজাতির মাছ অবশিষ্ট ছিল তাও এখন বিলুপ্তির পথে। তবে এ সকল দেশীয় প্রজাতির মাছের বিস্তার ঘটানোর জন্য আমরা চাষীদের উদ্বুদ্ধ করছি এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রদর্শনী দেয়া হচ্ছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ