শিরোনাম
◈ অ‌ক্টোব‌রে বাংলাদেশ সফরে ৩‌টি ক‌রে ওয়ান‌ডে ও টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রিজ খেল‌বে ও‌য়েস্ট ই‌ন্ডিজ ◈ ভুয়া ফুটবল দল সাজিয়ে জাপান-যাত্রা, ধরা পড়ে ফেরত পাঠিয়েছে ২২ জনকে! ◈ উচ্চশিক্ষার আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডি করার সুযোগ, সাথে আর্থিক সহায়তাও মিলবে ◈ সাতরাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ◈ আঞ্চলিক হুমকি নিয়ে ভারতের সতর্কবার্তা: বাংলাদেশে মৌলবাদ, চীন সীমান্ত অচলাবস্থা ও পাকিস্তানের ভূমিকা ◈ ইরানে অনুপ্রবেশ করে নারী মোসাদের দুর্ধর্ষ অভিযান (ভিডিও) ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, বরুশিয়ার নি‌শ্চিত জয় রুখে দিলো জুভেন্টাস ◈ দূর্গা পুজাতে ভারতে গেল ৮ ট্রাক ইলিশ ◈ এমবাপ্পের দুই পেনাল্টি গোলে চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লি‌গে রিয়াল মাদ্রিদের শুভ সূচনা ◈ যে কারণে শিবির ক্যাম্পাসে জিতছে, সেই কারণেই বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে জিততে পারে: দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ

প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২০, ০৭:৩৯ সকাল
আপডেট : ২৫ মে, ২০২০, ০৭:৩৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] শহর থেকে গ্রামে সর্বত্রই চলুক বাইসাইকেল, এমনটিই দাবি উঠছে

শাহীন খন্দকার :[২] জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িত থাকায় লকডাউনেও কাজে যেতে হয়েছিল ব্যাঙ্ককর্মী মধুমিতা দত্তগুপ্তকে। প্রথমে তিনি ভেবেই পাচ্ছিলেন না, কী ভাবে লিলুয়া থেকে রাসবিহারী মোড়ের কর্মস্থলে পৌঁছবেন। শেষে মুশকিল-আসান হয়ে উঠল একটি সাইকেল। ছোটবেলার অভিজ্ঞতা সম্বল করেই করোনা লকডাউনের মধ্যেও কাজে পৌঁছেছেন মধুমিতা। তিনি একা নন, কাজে যোগ দিতে হোক বা জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যাওয়া, অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের ভরসা হয়ে উঠছে কলকাতাতে এখন সাইকেল।

[৩] তবে কোভিড-১৯ এই লকডাউনে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে সাইকেলের উপরে নির্ভরতা বেড়েছে সারা বিশ্ব জুড়েই। করোনাকে সঙ্গে নিয়েই আপাতত বেশ কিছু দিন চলতে হবে, এমনই বক্তব্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। দেশে বেশ কিছু কাজের ক্ষেত্র খুলে দেওয়া হচ্ছে। কম যাত্রী নিয়ে সীমিত সংখ্যক বাস-ট্যাক্সিও চলছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সংক্রমণের আশঙ্কা এড়াতে তাই সাইকেল চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক— এ দাবি উঠেছে কলকাতাতেও।

[৪] গণপরিবহণের ভাড়া বৃদ্ধির আশঙ্কা সেই দাবিকে আরও জোরালো করছে বাই-সাইকেল । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক পার্থ প্রতিম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, কলকাতায় সব মিলিয়ে রাস্তার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭৫০ কিলোমিটার। তার মধ্যে বাস চলে না, এমন রাস্তাই বেশি। বাকি রাস্তায়, বিশেষত ব্যক্তিগত গাড়ি চলার যে একমুখী রাস্তাগুলি রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তা বজায় রেখে হাঁটা এবং সাইকেল চালানোকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা ভাবতে হবে বর্তমান পরিস্থিতিতে।

[৫] তিনি বলেন, ‘‘ব্যতিক্রমী সময়ে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিতেই হয়। সরকারের তরফে এ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে মানুষকে সচেতন করতে হবে। তা ছাড়া, সাইকেলে দূরত্ব-বিধি মেনে চলার সুযোগও বেশি।’’ পরিবহণ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ রাস্তায় বেরোতে শুরু করবেন। তখন চাপ বাড়বে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলা বাস-অটোর উপরে। তথ্য সুত্র আনন্দবাজার,

[৬] সে ক্ষেত্রে পরিবহণ পেতে যাত্রীদের অপেক্ষার সময়ও বেড়ে যাবে। স¤প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হলে দিল্লি মেট্রোয় ট্রিপের সংখ্যা বাড়াতে হবে ছ’গুণ, মুম্বইয়ের ট্রেনের ক্ষেত্রে ১৬-১৮ গুণ। কলকাতার মতো শহরে বহু মানুষই কাজের জন্য রোজ ৫-১০ কিলোমিটারের মধ্যে যাতায়াত করেন। দূরত্ব বজায় রেখে গন্তব্যে পৌঁছতে সাইকেল তাঁদের জন্য ভাল উপায় হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

[৭] কলকাতার অধিকাংশ বড় রাস্তায় সাইকেল চালানোর উপরে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা তুলে নেওয়ার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছে ‘কলকাতা সাইকেল সমাজ’ নামে একটি সংগঠন। বর্তমানে একই দাবি তুলছেন আরও অনেকে। ‘বাইকস’ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা নিয়োজিত কলকাতা ও হাওড়ার ‘বাইসাইকেল মেয়র’ শতঞ্জীব গুপ্ত এবং সৌরভ চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্য প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ করেছেন।

[৮] শতঞ্জীব বলেন, ‘‘লন্ডন, বুদাপেস্ট, মেক্সিকো সিটির মতো শহর ইতিমধ্যেই সাইকেল চালানোর বিশেষ রাস্তা তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে শহর সচল রাখতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সে অর্থে করোনা এ নিয়ে ভাবনার একটা আলাদা পরিসর তৈরি করে দিয়েছে।’’ পরিবেশবান্ধব যান হিসেবে সাইকেলের উপযোগিতার প্রসঙ্গ টেনে আনছেন সৌরভ চট্টোপাধ্যায়।

[৯] যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুপসা সেন জানালেন,লকডাউনের সময়ে বায়ুদূষণ কমে যাওয়ার বিষয়টি বিশ্ব জুড়েই আলোচিত হচ্ছে। তিনি বলেন,‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে দূষণ ফের বাড়বে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও বেড়ে যেতে পারে। তাই খেয়াল রাখা দরকার, দূষণ যেন আগের মতো বিপজ্জনক মাত্রায় না পৌঁছয়। করোনা মূলত শ্বাসযন্ত্রের রোগ। দূষণ কিছুটা কমলেও লাভ আমাদেরই। এ ছাড়া, টালমাটাল সময়ে মানুষের উপরে অর্থনৈতিক চাপ কমাতেও সাইকেল নিয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনার দাবি তুলছি আমরা।’’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়