মিজানুর রহমান মিলন : করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে ডিসইন ফেকট্যান্ট ইনজেক্ট করলে রোগী সুস্থ হতে পারে। মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। সারাবিশ্বে ট্রাম্পের এই কথা নিয়ে সমালোচনা চলছে। এবার ভাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে কোন ব্যক্তি আসীন হয়েছে। বাংলাদেশের জয়নাল হাজারী বা মুফতি ইব্রাহিমের সঙ্গে ট্রাম্পের কোনো পার্থক্য আছে কি? আমেরিকার নাগরিক হলে হয়তো তারাও কেউ কেউ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে পারতো। করোনাভাইরাস বিভিন্ন দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে উলঙ্গ করেছে। বিশেষ করে পুঁজিবাদী দেশগুলোকে। তবে সবচেয়ে ন্যক্কারজনকভাবে বেশি উলঙ্গ করেছে আমেরিকাকে। বিশ্বের মধ্যে অর্থনীতিতে ও সামরিকে এক নম্বর শক্তিশালী দেশ আমেরিকা। সেই দেশে এখন মৃত্যুর মিছিল চলছে। মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই মানুষদের কোনো অপরাধ নেই। কিন্তু এটা মার্কিন রাজনৈতিক সিস্টেমের ব্যর্থতা, মার্কিন পুঁজিবাদের ব্যর্থতা এবং বর্তমানে ক্ষমতাসীন রিপাবলিক্যান ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যর্থতা। তেলের দাম হু হু করে পড়ে গেছে। ২০ এপ্রিল এই প্রথমবারের মতো ঋণাত্মক মূল্যে বিক্রি হয়েছে তেল। কেউ কেউ ব্যাঙ্গ করে লিখেছে এভাবে চলতে থাকলে আমেরিকাসহ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোকে সবজি বিক্রেতার মতো ভ্যানগাড়িতে তেল বিক্রি করতে হবে।
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ টিকে আছে মোটে তিনটি উপাদানকে কেন্দ্র করে। ডলার, সর্বাধুনিক অস্ত্র এবং তেল। এর মধ্যে তেলই হচ্ছে মুখ্য আর বাদবাকি দুইটা হচ্ছে গৌণ। কারণ আমেরিকার ডলার আর অস্ত্র ব্যবসা টিকে আছে মূলত তেল ব্যবসার কারণে। আরব রাজতান্ত্রিক দেশগুলো কোটি কোটি টাকার ক্রুড তেল বিক্রি করে আমেরিকা ও ইউরোপে দেদারছে ইনভেস্ট করে এবং মার্কিন ও ইউরোপের অস্ত্রের সিংহভাগ ক্রেতা আরবরাই। সেই তেল ব্যবসা লাটে উঠলে মার্কিন ও ইউরোপীয় অস্ত্র ব্যবসাও লাটে উঠবে। মার্কিন অস্ত্রের প্রধান ক্রেতা সৌদি আরব। সেই সৌদি আরবের অর্থনীতির ৮০ শতাংশ তেলনির্ভর। সেই তেলের যখন এ রকম বাজার ভবিষ্যতে সৌদি অর্থনীতির কী হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে সৌদি আরব দ্রুতই একটা ঋণগ্রস্ত দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। সেটা হলে মার্কিন অস্ত্রের রমরমা ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যাবে এবং সৌদি রাজতন্ত্রেরও পতন ঘটবে। মার্কিন আধিপত্যবাদও ক্রমান্বয়ে ভেঙে যাবে। এভাবেই পতন হবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের। করোনা উত্তর পৃথিবীর শক্তির ভর কেন্দ্র আমেরিকা ও ইউরোপ নয়, হয়তো শক্তির কেন্দ্র হবে এশিয়া। ফেসবুক থেকে