কামাল হোসেন : [২] সারা বিশে^ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেওয়ার পরও এ বিষয়ে নুন্যতম সচেতনতা নেই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-পথ দিয়ে চলাচলকারি যাত্রীদের।
[৩] শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখতে প্রতিটি মানুষকে অন্তত তিন ফুট দুরত্বে থাকতে বলা হলেও নৌ-পথে পারাপার হওয়া যাত্রীরা তিন ইঞ্চিও মানছেনা। অভিযোগ রয়েছে দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশের সামনে ফেরিতে হাজারো লোক যাতায়াত করলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না ।
[৪] ঘাট সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে লকডাউন চলছে। এতে করে এ্যাম্বুলেন্স ও পন্যবাহি ট্রাকসহ জরুরী যানবাহন পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-পথে ১৬টি ফেরির মধ্যে ৫টি ফেরি চালু রেখে সীমিত আকারে সচল রাখা হয়। কিন্তু ফেরি চলাচল চালু থাকার সুযোগে বিভিন্ন সময় জরুরী যানবাহনের চেয়ে সাধারণ মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে এবং স্বাস্থ্য বিধি না মেনে গাদাগাদি করে নদী পারাপার হচ্ছে। এতে সরকারের বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সারাদেশে যে লকডাউন চলছে তা ব্যাহত হয়।
[৫] সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-পথে সকল প্রকার নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরেও ঢাকাসহ আশেপাশের জেলা থেকে আগত হাজারো মানুষ ফেরিতে করে দৌলতদিয়াঘাটে এসে দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় প্রবেশ করছে।
[৬] ঢাকা-নারায়নগঞ্জ থেকে আসা সাতক্ষীরা গামী যাত্রী কমল বিশ^াস জানান, আমি নারায়নগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি করোনা আতঙ্ক মাথায় নিয়ে মায়ের মৃত্যুর কারণে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পরিবারের সকলকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতে হচ্ছে। গন-পরিবহন বন্ধ থাকায় নারায়নগঞ্জ থেকে এ্যাম্বুলেন্স করে পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে আসি সেখান থেকে ফেরিতে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছাই।
[৭] ঢাকা-মিরপুর থেকে আসা যশোর গামী যাত্রী আরিফুল ইসলাম জানান, আমি ঢাকার একটি সিএনজি গ্যারেজে কাজ করি প্রায় ৬মাস হলো বাড়ী থেকে ঢাকায় এসেছি করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে এতদিন ঢাকায় অবস্থান করেছি। কিন্তু এখন আর পারছিনা, প্রতিরাতে মায়ের কান্না-কাটি, স্ত্রী সন্তানের বুক-ফাটা আর্তনাতে আমি দিশেহারা হয়ে পরেছি। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি।
[৮] দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুন্নাফ বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া থেকে কোন যাত্রী যাতে কোন নৌযানে পারাপার হতে না পাড়ে আমরা সর্বদা সেই চেষ্টা করছি। এর মধ্যেও ফাঁকে-ঝোঁকে অনেক লোক চলে যাচ্ছে। যাত্রী পারাপারে পাটুরিয়ায় কঠোর হলে এমন অবস্থা হত না। যাত্রী পারাপার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বৃষ্টি উপেক্ষা করেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
[৯] বিআইডবিøউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, এতদিনে লোকজনের চাপ ছিলনা হঠাৎ করেই আজ সকালে যাত্রীদের চাপ পড়ায় দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ও সেনাবাহিনীর তৎপরতায় তা নিয়ন্ত্রণে আসে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :