আসিফ আকবর : আমি অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত। আমার স্বজাতি কিছু শিল্পীদের দেখলাম এই দুঃসময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অর্থ সাহায্য চাইছেন। বাংলাদেশে বিগত দুই দশকে আমি দেখেছি শুধু তারকা শিল্পীরাই সরকারি অনুদান পেয়েছেন। সাধারণ মিউজিশিয়ানদের কপালে জুটেছে ভিক্ষার চাল কাঁড়া আকাঁড়া। তারকা শিল্পীদের পাশে অন্য শিল্পীরাও অর্থ সাহায্য নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। সেই শিল্পী সুস্থ হয়ে আবার ইনকাম শুরু করলেও সাহায্যের টাকা ফেরত দেননি। দিলে হয়তো একটা ফান্ড করা যেতো অন্যদের সাহায্যার্থে। ক’দিন আগেও ফেসবুকে দেখেছি শিল্পীরা একের পর এক শোতে এই বিমান থেকে সেই বিমান দৌড়াচ্ছেন। ডেইলি তিনটা চারটা শো, দম ফেলার টাইম নেই, গিগ চলছেই। গত কয়েকদিনের দুর্যোগে সেই হাওয়া উড়ে গেছে। মিউজিশিয়ানরা বিপদে আছেন সত্য। তবে যাদের পেছনে বাজিয়েছেন তাদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত এখন অন্তত লোন দিয়ে। কথায় কথায় সাহায্য প্রার্থনা করে সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের ভিক্ষুক প্রমাণের মানে কী? মানুষ এগুলো স্বাভাবিকভাবে নেয় না, কারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকার একটা ভ্যালু আছে। দেশে আরও মানুষ আছে, তাদেরও সমস্যার অন্ত নেই। আরেকটা প্রশ্ন মাথায় ঘোরে, এই সাহায্যপ্রার্থী শিল্পীর কি কোনো পরিবার নেই? অবশ্যই আছে, আসলে সাহায্য চাওয়া একটা রোগে পরিণত হয়েছে। মানুষের গালি খাওয়া সত্ত্বেও সরকারি সাহায্যের টাকাটা অমৃত লাগে।
অনেকদিন চেষ্টা করেছি শিল্পীদের সংগঠন তৈরি করতে। জীবনের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করেছি মহান শিল্পীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টায়। আত্মকেন্দ্রিক সিনিয়রদের একাট্টা না করতে পেরে জুনিয়রদের নিয়েও চেষ্টা করেছিলাম, লাঙ্গল জোয়ালের কাহিনিই চলছে। একটু দূরত্বে গেলেই সিনিয়ররা ছোটদের বলে বেয়াদব, আর ছোটরা সিনিয়রদের দেয় গালাগাল। সামনাসামনি দেখা হলে শ্রদ্ধা আর স্নেহের ঠেলায় স্টার জলসার নাটকও ফেল। আমার প্রশ্ন সরকার যদি সাহায্য দেয় তাহলে কার কাছে দেবে? সেই সাহায্য কে ভাগাভাগি করে দেবে? ক্রাইটেরিয়া কী হবে? আদৌ কোনো সংগঠন আছে কি আপনাদের? এগুলোর কোনো উত্তর নেই জানি বরং ভাগের রুটি নিয়ে কামড়াকামড়ি শুরু হবে নতুন আঙ্গিকে। আমরা প্রতিষ্ঠিতরা ভিক্ষাবৃত্তিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি, ওইদিকে রানু ম-ল শাড়ি-গয়নার জন্য ডিজাইনার নিয়োগ দিয়েছে। আমার মনে হয় ঐক্যহীন গানের জগতে আমরা সবাই জিলাপি কিংবা জিলাপির সন্তান। ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন। ফেসবুক থেকে