আরিফ রহমান : প্রায় প্রতিদিন গড়ে দুই-তিনজন আমাকে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত প্রশ্ন করেন। আমি সাধ্যমতো ইনফো দেওয়ার চেষ্টা করি। সবসময় যে পারি তা না। অনেক সময়ই পারি না। আউটবক্সের প্রশ্নগুলো প্রতিদিন দেখি না। বেশ ক’দিন পর পর একসঙ্গে অনেকগুলো প্রশ্ন পাই। এই প্রশ্নগুলোর একটা টেন্ডেন্সি আছে। টেন্ডেন্সি হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব নিয়েই সব আগ্রহ। ‘জন’ বা পাবলিকের সেক্রিফাইস নিয়ে আগ্রহ নেই। তাও যুদ্ধ নিয়ে কিছু আগ্রহ আছে, জেনোসাইডের সেক্রিফাইস নিয়ে আরবানদের কোনো আগ্রহই নেই। শাসকশ্রেণি শাসনের স্বার্থেই কেন্দ্রীয় বিষয়াদি নিয়ে চর্চা করাকে সামনে রাখবে, কিন্তু জনগণের ভেতরে তো জনগণের সেক্রিফাইসের ইতিহাসটা জানার আগ্রহ থাকতে হবে। জনগণের মুক্তিযুদ্ধকে যারা ছিনতাই করেছে তাদের হাত থেকে মুক্তিযুদ্ধকে ছিনিয়ে আবার জনগণের হাতে ফিরিয়ে আনতে পারে কেবল জনগণই। মুক্তিযুদ্ধ এখানে একইসঙ্গে ভাতের লড়াই, সেক্যুলারিজমের লড়াই, কালচারের লড়াই, সাম্য আর মানবিক মর্যাদার সবচেয়ে বড় লড়াই। রিকশাচালকের ন্যায্য ভাড়ার প্রাপ্তির অধিকার থেকে পাঠক সমাবেশ থেকে রবিঠাকুরসমগ্র ক্রয়ের অধিকার সব কিছুর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের রিলেশন আছে।
শাসকযন্ত্র মুক্তিযুদ্ধকে দমন-পীড়ন আর শোষণের হাতিয়ার বানানোর দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় সাধারণ জনতার সামনে মুক্তিযুদ্ধের রূপ দাঁড়িয়েছে মুখোমুখি পজিশনে। আমার প্রস্তাব হচ্ছে জনতাকেও শাসকের সামনে মুক্তিযুদ্ধকেই ছুড়ে দিতে হবে। তাহলেই প্রমাণ হবে শাসকের মুক্তিযুদ্ধ বেশি শক্তিশালী ছিলো না জনতার। সরদার ফজলুল করিম এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ‘মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে এই মাটির একটি রিকশার একটি প্যাডেল ঘোরাকেও ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়’। ফেসবুক থেকে