জয়তী ভট্টাচার্য : বৃদ্ধাশ্রমে মা’র থাকা নিয়ে সারাদিন অনেক কুম্ভীরাশ্রুর প্রকাশ নিয়ে পড়ছিলাম। যারা লিখলেন আশা করি তারা ছেলেকে পাড়ার স্কুলে পড়াবেন এবং তাদের উচ্চ শিক্ষা দেবেন না। যদিও বা দেন, বিদেশে ছেলেটি নিজের কৃতিত্বে যাবার সুযোগ পেলে পাঠাবেন। যারা বুক বাজিয়ে বলেন, আমার ছেলে আমেরিকায় সেট্লড, তারা আশা করবেন না, অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব কাজ ফেলে সে তার উত্তরাধিকা সূত্রে পাওয়া ফ্লাইট ও ছুটি পেয়ে যাবেই। একমাত্র মেয়ে হলে তারা আশা করি বিয়ে দেবেন না। আজকে যখন গোটা পৃথিবী একটা ঘর।
হাতে আপনার ছেলের পাঠানো দামি আই প্যাড ও টাকা। আপনি পৃথিবীর উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসেন। কিন্তু ছেলেকে ইনভেস্টমেন্ট মনে করেন। সোসাইটিতে নাম কেনার জন্য ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে আবার নালিশও করেন। আসল কথা হলো বৃদ্ধাশ্রম এ সময় অতি প্রয়োজনীয় সংগঠন। সেটা কোনো কারাগার নয়। একা বাড়িতে অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা খুন হয়ে যান। বৃদ্ধাশ্রমে চিকিৎসকের ব্যবস্থা থেকে কথা বলার সঙ্গী সবই থাকে।
আর ছেলে বউ বা মেয়ে জামাই আপনার মুখের সামনে কেন বসে থাকবে সবসময়? জন্ম দিয়েছেন বলে? সেটা নিয়েও নিশ্চয়ই তারা আকুলভাবে বায়না করেনি পৃথিবীতে আসার জন্য। বয়স্ক মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য বৃদ্ধাশ্রম আধুনিক জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। যারা বউ মার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি কিংবা যাদের ছেলেমেয়ে বিদেশে থাকে, তাদের বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বাঞ্ছনীয়। মেলোড্রামা করে লাভ নেই। ফেসবুক থেকে