কাজী নুসরাত : ইতিহাসে নেপোলিয়নের মত খুব কম শাসকই খুব দ্রুত উত্থান করে আবার নিমিষেই পতনের স্বীকার হয়েছেন। আধুনিক যুগের সূচনাও হয়েছে নেপোলিয়নের উত্থানের মধ্য দিয়ে।একজন ফরাসী হিসেবে তিনি যে সাফল্য দেখিয়েছেন তা সত্যিই মহৎ তবে তার সাফল্য যে বেশিদিন স্থায়ী হয়নি তা ইতিহাসের আরেক বিস্ময়।
১৭৬৯ সালের ১৫ আগস্ট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ইতালির কর্সিগো নামক দ্বীপের ক্ষুদ্র অংশ আজাসিওতে এক সম্ভ্রান্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার কার্লো বোনাপার্ট ও মা ছিলেন লেটিজিনা বোনাপার্ট। নেপোলিয়নের জন্মের কিছু আগে কর্সিগো দ্বীপটি ফরাসী সাম্রাজ্যের অধিভুক্ত হয়। ফলে জন্মগতভাবেই তিনি ছিলেন ফরাসী নাগরিক।
নেপোলিয়ন ছিলেন অত্যন্ত চৌকস ও মেধাবী একজন ছাত্র। ইতিহাস, অঙ্ক, যুদ্ধবিজ্ঞান ও সমকালীন দার্শনিকদের লেখার প্রতি তাঁর বিশেষ ঝোঁক ছিল। ষোল বছর বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর পড়াশুনা ছাড়তে হয় তাকে। এরপর অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে নেপোলিয়ন একজন সামান্য সৈনিক হিসেবে ফরাসী সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। প্রাথমিকভাবে টুলন সমুদ্র বন্দর থেকে ব্রিটিশদের বিতাড়িত করতে জোরালো ভ‚মিকা রেখে তিনি অসামান্য সামরিক খ্যাতি অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৭৯৫ সালে ফ্রান্সে রাজতন্ত্রীদের বিদ্রোহ দমন করে জাতীয় মহাসভাকে রক্ষা করেন। ডাইরেক্টরির শাসনামলে তিনি ইতালি অভিযানের সেনাপতি নিযুক্ত হন। ইতালি অভিযানের সাফল্যই তাকে খ্যাতি ও গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যায়।
নেপোলিয়ন ১৮০৪ সালে নিজেকে ফ্রান্সের সম্রাট ঘোষণা করেন। তৎকালীন সময়ে তার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। সিনেটে নতুন আইন পাশ করে সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে নেপোলিয়নকে সম্রাটের মর্যাদা দান করা হয়। ক্যাথলিক পোপ স্বয়ং প্যারিসে এসে সম্রাটের প্রতীক চিহ্ন ও রাজমুকুট নিজের হাতে তুলে দেন নেপোলিয়নকে । ক্ষমতার নানা উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের দুর্গম সেন্ট হেলেন দ্বীপে নির্বাসিত থাকাকালে ১৮২১ সালের ৫মে মৃত্যু হয় তাঁর।