মাসুম মাহবুব
পাকিস্তানে বহু সরকার দেখেছেন কিন্তু ইমরান খান ক্ষমতায় এসে একের পর এক ছক্কা হাঁকাচ্ছেন। প্রথমে কুরআন-হাদিস নির্ভর কিছু আইন পাস করেছেন। সরকারি ব্যয় কমিয়েছেন। তারপর সৌদি আরবের সাথে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আর্থিক চুক্তি করলেন। এই চুক্তির ফলে পাকিস্তান এশিয়ার অনেক দেশকে ছাড়িয়ে যাবে। এমবিএসকে যারা ইহুদি কাফেরদের দালাল বলছেন তারা কী বলবেন, পাকিস্তানকে সৌদির এই সাহায্য কেন? ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, সৌদির অর্থায়নে পাকিস্তান আগামীতে এশিয়ায় মোড়লগিরি করবে, যেটা আমেরিকার সাহায্যে ভারত করতো। যাদের সৌদির বিষয়ে এলার্জি বেশি তারা বিষয়টা কীভাবে নেবেন? পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে বিশ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই বিশাল অর্থের বড় একটি অংশ বিনিয়োগ করা হবে অয়েল রিফাইনারি খাতে, যেখান থেকে পাকিস্তান প্রতি বছর প্রফিট করবে ১.২ বিলিয়ন ডলার। যা পাকিস্তানের পুরো অর্থনীতির চিত্রই পাল্টে দেবে। এছাড়া কৃষি, পর্যটন, সামরিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে আরো ৭টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইমরান খানের অনুরোধে সৌদি আরবের জেলে থাকা দুই হাজার একশো সাতজন বন্দিকে তাৎক্ষণিক মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে এমবিএস। পাকিস্তানকে বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমানরা ভালোবাসেন, অন্যদিকে ঘৃণা করেন ভারতকে। পাকিস্তানকে এই বিশাল সাহায্য করেছে যে সৌদি আরব তাকে কিন্তু আপনারা গালি দিচ্ছেন! সৌদি সম্পর্কে আমরা যখন পজেটিভ লিখি তখন কিছু আঁতেল আমাদের গালি দিতে দেরি করে না।সৌদি কেন পাকিস্তানকে মোড়ল বানাচ্ছে এর উত্তর সৌদিবিরোধীরা না জানলেও ভারত আমেরিকা খুব ভালো করে জানে। তাই এমবিএসের পতনে কখনো খাশোগজি গল্প সাজানো হয়, কখনো ড্রোন পাঠিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পাকিস্তানকে বড় অঙ্কের সাহায্য করলেও গত এক যুগে বাংলাদেশকে চোখে পড়ার মতো কোনো বড় সাহায্য করেনি সৌদি। সৌদি যুবরাজ এবার এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করবেন, কিন্তু এই তালিকায় নেই বাংলাদেশ, কিন্তু কেন? কারণ সৌদি আরব একজন ইমরান খান বাংলাদেশে খুঁজে পায়নি। যাদের বাংলাদেশের ইমরান খান বানাবেন তারাই ইরানের হয়ে সবচেয়ে বেশি সৌদি বিরোধিতা করছেন। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে এবার সেনাবাহিনীর ভূমিকা যথেষ্ট পক্ষপাতিত্ব হওয়ার পরও সৌদি কেন দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে একটি চুক্তি করেছে? আগামীতে এই সেনাবাহিনী সৌদির ইশারায়ই চলবে না এর গ্যারান্টি কী? কারণ পাকিস্তানের নওয়াজ শরীফকে একই কায়দায় সরানো হয়েছে। তাই সৌদিকে গালি দেবার আগে ভালো করে তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে হবে। ফেসবুক থেকে