শিরোনাম
◈ শ্রীলঙ্কার কা‌ছে আফগা‌নিস্তান হে‌রে যাওয়ায় সুপার ফো‌রে খেলার সু‌যোগ পে‌লো বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়নশী‌পে নেপালকে ৪-০ গো‌লে হারা‌লো বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কার প্রতি বাংলা‌দে‌শের সমর্থন, চোখ এড়ায়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ◈ আফগানিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচের ফল যেমন হলে লাভ বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় বিএনপি : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:১৩ দুপুর
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:১৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাভারের শিল্পবর্জ্য আর অবৈধ দখলদারদের প্রধান লক্ষ বংশী নদী

এম এ হালিম, সাভার থেকে: রাজধানী ঢাকার উত্তরের (সাভার-আশুলিয়া-ধামরাই) বিশাল এলাকা জুড়ে প্রবাহিত বংশী নদী এখন শিল্পবর্জ্য ও অবৈধ দখলদারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে পরিত্যক্ত শিল্পবর্জ্য দুষণ ও অবৈধ দখলদারদের কারনে এক সময়ের খরস্রোত বংশী আজ হুমকির মুখে।

বর্তমানে যে কয়টি নদীর জল প্রবাহ শুষ্ক মৌসুমে মরে যায় তার মধ্যে সাভার-আশুলিয়ার বংশী নদী অন্যতম। সাভার, ধামরাই, আশুলিয়া ও সিংগাইরসহ বিস্তীর্ন এলাকাজুড়ে প্রবাহিত বংশী নদীকে ঘিরে হাজার হাজার মানুষ এক সময় জীবিকা নির্বাহ করতো। ঐতিহ্যবাহী এই নদীটি শিল্পবর্জ্য ও ভুমি দস্যুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত হওয়ায় বর্তমানে বেঁচে থাকার আশায় যেন চিৎকার করে কাঁদছে।

এদেশের রপ্তানী আয়ের অজুহাতে অপরিকল্পিত শিল্প-কারখানা স্থাপনের পর এসব শিল্পের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলে লক্ষ লক্ষ মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন বংশী নদীকে দিনে দিনে গলা টিপে হত্যা করছে। অনেক শিল্প কারখানায় পানি শোধনাগার থাকলেও রীতিমতো তারা তা ব্যবহার করছে না। সরাসরি দূষিত পানি নদীতে ফেলে দিচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাভারের আমিন বাজারের তুরাগ নদী প্রান্ত থেকে ধামরাই এলাকা জুড়ে বিস্তীর্ন প্রায় ৪০ কিঃ মিঃ দীর্ঘ বংশী নদী। অবৈধ দখলদাররা নদী জবর দখলের মহা উৎসবে মেতে উঠেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকার নদী দুষণরোধে শিল্প কারখানাগুলোকে বর্জ্য ফেলতে নিজস্ব ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থাসহ যে সকল কারখানা থেকে বর্জ্য নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে তাদেরকে বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট (ইটিপি প্লান্ট) এর মাধ্যমে দুষিত বর্জ্য পরিশোধন করে নদীতে ফেলানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারী বিধি নিষেধ থাকা সত্বেও প্রভাবশালী শিল্প মালিকরা তাদের শিল্পবর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলে পরিবেশ দূষন করছে। সাভারের হেমায়েতপুর এলাকা থেকে সাভার পৌর এলাকা, নয়ারহাট, আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল, ডিইপিজেডসহ প্রায় কয়েক শতাধিক গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলছে। এর মধ্যে অল্প কিছু ডাইং ফ্যাক্টরী আছে যারা নিজস্ব ডাম্পিং ব্যবহারসহ বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বর্জ্য পরিশোধন ব্যয়বহুল হওয়ায় কিছু ডাইং ইন্ডাষ্ট্রির মালিক বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট (ইটিপি প্লান্ট) বসালেও সেটা ব্যবহার না করে অভিনব কায়দায় সরকারী লোকজনকে ফাঁকি দিয়ে বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলছে। একটি ইটিপি প্লান্টে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার ডলার মুল্যের মেডিসিন ব্যবহার করতে হয়। একটি ডাইং ফ্যাক্টরীতে বর্জ্য পরিশোধন করতে মাসে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার মেডিসিন ক্রয় করতে হয়। উৎপাদন ব্যায় কমাতে আর বেশী লাভের আশায় দেশের নদীকে ধ্বংস করছে।

একদিকে নদী দূষন অন্যদিকে নদী দখলের প্রতিযোগিতায় আজ বংশী নদী হুমকির মুখে। এদিকে গত ২৯শে অক্টোবর সাভার উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির কমিটির আহবায়ক শেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে ওই সভায় নদীতীরের অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন ও নতুন করে যাতে নদী দখল করতে না পারে সে ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে দায়িত্ব দেওয়া হয় ।এছাড়া পৌর মেয়রকে নদী তীরে আবর্জনা না ফেলতে দায়িত্ব দেয়া হয় কিন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে বিগত তিন মাস চলে গেলেও কোন সিদ্ধান্ত কার্যকর বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে নদী দখলের তালিকা নিয়েও  বিভ্রান্তি কখন ও বলা হচ্ছে ৬২ আবার কখন ও বলা হচ্ছে ৬৫ , বাস্তবে এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে জানা গেছে স্থানীয় লোকজন সূত্রে। সাভার তেঁতুলঝোড়া থেকে নয়ারহাট পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে কয়েকশত অবৈধ স্থাপনা।

এব্যাপারে জানতে চাইলে সাভার সহকারী কমিশনার(ভূমি) প্রনব কুমার ঘোষ প্রশাসনের পক্ষে নজরদারি রয়েছে যাতে নতুন করে কেউ নদী তীর দখল করতে না পারে। দখলদারদের তালিকা প্রস্তুুত করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা গ্রহন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়