নাঈমা জাবীন : পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির বলেছেন, দেশে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা খুব একটা চোখে পড়ে না। বিশ্বজনীনতার যুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন ও উন্নয়ন হচ্ছে। প্রতি বছর সফটওয়্যার নতুন ভার্সন পাচ্ছে, নতুন নতুন প্যাকেজ ও টুল বের হচ্ছে। এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সর্বশেষ আর্টিকেল, বই, রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত না থাকলে আমাদের গবেষণার মান উন্নত হবে না। জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞান উৎপাদনের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তখন আমাদের পরাজয় হবে অবশ্যম্ভাবী। আমাদের দুর্ভাগ্য, অনেক বিভাগের শিক্ষকই শিক্ষকতার শুরুর দিকেই কেবল বিভাগের নোটপত্র তৈরি করেন অথবা তার ছাত্রকালীন নোটই ক্লাস নেয়ার জন্য ব্যবহার করেন। এভাবে চলতে থাকে বছরের পর বছর। ফলে তার জ্ঞানের গভীরতা ও পরিধি যেমন বাড়ে না, তেমনি শিক্ষার্থীরাও বঞ্চিত হয় প্রাগ্রসর জ্ঞানের সংস্পর্শ থেকে। সূত্র : বণিক বার্তা
এমন অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেগুলো গবেষণা খাতে নিজেদের ব্যয় দেখিয়েছে। কিন্তু কোনো গবেষণা প্রকল্প ওই বছর পরিচালিত হয়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা মাস্টার্সে যে থিসিস করেন, তা এ খাতে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণাগত কাঠামো এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরই অবদান বেশি। বাংলাদেশে তার উল্টো। এখানকার অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়েও প্রশ্ন আছে।
সরকারকেও এক্ষেত্রে আন্তরিক সহযোগী হতে হবে। তবে উদ্যোগ গ্রহণ ও সমন্বয়টা করতে হবে ইউজিসিকেই। একজন ভালো গবেষককে গবেষণাকর্মে উৎসাহিত করতে হলে তার জন্য চাই প্রণোদনা প্যাকেজ। সরকার শিক্ষা খাতে যে বরাদ্দ দেয়, তা আরো বাড়াতে হবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো ফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ নানা বঞ্চনার শিকার হয়ে দেশের বাইরে গেছেন, তাদের বড় এক অংশ নিজ নিজ ক্ষেত্রে অত্যন্ত কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন। কখনো রাজনৈতিক কারণেও এদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার মান নিশ্চিতকরণ ও সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেয়া প্রয়োজন। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে ভূমিকাটা নিতে হবে ইউজিসিকেই।
আপনার মতামত লিখুন :