মানবজমিন : গেল আগষ্ট মাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। তারপর থেকে চার মাস তাকে নাটক-চলচ্চিত্র কোনোটিতেই দেখা যায়নি। সম্প্রতি তিনি আবারো অভিনয়ে ফিরেছেন। অভিনয়ে ফিরে দারুণ উচ্ছ্বসিত এই অভিনেত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক দিন পর সবার কাছে আসতে পেরে ভালো লাগছে। এতটা দিন আমি যেন আমার ভেতর ছিলাম না।
আমি কাজের মানুষ। কাজের মধ্যে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
কাজে ফেরার পর প্রথম দিনেই শুটিং স্পটে সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছেন। নিয়মিত অভিনয় করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। আমি আবারো কাছ থেকে দেখলাম শিল্পীরা অনেক উদার মনের হয়ে থাকেন। না হলে আমাকে এত সহজে হয়তো কেউ আপন করে নিতেন না। গেল ১৪ই জানুয়ারীতে নির্মাতা দীপঙ্কর দীপনের ‘টক্কর’ শিরোনামের একটি সিরিয়ালের মধ্য দিয়ে নওশাবা শুটিংয়ে ফেরেন। এর আগে এই নির্মাতার ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। সেই ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের কাছে দারুণ প্রশংসিতও হন। এদিকে এই সময়ে এই অভিনেত্রীর দুটি ধারাবাহিক নাটক প্রচার হচ্ছে এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আইয়ে। ধারাবাহিক দুটি হলো ‘সোনালি দিন’ ও ‘সাত ভাই চম্পা’। দুটি ধারাবাহিকই দর্শক দেখছেন বলে জানান তিনি। ছোট পর্দা দিয়ে নওশাবার প্রত্যাবর্তন। তবে তার লক্ষ চলচ্চিত্র বলেই জানান। এই সময়ে নওশাবার হাতে কয়টি চলচ্চিত্র আছে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার অভিনীত তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায়। এগুলো হলো এন রাশেদ চৌধুরীর ‘চন্দ্রাবতী’, মিজানুর রহমান লাবুর ‘৯৯ ম্যানশ’ ও ওয়াহিদ তারেকের ‘আলগা নোঙর’। এই ছবিগুলোতে নওশাবাকে কেমন চরিত্রে দর্শক দেখবে। নওশাবা বলেন, আমি গতানুগতিক নায়িকা নই। আমি গল্পের নায়িকা। বৈচিত্রময় চরিত্রে অভিনয় করতেই আমার ভালো লাগে। তারই ধারাবাহিকতায় এই ছবিগুলোর একটিতে আমাকে সীতা, দ্বিতীয়টিতে প্রকৌশলী ও অন্যটিতে এতিম মেয়ের চরিত্রে দেখা যাবে। তিনটি চলচ্চিত্রই এই বছর মুক্তি পাবে। এই অভিনেত্রীর সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র হলো ‘স্বপ্নের ঘর’। এটি নির্মাণ করেন তানিম রহমান অংশু।
অভিনয়ের বাইরে এই অভিনেত্রী সম্প্রতি ‘আলোর খোঁজে’ শিরোনামের একটি শর্টফিল্ম নির্মাণ করেছেন। হঠাৎ ক্যামেরার পিছনে কাজ করার কারণ কি? ‘ঢাকা অ্যাটাক’খ্যাত এই নায়িকা বলেন, আমি বানিজ্যিক কোনো চিন্তা ভাবনা থেকে এটি নির্মাণ করিনি। আমি গেল চার মাস এক ধরনের ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। তখন বন্ধুদের নিয়ে এটি নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ‘আলোর খোঁজে’ মানেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম। এই মহূর্তে ক্যামেরার পিছনে কাজ করার আমার কোনো ইচ্ছে নেই। আমি অভিনয়ের মানুষ নিয়মিত অভিনয় করতে চাই।
গেল বছরের সব ভুলে নতুন কিছু করতে চাই। নতুন বছর নিয়ে কোনো পরিকল্পনার ছক আঁকা হচ্ছে? নওশাবার সোজা সাপ্টা উত্তর, না। আমি পরিকল্পনা করে কিছু করি না। যখন যে কাজটি আমার ভালো মনে হয় সেটি করার জন্য এগিয়ে আসি। আমি বরাবরই চেষ্টা করি ভালো কিছু করার জন্য। আলাপনে সর্বশেষ তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, শোবিজে কোন বিষয়টির পরিবর্তন দেখতে চান? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিবর্তন আমার একার দ্বারা সম্ভব নয়। তবে আমি মনে করি আমাদের নিজেদের উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সবাই নিজেকে পরিবর্তন করলে শোবিজের অসংগতিগুলো দূর হয়ে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :