শিরোনাম
◈ গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিল বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ ◈ ৫ দুর্বল ইসলামী ব্যাংক: আমানতকারীরা যেভাবে টাকা ফেরত পাবেন ◈ জুলাই সনদ ও গণভোটের দাবিতে জামায়াতসহ আট দলের বিক্ষোভ, রাজধানীতে তীব্র যানজট ◈ এক্সিম ব্যাংকের সাবেক এমডি ফিরোজ গ্রেফতার ◈ ফের বেড়েছে সোনা-রুপার দাম, দেশে ভরি কত? ◈ ইসির চিঠিতে ‘আমজনতার দল’-এর নিবন্ধন না দেওয়ার নয় কারণ প্রকাশ ◈ ও‌য়েস্ট ই‌ন্ডিজ‌কে ৩ রা‌নে হা‌রি‌য়ে সি‌রিজ সমতায় নিউ‌জিল‌্যান্ড  ◈ এবার কোচ হ‌য়ে জাতীয় দলের ড্রেসিং রু‌মে রোমাঞ্চিত আশরাফুল ◈ ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণ করতে হবে : তারেক রহমান ◈ পদ না ছেড়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে যা জানালেন অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর, ২০১৮, ০৪:৫৭ সকাল
আপডেট : ২৬ নভেম্বর, ২০১৮, ০৪:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নির্বাচন, সম্ভাবনা না সংকটের?

কাকন রেজা : তাইওয়ানে সমকামিতার প্রশ্নে গণভোট হচ্ছে। স্কটিশরা স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট করেছে। সর্বসাধারণের মত জানার জন্য গণভোট একটি উপযুক্ত পন্থা। বিশ্বের অনেক দেশই বিশেষ ক্ষেত্রে নাগরিকদের মতো জানার জন্য গণভোটের স্মরণাপন্ন হয়। আমাদের দেশেও এক সময় গণভোটের ব্যবস্থা ছিলো। এখন নেই। কেন নেই, সে অনেক বৃত্তান্ত, আপাতত আলোচনার বিষয় সেটা নয়। এখন আলোচনার বিষয় হচ্ছে গণভোট যদি থাকতো, তাহলে কী হতো সেটি।

গণভোট থাকলে, অনেক জটিলতায় সরাসরি সর্বসাধারণের মত পাওয়া যেতো। ফলে মানুষের চিন্তার সাথে রাষ্ট্রের নির্বাহীদের চিন্তার একটি সাযুজ্য থাকতো। কিছু জটিল প্রশ্নে রাষ্ট্রের নির্বাহী আর বিরোধীপক্ষের মধ্যে মতের অমিল হয়। দুই পক্ষই তাদের মতকে সর্বসাধারণের মত হিসেবে চালিয়ে দিতে চায়। যেমনটা হয়েছিলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে। এখানে সরকার বিষয়টিকে একান্ত আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলো। কিন্তু বিরোধীরা তাতে সায় দেয়নি। যার ফলেই দেশ আজ এক জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন। দেশে দুই পক্ষ মুখোমুখি।

রাষ্ট্রের অনেক ব্যাপারে আইন-আদালতই শেষ কথা নয়। সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব হয়তো আদালতের, বিপরীতে সংবিধান রচনার দায়িত্ব সংসদের। আর সেখানে মানুষ কর্তৃক নির্বাচিতরাই পান সেই দায়িত্ব। প্রকারন্তরে দায়িত্বটা মানুষেরই। এমন কিছু ক্ষেত্রে আদালতও আদেশ দিতে স্বস্তি বোধ করেন না। কিন্তু ওই যে, আইনের বাধা ছক, বাইরে যাবার উপায় নেই। অথচ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মানুষের সরাসরি মতামত নেয়ার ব্যবস্থা থাকলে, স্বস্তি পেতো আদালতও। তেমনি তাইওয়ানেও হয়তো আদালতই বলে দিতে পারতো সমকামিতার বিষয়টি, যেমনটা হয়েছে ভারতে। কিন্তু তাইওয়ানে মানুষের মত জানতে চাইছে রাষ্ট্র। স্কটিশরা স্বাধীন হবে কী হবে না, তা নির্ধারণে যেতে হয়েছে মানুষের কাছে। এই যে, মৌলিক কিছু  প্রশ্নে মানুষের মতামত জানা, দ্বারস্থ হওয়া, সুশাসনের প্রশ্নে এটাই যৌক্তিক। আমাদের মানুষও যদি সরাসরি জানাতো, তারা কী চায়, তাহলে নির্বাচন  প্রশ্নে আমাদের এমন সংকটের সম্মুখিন হতে হতো না।

সংকট পশ্নে বলি, গত নির্বাচন তো সবারই দেখা, ১৫৩ জন বিনা ভোটে সংসদে গেছেন। এটা রেকর্ড। তবে এই রেকর্ডকে ঠিক সম্মানের বলা সম্ভব হবে না, হয়নি। সারাবিশ্বের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সে নির্বাচন। এবারও নির্বাচন নিয়ে সংকট রয়েছে। প্রথমে ছিলো বিরোধীপক্ষ নির্বাচনে আসবে কিনা এ বিষয়ে সংকট, বর্তমান সংকট হচ্ছে শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে থাকবে কিনা, এ নিয়ে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি যা তাতে নির্বাচন নিয়ে খুব একটা উচ্চাশা পোষণ অনেকটাই দুরূহ। যেহেতু নির্বাচনের দৃশ্যমান পরিবেশ এখনো স্বাভাবিক নয়।  অতীতের পতিটি নির্বাচনের আগে, প্রশাসনে একটি রদবদল ঘটেছে। মূলত এমন রদবদলের মনস্তাত্বিক কারণও রয়েছে। দীর্ঘদিন একটি এলাকায় দায়িত্বপালনের সুবাদের কারো কারো সাথে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে উঠা অসম্ভব কিছু নয়। এ থেকে অনিচ্ছাকৃত পক্ষপাতের সম্ভাবনাও স্বাভাবিক। যা নির্বাচনের মতন অস্তিত্ব নির্ধারণী কাজে বিব্রতকর হতে বাধ্য। এছাড়াও অন্যান্য কিছু কারণও রয়েছে, যার সব খুলে বলা দরকার হয় না, বুঝে নিতে হয়। এসব দিক চিন্তা করেই, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিশেষ করে যারা ভোটের কাজে সরাসরি জড়িত তাদের রদবদল করা হয়। ভোটের আগে মূলত এটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। যাতে সর্বতোভাবে কোনো আনডিউ প্রিভিলেজ নেয়ার পরিস্থিতির উদ্ভব না হয়।

এবারে ভোটে অবশ্য এমন রদবদলের বিষয়টি দৃশ্যমান হয়নি। যদিও সময় হাতে রয়েছে। তবে এমনটা না হলে কথা থেকে যাবে। সঙ্গতই প্রশ্ন উঠবে পক্ষপাতিত্বের। এবার সে প্রশ্ন উঠার সম্ভাবনা আরো বেশি। যেহেতু এবারের ভোটের পরিস্থিতি অন্যান্য ভোটের মতো নয়। এখানে একটি পক্ষ সম্পূর্ণ অবিশ্বাস নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছে। সেই অবিশ্বাসের সঙ্গত কারণ যে নেই তাও বলা যাবে না। বিরোধীপক্ষ ইতোমধ্যেই দাবি জানিয়েছে রদবদলের। অন্যদিকে সরকারপক্ষ তার প্রতিক্রিয়ায় রদবদলের বিপক্ষে মত দিয়েছে। অথচ রেওয়াজ অনুযায়ী পথমেই রদবল সম্পন্ন হলে কোনো কথাই উঠতো না। অনেক যোগ্য কর্মকর্তার বিপরীতে জুটতো না পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। আর বদলটাকেও স্বাভাবিক রেওয়াজ হিসেবে মেনে নিতো সর্বসাধারণ। আর শুধু রদবদল নয় সবক্ষেত্রেই ‘স্বাভাবিক’ অবস্থাই একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য এখন সবচেয়ে বেশি  প্রয়োজন।

লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়