বার্ড ফুড বা পাখির খাবারের আড়ালে চট্টগ্রাম বন্দরে ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি ওজনের পপিবীজের একটি চালান জব্দ করেছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। চালানটি পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্স (এআইআর) শাখা চালানটি আটক করে।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস।
বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) এইচ এম কবির বলেন, জব্দ করা পপিবীজের বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা। সাড়ে ছয় কোটি টাকার পণ্য মাত্র ৩০ লাখ টাকা মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানি করা হয়। পপিবীজ আমদানি-নিষিদ্ধ হওয়ায় এ ঘটনায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গত ৯ অক্টোবর বার্ড ফুড হিসেবে দুটি কনটেইনারে ৩২ হাজার ১০ কেজি পণ্যের একটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে আসে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি খালাসের জন্য বেসরকারি অফডক ছাবের আহমেদ টিম্বার কোম্পানি লিমিটেডের ডিপোতে নেওয়া হয়। চালানটির আমদানিকারক চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার কোরবানিগঞ্জ এলাকার মেসার্স আদিব ট্রেডিং। চালানটি খালাসের জন্য নগরীর হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকার এম এইচ ট্রেডিং কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লিমিটেড বার্ড ফুড ঘোষণা দিয়ে গত ১৪ অক্টোবর কাস্টমসের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে।
পরে চালানটির উৎস, রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকের ব্যবসার ধরন পর্যালোচনা করে চালানটিতে মিথ্যা ঘোষণার পণ্য আছে সন্দেহে খালাস স্থগিত করে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে লক করে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২ অক্টোবর ডিপো কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতিতে চালানটির কায়িক পরীক্ষা করে কাস্টমসের এআইআর শাখা। এতে কনটেইনার দুটিতে ৭ হাজার ২০০ কেজি বার্ড ফুড ও ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি পপিবীজ পাওয়া যায়। এরপর পণ্য দুটির নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে ভৌত ও রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে পণ্য দুটির মধ্যে ২৪ হাজার ৯৬০ কেজির চালানটির নমুনাকে পপিবীজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
কায়িক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, কনটেইনারে মুখে বার্ড ফুড দিয়ে ভেতরে পপিবীজ ঢেকে রেখে কৌশলে আমদানি করা হয়। পপি সিড মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুসারে ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে বিবেচিত। আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪-এর অনুচ্ছেদ ৩(১)(খ) অনুসারে আমদানি-নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পপিবীজ। তবে দেশে পপি সিডকে ‘পোস্তদানা’ মসলা হিসেবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পণ্য চালানটির ঘোষিত মূল্য ছিল ৩০ লাখ ২ হাজার ৪৮২ টাকা। কিন্তু কায়িক পরীক্ষণে প্রাপ্ত পণ্যের বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এসব পণ্য আমদানিতে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে কাস্টমসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সূত্র: আজকের পত্রিকা