বিভুরঞ্জন সরকার : সতীশ চন্দ্র রায়। সাবেক মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের চরম দুঃসময়ের কান্ডারি। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সারাদেশেই আওয়ামী লীগের ওপর নেমে এসেছিল এক কঠিন সময়।
ওই সময় দিনাজপুর আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র নেতা অধ্যাপক ইউসুফ আলী, যিনি বঙ্গবন্ধুর সময় শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, পক্ষ বদল করেন। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে দিনাজপুর ২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেন রাজনীতিতে স্বল্পপরিচিত স্কুল শিক্ষক সতীশ চন্দ্র রায়। তার কাছে পরাজিত হন জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত, দিনাজপুরের তারকা দুই রাজনীতিবিদ অধ্যাপক ইউসুফ আলী এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে। সেই দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের জন্য তিনি ছিলেন আলোর মশাল। তারপর চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে সতীশ চন্দ্র রায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। প্রথমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
দুই বার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। বর্তমানে উপদেষ্টাম-লীর সদস্য।
বয়সের ভারে এখন আর তেমন সক্রিয় নেই রাজনীতিতে। তবে সাধারণ জীবনযাপন করা এই রাজনীতিবিদ এলাকায় যান, মানুষের খোঁজ-খবর রাখেন। নিজে আর নির্বাচনে দাঁড়াবেন না। তবে ছেলে ডা. মানবেন্দ্র নাথ রায়কে এমপি হিসেবে দেখে যেতে চান। প্রতিদিন সকালে রমনায় হাঁটতে আসেন। লাঠি ভর দিতে হয়। সঙ্গে দুচারজন সহকারী থাকেন। দেখা হলে হাসি মুখে কুশল বিনিময় করেন।
আজ সকালে তার সঙ্গে একটি ছবি তুলতে চাইলে রাজি হলেন। রাজনীতি ঠিক পথে এগুচ্ছে কিনা জানতে চাইলে হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে বললেন, নেত্রী এখন অনেক পরিপক্ক। বাংলাদেশের গর্ব তিনি। তার হাতেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ। যারা দেশের ভালো চায় না তারাই নেত্রীর এবং আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেন। তার জীবনের গল্প শুনতে চাইলে সানন্দে সম্মতি দিয়ে বাসায় যাওয়ার নেমন্তন্ন করলেন।
সতীশ চন্দ্র রায় সুস্থ থাকুন। ভালো থাকুন।