শিরোনাম
◈ খালেদা জিয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উৎকণ্ঠা—এভারকেয়ারে নজর সবার ◈ প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে বাড়তি খরচ কমাতে নতুন ছক চালু করল বাংলাদেশ ব্যাংক ◈ ১০ মাস পর প্রার্থী পরিবর্তন: খুলনা-১ এ জামায়াতের টিকিট পেলেন কৃষ্ণ নন্দী ◈ খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল এভারকেয়ারে ◈ উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্ত করতে পে-প্যালের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে: গভর্নর ◈ 'স্বেচ্ছা নির্বাসনে' যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ ◈ স্কুলে ভর্তির নীতিমালা সংশোধন, বয়সসীমা শিথিল করল মাউশি, রেজিস্ট্রেশনের বয়সে কঠোর বোর্ড ◈ ভূমিকম্প থে‌কে রক্ষা পেতে জাপানের কাছ থেকে যা শিখতে পারে বাংলাদেশ ◈ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টা ◈ তালাক হলেও ফিরে আসার পথ—ইসলামী বিধান অনুযায়ী করণীয়

প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৫:০২ সকাল
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৫:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সমপ্রেমী

স্মিতা : তখন আমি ক্লাস টেন। একবন্ধু, একদিন আমার বাড়ি থাকতে এলো, বেশী রাত পর্যন্ত জেগে, আমার কাছ থেকে বাংলা দু’একটা কবিতা বুঝে নেবে বলে থেকে।

তখন আমি আর দিদি একঘরে একখাটে ঘুমোতাম। ওই ঘরেই ছিল পড়ার টেবিল, আর একটা বড় সাদাকালো ইমরান খানের ছবি।

সেদিন রাত্তিরে, দিদি বোধহয় বসার ঘরের বেঁটে চৌকিতে ঘুমিয়েছিল। যাক গে, সে রাতে কিছুতেই ঘুমোতে পারলাম না, কেমন একটা তীব্র অস্বস্তি। প্রায় সারা রাত, পড়ার টেবিল চেয়ারে বসে কাটালাম।

এরপর, সেই বন্ধু, আর কোনদিন রাতে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব করেনি। আর আমিও, কোনদিন কারও বাড়ি গিয়ে, বা কাউকে আমার বাড়ির খাট, আমার সঙ্গে শেয়ার করার সুযোগ দিই নি।

(এখানে কিন্তু বন্ধু বলতে স্ত্রীলিঙ্গ বুঝতে হবে। কারণ বন্ধুত্বের লিঙ্গভেদ হয় না বলে আমি বিশ্বাস করি)

এরপর সোজা ঋতুপর্ণ ঘোষ। সামান্য একটু মেয়েলী অসম্ভব তীক্ষ জ্ঞান, অসাধারণ বাচনভঙ্গীর প্রেমে পড়ে গেলাম আমরা অনেকেই।

আমরা অনেকেই ঋতুপর্ণ ঘোষকে বিয়ে করতেও রাজি ছিলাম।

ঋতুপর্ণ তখনও নিজের সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন সম্পর্কে এতোটা সোচ্চার ছিলেন না। হঠাৎ একদিন টিভির একটা ইন্টারভিউতে দেখলাম, ঋতুপর্ণ নিজের অর্ধনারীশ্বর মূর্তি তুলে ধরলেন।

খুব সুন্দর করে বললেন, উনার মতো যারা তাদের কোন মেয়েকেই বিয়ে কিরা উচিৎ নয়। এতে পারিবারিক জটিলতা বাড়বে, মেয়েটিরও জীবন নষ্ট হবে।

ইন্টারভিউ করছিলেন যিনি, তার মুখটা দেখে মনে হচ্ছিল, বেশ মজা পাচ্ছেন খুঁচিয়ে। যেন সামনে কোন অদ্ভুত মজাদার জীব বসে আছে। এরপর মীর। যখন তখন, সুযোগ পেলেই ঋতুপর্ণের কুৎসিততম নকল করতেন। জাস্ট নিতে পারতাম না, কি করে মানুষ এইরকম চূড়ান্ত নিম্নরুচির আচরণ করতে পারে ভেবে ভয়ানক রাগ হতো।

একদিন দেখলাম (অবশ্যই টিভিতে) কোনও একটি সিনে পুরস্কার মঞ্চে, মীর যথারীতি ঋতুপর্ণের বাচনভঙ্গির কুৎসিত অনুকরণ করে ভাঁড়ামো করছে।

ঋতুপর্ণ মঞ্চের সামনে, দর্শকাসনের সামনের সারিতে বসে আছেন। বুকের মধ্যে কেমন করে উঠলো, এত গুণী মানুষটাকে, তার সামনেই হাসির খোরাক করে তুলতে একটুও ভদ্রতায় বাধলো না।

টিভি ক্যামেরা একবার মীর আর একবার দর্শকদের হেসে কুটোপাটি হওয়া, আর একবার ঋতুপর্ণের মুখ জুম করে দেখাচ্ছিল।  লজ্জায় মরে যেতে যেতে দেখছিলাম, ঋতুপর্ণ নিজেও খুব জোরে জোরে হাসছেন, হেসে লুটিয়ে পড়ছেন। আমি কিন্তু ওই হাসির মধ্যে কান্নাটা দেখতে পেয়েছিলাম।

সেই মেয়েলী ছেলেটি, যাকে সবাই বৌদি বলে খেপাতো, তার  মুখটা চকিতে মনে পড়ে গেছিলো। এরপরে আরেকটি ইন্টারভিউ টিভিতে, ঋতুপর্ণ মীরের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। প্রশ্নকর্তা ঋতুপর্ণ, একের পর এক চাবুক প্রশ্ন করছেন, মীর এর উত্তর শুনে মনে হচ্ছে, মাঝসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে। ঋতুপর্ণ বললেন, তুই যে আমার নকল করিস, সেটা শুধু আমার কথনভঙ্গীর। আমার মেধা, বুদ্ধি এগুলো তো তোর নেই। বললেন,

তোর মনে হয় না, তুই শুধু আমাকেই নয়, আমার মতো আর যারা আছেন, তাদেরও মানে একটা গোটা সম্প্রদায় কে অপমান করছিস। মীর ডুবতে ডুবতে বললে, চ্যানেল কর্তা, অনুষ্ঠান কর্তারা, যা চায় আমার কাছে, যেমন চায় তেমন করি, পয়সার জন্য। ঋতুপর্ণের চাবুক প্রশ্ন, ও, তাহলে তোকে কেউ খুন করতে বললেই, পয়সার জন্য তুই খুন করবি। তোর নিজের কোন আদর্শ নেই। প্রচ- আনন্দে কেঁপে উঠলাম। আজ সমস্ত অপমান ঋতুপর্ণ ফিরিয়ে দিলেন। নিজের স্বাতন্ত্র্য, ভদ্রতা বজায় রেখে, খুব ঠা-া স্বরে, বুঝিয়ে  দিলেন,  কিভাবে প্রতিবাদ করতে হয়। বুঝিয়ে দিলেন, ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্বরা কতখানি তীব্র হতে পারেন, কি অনায়াসে বুঝিয়ে দিতে পারেন, প্রতিপক্ষ আসলে কতো দুর্বল, মূর্খ। ফেসবুক থেকে। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়