শিরোনাম
◈ রাজধানীর খিলগাঁওয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা ◈ নারায়ণগঞ্জে দেশীয় অস্ত্রসহ ৯ ডাকাত গ্রেপ্তার ◈ রাজধানীতে যেসব এলাকায় আজ গ্যাস থাকবে না ◈ টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড: ২৬১ তাড়া করে জিতল পাঞ্জাব ◈ আজ শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা  ◈ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ◈ খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু ◈ ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ চুয়েট: সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ফের আন্দোলনের ডাক শিক্ষার্থীদের  ◈ দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান  ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট পড়েছে ৬০.৭ শতাংশ

প্রকাশিত : ২১ মে, ২০১৮, ০৩:৪৭ রাত
আপডেট : ২১ মে, ২০১৮, ০৩:৪৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নকলের ভিড়ে কোনঠাসা ‘আসল পন্য’

সাজ্জাদুল ইসলাম নয়ন : বাংলাদেশসহ বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আমদানি বাণিজ্যের বড় অংশই চীনের নিয়ন্ত্রণে। বিশ্বের কাইন্টারফিট প্রোডাক্ট যাকে আমরা নকল পণ্য বলে থাকি তার ৮৫ ভাগই উৎপন্ন হয় চীনে। ঢাকার নবাবপুর মোতালেব প্লাজা গুলিস্থান স্টেডিয়াম মার্কেটসহ আরও কয়েকটি মার্কেটের ৯০ ভাগ পণ্য আসে সরাসরি চীন থেকে।

দামি ব্রান্ডগুলোর নকল এবং ধারণাতীত নি¤œমানের পণ্যে এসব মার্কেট সয়লাব। পাইকারি এসব মার্কেট থেকেই বাংলাদেশের সর্বত্র চলে যায় চিনের তৈরি সব নকল পন্য। আর এসব পণ্য কিনে ধারাবাহিকভাবে প্রতারিত ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রেতারা।

পুরান ঢাকার আলু বাজারে প্রায় ৭০ বছর ধরে ব্যবসা করছে সোনালী ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ইতালি তুরস্ক আমেরিকা থেকে প্রেসার ভালভ আমদানি করে। কলকারখানায় বয়লারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই উচ্চ মানসম্পন্ন গ্যাস ভালবের প্রয়োজন হয়। যে কারণে এসব ভালবের দামও একটু বেশী।

বেশ দুঃখ নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান কবির বলছিলেন, ‘বাজারে যে দিনই আমাদের প্রেশার ভালব আসে; তার দুই তিন মাসের মাথায় অবিকল আমাদের ভালবের মত ভালভ এই নবাবপুর সিদ্দিকবাজার ছেয়ে যায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমাদের আসল ভালবটি নিয়ে চীনের গোয়াংজু শহরে যায়। সেখানে এটির নকল বানিয়ে আমদানী করে ঢাকার বাজারে এনে বিক্রি করে।’

কবির জানান, তারা যে ভালবটি এক হাজার টাকায় বিক্রি করেন, সেই ভালবটিরই নকল তার পাশের দোকানেই বিক্রি হয় ৮০০ টাকায়। আর এসব নকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখের সামনে। সরকারেরও এ দিকটায় কোনো নজর নেই। নকল কারবারির উৎপাদন খরচের চেয়ে মুনাফা হয় চারগুন বেশি আর কবিরের প্রতিষ্ঠানের মার্জিন প্রফিট। এভাবে অসম অস্থীর ব্যবসায়ীক নীতি বিরোধী শক্তির কাছে মার খাচ্ছে কবিরের মত সৎ ব্যবসায়ীরা।
পকেটে টাকা এলেই ‘গোয়াংজু চলো’ এমন একটি শ্লোগান আছে নবাবপুর এলাকায়- নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন নবাবপুরের ইলেকট্রিক মার্কেটের এক ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের ইলেকট্রিক ফিটিংস-এর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার এটি। মার্কেটটিতে যেমন নামী দামি পন্য রয়েছে, তেমনি রয়েছে ওই পণ্যের অবিকল নকলটিও। দায় ক্রেতার। তাকে দেখে শুনে বুঝে কিনতে হবে। তাকে আসল নকল চিনে কিনতে হবে। এই নকল পন্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে স্টেডিয়াম ও নবাবপুর এলাকার চার পাঁচটি সিন্ডিকেট। ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সব ধরনের বিনিয়োগ ওই সিন্ডিকেটর মাধ্যমে একত্রিত হয়। এরপর দুটি বা তিনটি দলে তারা যোগাযোগ করে গোয়াংজুতে বাংলাদেশি এজেন্টদের সঙ্গে।

ঢাকার বেশ কটি মার্কেটের বাণিজ্যই টিকে আছে চীনের গোয়াংজু শহরটির ওপর। গোয়ংজুর বাংলাদেশি এজেন্টরা আবার চীনের নকল কারবারীদের সঙ্গে দরকষাকষি করে পণ্যের দাম ঠিক করে। এরপর হুন্ডির মাধ্যমে টাকা চলে যায় চীনে। গোয়াংজুর এজেন্টরা বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সমস্ত মালামাল একত্র করে কম মূল্য দেখিয়ে রপ্তানি করে বাংলাদেশে।

বিশ্বে যে পরিমান অর্থ মোবাইল তৈরিতে বিনিয়োগ হয় তার চেয়ে চারগুণ বড় মোবাইল একস্রসিজের বাজার। বাংলাদেশেও এ সেক্টরটি বেশ বড়। এর মধ্যে রয়েছে মোবাইলের মেমেরি কার্ড, বিভিন্ন মোবাইলের নকল স্ক্রীণ, হেডফোন। এছাড়াও রয়েছে পেন ড্রাইভ, ক্যামেরার মেমরি কার্ড। গোয়াংজুতে বাংলাদেশে যে কটি সিন্ডিকেট রয়েছে সেগুলোর একটিতে কাজ করেন মুন্সিগঞ্জের শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, গোয়াংজুসহ চীনের বিভিন্ন প্রদেশে এরকম হাজার হাজার নকল পণ্য তৈরীর কারখানা রয়েছে। এগুলেতে দিন রাত কাজ হয়। বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন আসে এখানে। সঙ্গে করে নিয়ে আসে আসল পণ্যের স্যাম্পল। এখানে এজেন্টদের মাধ্যমে অর্ডার করেন তারা। বাংলাদেশসহ মধ্যপ্রাচ্য ইন্দোনেশিয়া এমনকি আফ্রিকা থেকেও লোকজন আসে এখানে নকল পন্য কিনতে। জামা জুতো থেকে শুরু করে কসমেটিকস, শিশু খাদ্য, চকলেট, ইলেকট্রোনিক্স সবই পাওয়া যায়। ইচ্ছেমত যে কোনো দামে। তার কথা- অর্ডার করবেন। কত দামে চান তা বলবেন। সে দামেই চীনারা তা বানিয়ে দেবে।

তাতে এসব পন্যের গুনগত মান কি বজায় রাখা হয়? -এ প্রশ্নে তার সরল উত্তর- গরীব দেশগুলো কম দামে পন্য পেলেই তো হল। ধরুন একটি আই ফোনের দাম ৫০ হাজার টাকা। সেখানে চায়না তৈরি আই ফোনের নকল ‘হাই ফোন’ দেখতে অবিকল আইফোনের মতই। আবার গায়ে আধখাওয়া আপেলের লোগো; দাম বাংলাদেশি টাকায় মাত্র দশ হাজার টাকা। অসুবিধা কি?

কম দামে নি¤œমানের পন্য ক্রয় অনেক অসুবিধা আছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সনি র‌্যাংগসের এক কর্মকর্তা। তার মতে, যে কোনো পন্যের যুক্তিযুক্ত দাম থাকা উচিত উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যায়ে। তাছাড়া পন্যের বিক্রয়োত্তর সেবা বলেও একটি বিষয় আছে। সব দিক দিয়ে ভোক্তা ঠকে যাচ্ছেন। তার উদাহরণ ধরুন, আপনি সনি টিভি কিনলেন। দেখা গেল টিভিটি চায়নায় তৈরি এবং নকল। যদি আপনি আসল নকল না চেনেনে তবে দেখা গেলো দোকানদার আসলের দামে নকল টিভিটি গছিয়ে দিলো। এটা হররোজ হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে। আর যদি চিনে থাকেন তবে দোকানদার বলেই দেবে এই টিভির কোনো ওয়ারেন্টি নেই। অর্থাৎ কেনার তিনদিনের মাথায় নষ্ট হলে এর কোনো রিপ্লেস পাচ্ছেন না। তাছাড়া কমদামে পন্য কেনার প্রধান যে সংকট তা হল- নিম্মমানের পণ্যের মেয়াদকাল কম যে কারণে একজন ক্রেতাকে বারবার একই পণ্য কিনতে হয়।

সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রকাশিত ‘ড্রাগ অ্যান্ড ক্রাইম’ রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আটক নকল পণ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ চীন থেকে এসেছে। এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে দেশটিতে আটক নকল পণ্যের ৮৭ শতাংশই চীনে উৎপাদিত। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার হিসেবে, বিশ্বব্যাপী যে পণ্য বাণিজ্য হয় তার ২ শতাংশই নকল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বছরে আমদানি করা নকল পণ্যের মূল্য ২৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়। আর এই বিপুল অংকের নকল পণ্যের প্রায় সবটাই রপ্তানি করে চীন।

চীনের এই নকল পন্য দিয়ে অর্থনৈতিক আগ্রাসনে মূলত সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলো। বিশেষ করে এসব দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা সীমিত। নকল বাজারে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আর্থিক বিনিয়োগও বেশ অসম বলে তার ধারণা। তিনি বলেন, গোয়াংজু থেকে এক হাজার পিস মেমরি কার্ড ঢাকার এক ব্যবসায়ী পকেটে করে নিয়ে আসছেন প্লেনে। তার ওখানে প্রতি পিস মেমরি কার্ডের দাম পড়েছে ৫ টাকা করে সর্বোচ্চ। আর সেই মেমরি কার্ডই ঢাকার বাজারে বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে আড়াইশো টাকায়। ক্ষতি হচ্ছে সরকারের। কারণ সরকার শুল্ক পাচ্ছে না। আবার ক্ষতি হচ্ছে ভোক্তার যিনি উৎপাদনের অনেকগুন বেশি দাম দিয়ে নি¤œমানের পণ্য কিনছেন। এটা কোনো ব্যবসায়রে মধ্যে পড়ে না। এটা এক ধরনের নৈরাজ্য।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কেরল এসোসিয়েটসের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক চার্লস স্কোলজ সম্প্রতি এবিসি নিউজকে দেওয়া এক স্বাক্ষাতকারে বলেন, চীন কেবল সবকিছুই তৈরি করতে পারে তাই নয়, বরং দেশটি সবকিছুর অবিকল নকলও তৈরি করে।

স্কোলজ বলেন, ‘চীনের এই পণ্য জালিয়াতির কারণে বিশ্বব্যাপী বিদেশি কোম্পানীগুলো প্রতিবছর ২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার সমমূল্যের মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি কনজিউমার পণ্যের বর্তমান বাজারের ৭৫ ভাগ পণ্যই নকল। আর এর প্রস্তুতকারক চীন।’ তার মতে, ভোক্তা শুধু লেবেল ক্রয় করছে, গুণগত পণ্য নয়। সস্তার ঘোড়দৌড়ের এই বাজারে হংকং সীমান্তের কাছাকাছি চীনের শেনজেন শহর নকল পণ্যের তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে। এবিসি নিউজ ছোট ছোট নকল ক্যামেরা পণ্য তৈরির পেছনে এক বিস্ময়কর প্রমাণ হাতে পেয়েছে। শুধু ক্যামেরা নয়, লেটেস্ট ডিভিডি তৈরির ক্ষেত্রেও একই ধরণের জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যেমন, সর্বশেষ ভার্সনের একটি ফটোশপ ও উইন্ডোজ সফটওয়্যারের প্রত্যেকটির দাম ন্যুনতম এক ডলার। কিন্তু চীন এই দামের এক দশমাংশ দামে পণ্যটি ভোক্তার হাতে তুলে দিচ্ছে যা অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্য।

এখনকার অধিকাংশ ইয়ামাহা মোটরবাইক ‘ইয়ামাহা’ কোম্পানির দ্বারা তৈরি করা হয় না। ডুরাসেল এবং ইনার্জিজার ব্যাটারির এক চতুর্থাংশই নকল। আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড টয়লেট্রিজ, হেড অ্যন্ড শোল্ডার্স শ্যাম্পু, জিলেট রেজার এবং এমনকি নির্ভরযোগ্য স্কিইপি পিনাট বাটারেরও অধিকাংশ পণ্য নকল। মদ তৈরী হচ্ছে নকল। পারফিউম তৈরী হচ্ছে নকল। এমনকি যৌন উত্তেজক ভায়াগ্রারও নকল বানিয়ে বিক্রি করছে তারা।
চীনে তৈরি গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্ভরযোগ্য নয়। সুপরিচিত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মোবাইলফোনও নকল করছে চীন। যা বিশ্বব্যাপী বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। সাংহাই থেকে সড়কপথে পাঁচ ঘণ্টার দুরত্বের শহর ঝিমু। এই শহরটিকে ‘ক্ষুদ্র পণ্যের রাজধানী’ বলে অনেকে। অন্য কথায় এটাকে নকল পণ্য তৈরির কেন্দ্রও বলা যায়।

চীনের অর্থনীতির উন্নয়নে সাংহাইর শহরতলীতে ২০০০ সালে জিয়ানজিয়ান বাজারটি প্রথম চালু করা হয়েছিল। এখন চীনের মধ্যে নকল পণ্যের আরও অনেক বাজার গড়ে উঠেছে। চীনের অর্থনৈতিক উদারীকরণের আগে থেকেই দেশটিতে নকল পণ্যের বাজারগুলো বিস্তৃত হয়েছে। এখন এই বাজারগুলোর আকার অনেক প্রসারিত।

ঝিমু শহরটি হল সেই স্থান, যেখানে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা কম দামে পণ্য তৈরির জন্য যায়। শহরটিতে প্রায় ৪০ হাজার পাইকারি দোকান রয়েছে, যেখানে প্রায় লক্ষাধিক রকমের পণ্য বিক্রি হয়। আর এর ৯০ শতাংশই নকল। চীনা পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই এই শহর থেকে কয়েক’শো টন নকল পণ্য, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকাতে পাঠানো হয়।

স্কোলজ বলেন, প্রকৃতপক্ষে এটি বন্ধ করতে হলে সেখানকার সমাজ এবং অর্থনীতিতে কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। তাছাড়া সম্ভব নয়।

চীনের এই আগ্রসী উৎপাদনে তাদের নিজস্ব দামি ব্রান্ডগুলোর ওপর প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন তিনি। অপপো, সাওমি বা হুয়াই’র মত বেশ মানসম্মত পন্যগুলোর দিকেও ভোক্তার একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পড়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়