শিরোনাম
◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞার থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলার নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আ.লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে  ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ফসফরাস বোমা হামলা ◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের

প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল, ২০১৮, ০৩:৪৪ রাত
আপডেট : ২৪ এপ্রিল, ২০১৮, ০৩:৪৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিনাকর্মে পুরস্কার যদি মিলে মন্দ কী

২০১৬ সালে ‘নিয়তি’ নামে ছবির নৃত্যপরিচালক হিসাবে সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন মোহাম্মদ হাবিব। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো হাবিব ওই ছবিতে কাজই করেননি। অনেকে বলবেন এখানে তো মজার কোন ব্যাপার নেই, সিরিয়াস ব্যাপার। একটা ছবিতে কাজ না করেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া তো অনেক বড় অনিয়ম! প্রশ্নটা যদি উল্টো করে করা হয়, যেখানে পরীক্ষা না দিয়েও পাশ করা যায়। এমন কী চৌর্য্যবৃত্তিতে পিএইচডি তথা ডক্টরেট উপাধিও যুক্ত হয়। যুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেটে বড়কর্তা হওয়া যায়, সেখানে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার যে পাওয়া যাবে না এমনতো কোন কথা নেই। ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে অবাক হবার কিছু থাকে না, মজা পাবার থাকে।

তবে অবাক হবার ঘটনা হলো, পুরস্কার গ্রহণে অস্বীকৃতির বিষয়টি। কাগজে দেখলাম পঁচিশ হাজার টাকার বিনিময়ে গোল্ডেন ‘এ’ মিলে। যেখানে প্রাক প্রাথমিক ডক্টরেট, সবখানেই একি অবস্থা, সেখানে পেয়েও গ্রহণে অস্বীকৃতি বড় ব্যাপার। মোহাম্মদ হাবিবের মত এমন মানুষ দেশে খুব কম। কদিন আগে কাগজে লিখেছে, একজন রিকশাওয়ালা এক লাখ টাকা কুড়িয়ে পেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। যেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ধনী ন’মানুষগুলো লোপাটের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। তখন লাখ টাকা ফিরিয়ে দেয়া রিকশাওয়ালা ধনী না হতে পারেন, কিন্তু নিশ্চিত বড়লোক উঠেন। এমন লোভহীন চিত্ত সবার থাকে না, তেমনি হাবিবও সবাই হন না।

ইদানিং নানা ক্ষেত্রে পুরস্কার পাবার জন্য নানা কর্মকান্ডের কথা কানে আসে। কুর্ণিশ করা মানুষের ভিড়ে এখন আর উচু মাথা চোখে পড়ে না। এক কবির পুরস্কার পাবার কাহিনীতো প্রায় কিংবদন্তী। পুরস্কার বিষয়ে নানা কথকতা সামাজিকমাধ্যমে মশহুর। পুরস্কারের লালসা যে কতটা উদগ্র তা বোঝা যায় বিভিন্ন ভুঁইফোঁড় সংগঠনের পুরস্কার আয়োজনে। ‘দোকান’ নামে আখ্যায়িত এসব সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের কাজই হলো লালায়িত মানুষ খুঁজে বের করা। আর লালসা উদগ্ররাও থাকে এদেরই খোঁজে। সুতরাং দুয়ে মিললেই নানা নামে পুরস্কার প্রদানের নামে মচ্ছব ঘটে। ছবি উঠে নানা ভঙ্গিমায়। সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করা হয়, দু’একটা গণমাধ্যমে এসে গেলেতো কথাই নেই। টেলিভিশন হলেতো সোনায় সোহাগা।

মোহাম্মদ হাবিব আমার পরিচিত নন, বাংলা সিনেমাও অনেকদিন দেখা হয় না। এখানে হাবিব হলেন সেই মানুষের প্রতিক যিনি ‘না’ বলতে পারেন। সত্যের পক্ষে থাকা মানুষেরাই ‘না’ বলার ঋজু ক্ষমতা ধারণ করেন। যারা ‘হ্যাঁ’তে ‘হ্যাঁ’ মিলিয়ে ভাবেন তিনি ক্ষমতাবান, তারা বোকা। ক্ষমতাবান ভেবে নেয়া এসব বোকারা ভয়ংকর হন, ক্ষমতা প্রদর্শনে ভয়াবহ সব কান্ড ঘটান। প্রমান করতে চেষ্টা করেন, ‘দেখ আমি কত্তবড় ইয়ে’। অথচ এই বোকারা জানে না, চুপ থাকা সব মানুষই বুকের ভেতর কত বড় ‘না’ ধরে রাখতে পারেন। হাবিবের মতন একজন সরব মানুষের বলা ‘না’ আগলে রাখে হাজারো কোটি নিরব হৃদয়।
ফুটনোট : আগ্নেয়গিরিও দীর্ঘদিন আগুন বুকে নিয়ে চুপ থাকে এবং একদিন অগ্ন্যুৎপাত হয়।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়