ব্রি. জে. (অব.) সাখাওয়াত হোসেন : বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের নতুন চুক্তিটি হয়েছে, ভালো হয়েছে। তবে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ যে চুক্তিটি হয়েছে, এতে প্রশ্ন জেগেছে রোহিঙ্গারা ফেরত যাবে কি-না? তাদের ফেরত নিলে নিরাপত্তা দিয়ে নিবে কি-না? তাদের সঠিকভাবে পুনর্বাসন করবে কি-না? এমন অনেক প্রশ্ন আসে। এই চুক্তিতে জাতিসংঘের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি-না, সেটি জানা দরকার।
এখন মিয়ানমারে চুক্তি অনুযায়ী নিবে কি-না সেটিও বড় বিষয়। তাদের উপর আমরা কতটুকু ভরসা রাখতে পারি? আমাদের সরকারের উচিত এই চুক্তি কিভাবে কার্যকর হয়, কতটুকু কার্যকর হয় সেটি দেখা। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে এখন কতটা আন্তরিক, তাদের পুনর্বাসনের জন্য কতটুকু নিরাপত্তা দিবে সেটি দেখতে হবে। তাদের নাগরিকত্ব দেবে কি-না সেটি সরকারকে ভালোভাবে দেখতে হবে। আর কোনো রোহিঙ্গা যদি ফিরত যেতে না চায়, তাদের জোর করে পাঠানো যাবে না। এটি আন্তর্জাতিক আইনে আছে। তবে না যেতে চাইলে আমাদের দেশে একটি সঙ্কট তৈরি হবে।
ইতিমধ্যে আমাদের দেশের লোকদের সাথে তারা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। তাদের জন্য অনেক গাছপালা কাটা হচ্ছে। তারা নিজেরাও গাছপালা কাটছে। আমাদের অনেক আবাদী জমির উপরে তাদের বসবাস আছে। এতে করে স্থানীয়রা চাষাবাদ করতে পারছে না। তাই সব কিছু মিলিয়ে তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য ভালো একটি চুক্তি হলে তারা ঠিকই দেশে ফিরে যাবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে, নিজেদের জমিজামা ফেরত দিলে অবশ্যই তারা ফিরত যাবে। আমাদের সরকারকে নিজেদের স্বার্থে মিয়ানমারের সরকারের কাছে এটি বলতে হবে। না হলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান কখনো সম্ভব হবে না।
পরিচিতি : সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ