নড়াইল প্রতিনিধি: লোহাগড়ার মল্লিকপুর ইউপির মাত্র ৭৫ ফুট ব্রিজের অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খলিশাখালি এলাকায় নবগঙ্গা নদীর ওপর একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হন মল্লিকপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভার শত শত মানুষ।
সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন ও লোহাগড়া পৌরসভার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে নবগঙ্গা নদী, যা এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এ খালের এক পাড়ে রয়েছে মল্লিকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং অপর পাড়ে রয়েছে পার-মল্লিকপুরসহ লোহাগড়া পৌরসভার খলিশাখালী, গোপিনাথপুর ও রাজুপুর গ্রাম। নবগঙ্গা খালের পাড়েই রয়েছে, মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কওমী মাদ্রাসা, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মল্লিকপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী, ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা লোকজনকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নবগঙ্গা খালের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকো দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে সাহস পায় না কোনো গর্ভবতী ও প্রসূতি। সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে চায় না প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। এছাড়া প্রায়ই শিক্ষার্থী ও পথচারিরা সাঁকো থেকে পড়ে আহত হচ্ছে।
মল্লিকপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তহমিনা খন্দকার বলেন, স্কুলগামী অনেক শিশু ছাত্র বড়দের হাত ধরে পার হওয়ার আসায় সাঁকোর কাছে দাঁড়িয়ে থাকে।
তিনি জানান, প্রতি বছর বাঁশের সাঁকোটি, ছাত্র অভিভাবক ও আমরা যারা নিয়মিত যাতায়াত করি তাদের অর্থ দিয়ে নির্মাণ করা হয়।
চরমল্লিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চায়না খানম বলেন, সাঁকোর অপর পাড়ে রয়েছে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। এখানে একটি ব্রিজ হলে ছাত্র সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেত, তেমনি টিফিনের সময় বাড়ি থেকে সহজে খেয়ে আসতে পারতো।
খালের পাড়ে বসবাসকারী খলিশাখালি গ্রামের মো. জিল্লুর রহমান জানান, প্রতি বছরই সাঁকো থেকে পড়া অনেক বাচ্চাকে আমরা উদ্ধার করি।
চরমল্লিকপুর গ্রামের মো. গোলাম রসুল মোল্লা, প্রভাষক শরীফুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ নিসর আলীসহ অনেকে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, জনপ্রতিনিধিরা আমাদের বার বার ব্রিজের প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেনি।
মল্লিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, আমার ইউনিয়নের অনেক বসতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নবগঙ্গা নদীর উভয় পাড়ে অবস্থিত। ফলে একটি ব্রিজের অভাবে সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমার পক্ষে খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যত দ্রুত সম্ভব খলিশাখালি মল্লিকপুর এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।