শিরোনাম
◈ আগামী বছর রোনাল‌দো-জর্জিনার বি‌য়ে! বাড়ির কাছে ৫০০ বছরের পুরনো চার্চেই বিবাহ আসর ◈ বাংলাদেশে একটি আইএমইআই-এর বিপরীতে ১০ লাখ মোবাইল, বৈধতা নেই ১৯ লাখ আইফোনের! ◈ রাজধানীর বাজারে কমেছে চালসহ তিন পণ্যের দাম, অস্বস্তি বাড়াচ্ছে সবজি ◈ সমালোচনামূলক কনটেন্ট সরাতে ছয় মাসে গুগলের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের ২৭৯ অনুরোধ ◈ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফুল পাঠালেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ◈ দেড় দশকের গোপন ঋণ উদঘাটন: কেন হঠাৎ আকাশছোঁয়া খেলাপি? ◈ সাত দিনে সাত ভূমিকম্প: কাঁপছে দেশ, ভূগর্ভে কী সংকেত দিচ্ছে প্লেটগুলো? ◈ ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন’ (ভিডিও) ◈ ডেঙ্গুর টিকা নিয়ে সু-খবর দিল ব্রাজিল  ◈ পাকিস্তানকে বিদায় ক‌রে ত্রিদেশীয় সি‌রি‌জের ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:৫২ সকাল
আপডেট : ২৮ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশে একটি আইএমইআই-এর বিপরীতে ১০ লাখ মোবাইল, বৈধতা নেই ১৯ লাখ আইফোনের!

বাংলাদেশে একটি মোবাইল শনাক্তকরণ নম্বর (আইএমইআই)–এর বিপরীতে রয়েছে প্রায় ১০ লাখ হ্যান্ডসেট—এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকায় ‘বৈধ ও নিরাপদ হ্যান্ডসেট ব্যবহারে এনইআইআরের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের বাজারে মাত্র পাঁচটি আইএমইআই নম্বরের বিপরীতে প্রায় ৫০ লাখ ফোন সক্রিয় আছে। অর্থাৎ একটি আইএমইআই নম্বরের পেছনে প্রায় ১০ লাখ করে হ্যান্ডসেট ব্যবহার হচ্ছে।

বিটিআরসির তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, কয়েক মাস আগের হিসাব অনুযায়ী দেশের চার মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্কে আইফোন সচলের সংখ্যা ১৯ লাখ ৭৬ হাজার। এর মধ্যে ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ফোনই বিটিআরসির ‘নক অটোমেশন অ্যান্ড আইএমইআই ডেটাবেইজ’ (এনএআইডি) সিস্টেমে দেশের বৈধ আমদানিকারক থেকে বা বৈধ পথে আসা হিসেবে নিবন্ধিত নয়, মানে অবৈধ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাত্র ৫টি আইএমইআই নম্বরের বিপরীতে পাওয়া গেছে প্রায় ৫০ লাখ হ্যান্ডসেট। অর্থাৎ একটি আইএমইআই-এর বিপরীতে প্রায় ১০ লাখ করে মোবাইল হ্যান্ডসেট আছে।

আইএমইআই হলো ১৫ সংখ্যার একটি অনন্য কোড, যা প্রতিটি মোবাইল ফোনকে শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এটি ফোন চুরি হলে ট্র্যাক করতে, বৈধতা যাচাই করতে এবং নেটওয়ার্ক নিবন্ধনের কাজে লাগে।

আমিনুল হক বলেন, আইএমইআই ক্লোন (নকল) করে অবৈধ ফোনগুলো দেশের বাজারে ছাড়া হয়। ২০১৮ সালে যখন এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) চালুর কথা ভাবা হয়েছিল, তখনই এটা চালু করা গেলে পরিস্থিতি এখন এতটা জটিল হয়ে উঠত না। মোবাইল ব্যবহার করে আর্থিক অপরাধ অনেক ক্ষেত্রে ক্লোন হ্যান্ডসেটের সঙ্গে সম্পর্কিত। নিরাপত্তার স্বার্থে এই ক্লোন হ্যান্ডসেট বন্ধ করা উচিত।

রাজধানীর রাওয়া কমপ্লেক্সে ‘বৈধ ও নিরাপদ হ্যান্ডসেট ব্যবহারে এনইআইআরের গুরুত্ব’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি)।

টিআরএনবির সভাপতি সমীর কুমার দের সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআরএনবি সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন দেওয়ান।

সাম্প্রতিক হিসাবে এটি ২১ লাখের কাছাকাছি হতে পারে বলে জানান আল আমিন দেওয়ান। তিনি বলেন, দেশের চার মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্কে স্যামসাং ব্র্যান্ডের মোবাইল হ্যান্ডসেট সচল রয়েছে ২ কোটি ৩১ লাখ ২৯ হাজার। এরমধ্যে ১ কোটি ৪৯ লাখ ২৬ হাজারই অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিটিআরসি।

তবে বর্তমানে দেশে বৈধ-অবৈধের পার্থক্যের অনুপাত আগের মতোই।

১৬ ডিসেম্বর এনইআইআর চালু হলে এসব ফোন বন্ধ হবে না বলে আশ্বস্ত করেন বিটিআরসির কমিশনার মাহমুদ হোসাইন। তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের আগে পর্যন্ত যে ফোনগুলো নেটওয়ার্কে ব্যবহার হবে, সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে এবং সচল থাকবে।

এনইআইআর চালু হলে দেশে মোবাইল ফোনের দাম যেন না বাড়ে সে বিষয়ে বিটিআরসি সতর্ক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারে কোন স্মার্টফোনের বাজারদর কত, তা দেখে রাখা হচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ হ্যান্ডসেটের দাম বাড়াতে না পারে।

সেমিনারে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত ডিআইজি জাহিদুল ইসলাম বলেন, দেশে চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল সেটগুলো আখাউড়া, বটুলি, বেনাপোল ও দর্শনা সীমান্ত হয়ে ভারতে নেওয়া হচ্ছে। আর ভারতের চুরি হওয়া ফোন বাংলাদেশে আসে। এছাড়াও পুরোনো ফোনের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে সেকেন্ডহ্যান্ড ফোনের বাজার বেড়েছে। এতে করে হারানো সেট উদ্ধার কঠিন হয়ে পড়ছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ফার্স্ট সেক্রেটারি মু. রইচ উদ্দিন খান জানান, সাধারণ যাত্রীদের ক্ষেত্রে আগে প্রতিবার বিদেশ থেকে দেশে আসার সময় একটি নতুন ফোন শুল্ক ছাড়াই আনা যেত। বর্তমানে এই নিয়মে পরিবর্তন এসেছে। বছরে একবার বিদেশ থেকে দেশে আসার সময় একটি নতুন ফোন শুল্ক ছাড়াই আনা যাচ্ছে।

মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) সভাপতি জাকারিয়া শহীদ জানান, আইফোন ও মটোরোলার মতো দু-একটি ব্র্যান্ড ছাড়া প্রায় সব মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্র্যান্ডের বাংলাদেশে কারখানা রয়েছে। যদি চাহিদা বাড়ে, তাহলে হয়তো আইফোনও বাংলাদেশে কারখানা করতে বাধ্য হবে। তখন দেশের বাজারে আইফোনের দামও কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সেমিনারে আরও ছিলেন—মোবাইল ফোন ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন রাজু, স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম, সিনেসিস আইটির সিএসও (চিফ সলিউশন্স অফিসার) আমিনুল বারী সৌরভ, নগদের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাহিদুল ইসলাম সজল প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়