ফেসবুকের কনটেন্ট মনিটাইজেশন একসময় অনেকটাই সহজ ছিল। প্রোফাইল, পেজ—সব জায়গায় সহজেই সক্রিয় করা যেত। অনেকেই একাধিক পেজে মনিটাইজেশন চালু করতে পেরেছিলেন। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। ফেসবুক নতুন নিয়ম চালু করায় মনিটাইজেশন পাওয়া আবারও ‘সোনার হরিণে’ পরিণত হয়েছে।
নতুন নীতিমালায় দেখা যাচ্ছে—১০০ জন যোগ্য ক্রিয়েটরের মধ্যে মাত্র ৫ জন মনিটাইজেশনের অনুমতি পাচ্ছেন। ফলে যে কেউ চাইলেই আর মনিটাইজেশনে ঢুকতে পারছেন না। আগের মতো ভ্যারাটিজ কনটেন্ট দিয়ে কাজ করলে মনিটাইজেশন পাওয়া এখন প্রায় অসম্ভব।
এদিকে যার যাদের পেজে ইতোমধ্যে মনিটাইজেশন চালু আছে, তারা জানাচ্ছেন—ফেসবুকে ইনকাম আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। অনেক ক্রিয়েটর একটি ভিডিওতে ১৭ লাখ ভিউ পেয়ে ১০০ ডলারেরও বেশি আয় করছেন। গড়ে এক লাখ ভিউতে ৫–৬ ডলার পর্যন্ত ইনকাম পাওয়া যাচ্ছে। আয় বাড়ায় ফেসবুক এখন মানসম্মত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদেরকেই গুরুত্ব দিচ্ছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী কপি কনটেন্ট দিয়ে কোনোভাবেই মনিটাইজেশন পাওয়া যাবে না। শুধু রিলস ভিডিও আপলোড করলেই হবে না। রিলস অবশ্যই ১০ সেকেন্ডের বেশি হতে হবে এবং ভাইরাল হওয়া লাগবে। পাশাপাশি ৩ মিনিটের বেশি দৈর্ঘ্যের লং ভিডিও ভাইরাল না হলে মনিটাইজেশন অনুমোদন মিলবে না।
আগে ২–৩ লাখ ভিউয়ের ভিডিও মনিটাইজেশনের জন্য যথেষ্ট ছিল। এখন মিলিয়ন ভিউ না হলে ফেসবুক তা বিবেচনাই করছে না। অনেকের অভিযোগ—একাধিক ভিডিওতে মিলিয়ন ভিউ আসলেও মনিটাইজেশন মিলছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন—এসব ভিডিও যদি শুধুই রিলস হয়, তবে মনিটাইজেশন পাওয়া কঠিন। কারণ ফেসবুক এখন লং ভিডিওতেই বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে এবং সেখান থেকেই মূল আয় তৈরি হয়।
সুতরাং মনিটাইজেশন পেতে হলে রিলসের পাশাপাশি লং ভিডিওতেও নিয়মিত ভিউ থাকতে হবে। ছবি, পোস্ট—এসবও নিয়মিত দিতে হবে। হঠাৎ ভাইরাল হওয়া রিলস দিয়ে এখন আর মনিটাইজেশন পাওয়া সম্ভব নয়।
অভিজ্ঞ ক্রিয়েটররা বলছেন—এখন লং ভিডিও শেখা বাধ্যতামূলক। ব্লগ, ফানি ভিডিও, এন্টারটেইনমেন্ট, টিপস, টিউটোরিয়াল—যে কোনো ধরনের লং ভিডিও বানিয়েই ক্রিয়েটরদের নিয়মিত কনটেন্ট দিতে হবে। ফেসবুক এখন শুধু ভাইরাল নয়, ধারাবাহিকতা ও মানসম্পন্ন অরিজিনাল কনটেন্টকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
সব মিলিয়ে, যারা মনিটাইজেশন চালু রেখেছেন—তাদের জন্য এটি সুখবর; কারণ ইনকাম বেড়েছে। আর নতুনদের জন্য সতর্কবার্তা—রিলসের পাশাপাশি লং ভিডিও ভাইরাল না হলে মনিটাইজেশন পাওয়া এখন প্রায় অসম্ভব।
সূত্র: জনকণ্ঠ