ইমরুল শাহেদ: [২] বৃহস্পতিবারই উৎক্ষেপণ হয়েছিল উপগ্রহগুলো। ফ্যালকন ৯ রকেটে চড়ে রওনা দিয়েছিল কুড়িটি স্টারলিঙ্ক উপগ্রহ। কিন্তু ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘স্পেসএক্স’ জানিয়েছে, ভুল কক্ষপথে স্থাপিত হতে গিয়ে শেষে কক্ষপথচ্যুত হয়ে পুনরায় পৃথিবীতেই ফিরে আসতে চলেছে সেগুলো। সূত্র: দি ওয়াল
[৩] গত ১১ জুলাই কুড়িটি উপগ্রহ নিয়ে ভ্যান্দেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেসের স্পেসএক্স উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে রওনা দিয়েছিল ফ্যালকন ৯ রকেট। প্রথম ধাপে সবকিছুই ঠিকঠাক হয়, রকেট উপগ্রহদের দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছে দিয়ে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসে ফ্যালকন ৯। দ্বিতীয় ধাপেও শুরুতে ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু পরের ধাপে যেতে গিয়েই কেলেঙ্কারি হয়। ধরা পড়ে, ‘লিক’ করছে তরল অক্সিজেন। ফলে দ্বিতীয় ধাপ পেরোতে গিয়েই হোঁচট খায় স্টারলিঙ্ক উপগ্রহগুলো। যে নির্দিষ্ট কক্ষপথে তাদের প্রদক্ষিণ করার কথা, তার চেয়ে অনেক কম ব্যাসের কক্ষপথে এলোমেলোভাবে ঘুরতে থাকে সেগুলো।
[৪] তড়িঘড়ি আসরে নামেন স্পেসএক্সের ইঞ্জিনিয়াররা। সারারাত কাজ করে উপগ্রহদের জোর করে ওপরে তোলার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ প্রযুক্তিতে ইঞ্জিন আগেই চালু করার নির্দেশ পাঠানো হয়। কিন্তু লাভ হয়নি। ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১৩৫ কিলোমিটার ওপরে, প্রবল অভিকর্ষ বলকে কাজে লাগিয়ে এলোমেলোভাবে ঘুরতে থাকা উপগ্রহগুলো টেনে উপরের কক্ষপথে তুলতে যে পরিমাণ বল বা ঘাতের দরকার, মজুত জ্বালানি থেকে সেটা সম্ভব নয়। ফলে শেষ অবধি হাল ছেড়ে দেন ইঞ্জিনিয়াররা।
[৫] এক বিবৃতিতে ইলন মাস্কের সংস্থা জানিয়েছে, আপাতত ভয়ের কিছু নেই। পর্যাপ্ত কক্ষপথ না পেলে প্রবল অভিকর্ষ বলের আকর্ষণে উপগ্রহগুলো আবার ভূপৃষ্ঠের দিকেই আছড়ে পড়বে। কিন্তু ভূপৃষ্ঠ অবধি আসার আগেই বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে প্রবল ঘর্ষণে সেগুলো জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যাবে। ফলে ভূপৃষ্ঠে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।
[৬] এক বিবৃতিতে ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, আয়ন থ্রাস্টারকে উন্নীত করার সবরকম চেষ্টা করবে সংস্থাটি। বিবৃতিতে স্পেসএক্সও জানিয়েছে, ‘এই ঘটনায় আরও একবার বোঝা গেল, মহাকাশ অভিযান আসলে কতটা কঠিন। আজ পর্যন্ত ৩৬৪ সফল লঞ্চ করেছে ফ্যালকন। যাতে চেপে গিয়েছেন মহাকাশচারী, মহাকাশ কেন্দ্রের সরঞ্জাম ও হাজারের কাছাকাছি উপগ্রহ। তারপরেও এরকম কেন হচ্ছে, জানতে পুরো ঘটনার তদন্ত করে দেখবে সংস্থা।’ সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
আপনার মতামত লিখুন :