ভিনগ্রহের এলিয়েন নিয়ে মানুষের মাঝে আগ্রহের কমতি নেই। পৃথিবীতে মানুষের সাথে এলিয়েনের যোগাযোগ থেকে শুরু করে পৃথিবীর বুকে এলিয়েনের নেমে আসা, এমনকি মানুষ-এলিয়েন যুদ্ধের মতো এলিয়েন-কেন্দ্রিক নানা গল্পের ওপরেই তৈরি হয়েছে সিনেমা।
কিন্তু এবারে জানা গেল, মানুষ আর এলিয়েনের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টি কেবল সিনেমা আর বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতেই সীমাবদ্ধ নয়। মানুষ আর এলিয়েনের মাঝে যোগাযোগ হয়েছে বাস্তবেই। শুধু তাই নয়, এই যোগাযোগের বিষয়ে অবগত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ (সিনিয়র বুশ)।
সম্প্রতি ‘দ্য এজ অফ ডিসক্লোজার’ নামের একটি তথ্যচিত্রে (ডকুমেন্টারিতে) এমনটাই দাবি করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন ট্যাবলয়েড নিউইয়র্ক পোস্ট।
তথ্যচিত্রে এরিক ডেভিস নামের একজন জ্যোতির্পদার্থবিদের সাক্ষাৎকার রয়েছে, যেখানে তিনি বলছেন যে, প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ ২০০৩ সালে ব্যক্তিগত এক আলাপচারিতায় তাকে মানুষের সাথে এলিয়েনের যোগাযোগের বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশকে উদ্ধৃত করে এরিক ডেভিস তথ্যচিত্রটিতে বলেছেন যে, ১৯৬৪ সালে নিউ মেক্সিকোর হলোম্যান এয়ার ফোর্স বেসে মানুষের সাথে এলিয়েনের সাক্ষাৎ হয়েছিল এবং এ বিষয়ে বুশ অবগত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রয়াত সিনেটর হ্যারি রিডের (ডি-এনভি) নেতৃত্বে ২০০৭ সালে কংগ্রেসের তৈরি অ্যাডভান্সড অ্যারোস্পেস থ্রেট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রাম (এএটিআইপি)-এর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন এরিক ডেভিস।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন বলছে, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট বুশ দাবি করেছিলেন যে, তিনটি মহাকাশযান মার্কিন বেসের কাছাকাছি এসেছিল। এগুলোর মধ্যে একটি অবতরণ করেছিল এবং এর ভেতর থেকে নন-হিউম্যান (মানুষ নয় এমন) একটি সত্ত্বা এয়ার ফোর্স ও বেসামরিক সিআইএ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছিল।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ নেভাল এভিয়েটর এবং সিআইএ-এর পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তথ্যচিত্রে এরিক ডেভিস এও বলেছেন যে, মানুষ-এলিয়েন যোগাযোগ প্রসঙ্গে বুশ যখন আরও বিশদভাবে জানতে চেয়েছিলেন তখন নাকি তাঁকে বলা হয়েছিল, ‘তাঁর জানার প্রয়োজন নেই’।
এরিক ডেভিসের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক পোস্ট বলছে, ‘সেগুলোর মধ্যে একটি (এলিয়েন) মহাকাশযান রানওয়ের (টারমাক) ওপর অবতরণ করে এবং সেখান থেকে নন-হিউম্যান (মানুষ নয় এমন) একটি সত্ত্বা বেরিয়ে আসে এবং ইউনিফর্ম পরিহিত এয়ার ফোর্স ও বেসামরিক সিআইএ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে।’
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ আছে, ‘আর [বুশ] যখন আরও বিশদভাবে জানতে চাইলেন, তখন তাঁকে বলা হয়েছিল যে তাঁর জানার প্রয়োজন নেই।’
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) অ্যামাজন প্রাইমে সম্প্রচারিত তথ্যচিত্রটিতে পদার্থবিজ্ঞানী এবং এএটিআইপি’র প্রাক্তন সদস্য হ্যাল পুটহফ-এর সাক্ষ্যও রয়েছে। তিনি দাবি করেছেন যে, বিভিন্ন ধরণের বেশ কয়েকটি বহির্জাগতিক প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে।
তথ্যচিত্রটির পরিচালক ড্যান ফারাহ আশা করছেন যে, এই তথ্যচিত্রের কল্যাণে অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু বা ইউএফও প্রকাশের আন্দোলন আরও ত্বরান্বিত হবে এবং এতে করে একজন প্রেসিডেন্ট বহির্জাগতিক প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রকাশ্যে কথা বলতে উৎসাহিত হবেন।
সংবাদমাধ্যমকে ফারাহ বলেন, ‘আমি মনে করি এই তথ্যচিত্রটি আমাদের একটি ভিন্ন অবস্থানে নিয়ে যায়। এর মাধ্যমে একজন প্রেসিডেন্ট মাইক্রোফোনের সামনে এসে পুরো মানবজাতির কাছে আরও স্বাচ্ছন্দ্যে বলার সুযোগ পান যে, এই মহাবিশ্বে আমরা একা নই।’