শিরোনাম
◈ শেহবাজ-জয়শঙ্করকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, যে কথা হলো.. ◈ যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন খনিজ সংক্রান্ত চুক্তি সই: যৌথভাবে খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ কাজে লাগাতে বিনিয়োগ তহবিল গঠন ◈ বাংলাদেশ-আলজেরিয়া কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে ◈ বাংলাদেশ সব দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে: প্রেস সচিব ◈ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের আহ্বান: শ্রমিক-মালিকের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে নতুন বাংলাদেশ ◈ সরকারি চাকরি আইনে বড় পরিবর্তন: বিক্ষোভ-অনুপস্থিতিতে তদন্ত ছাড়াই ৮ দিনের মধ্যে চাকরিচ্যুতির বিধান ◈ ৫ মে থেকে বাজারে আসছে সাতক্ষীরার সুস্বাদু আম, রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৭০ মেট্রিক টন ◈ মে‌সি ও সুয়া‌রে‌সেও কাজ হ‌লো না, সেমিফাইনালে হেরে গে‌লো ইন্টার মায়ামি ◈ নিবন্ধনের আবেদন ৬৫ দলের, কার্যকর কমিটি নেই কারও, কারও নেই কার্যালয় বা সাইনবোর্ড ◈ পহেলগাঁও সন্ত্রাস নিয়ে কারাগার থে‌কে ভারতকে ইমরান খা‌নের হুম‌কি

প্রকাশিত : ০১ মে, ২০২৫, ১২:২৬ রাত
আপডেট : ০১ মে, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্রাজিলজুড়ে তোলপাড় নেইমারদের ‘লাল জার্সি’ নিয়ে 

‘আমাদের পতাকা কখনোই লাল হবে না!’ — সাবেক কট্টর-ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর আমলে এই স্লোগান ছিল ব্রাজিলের ডানপন্থিদের অন্যতম স্লোগান। তবে শিগগিরই ‘লাল জার্সি’ হয়ে উঠতে পারে তাদের ফুটবল দলের জাতীয় প্রতীক। 

এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে ব্রাজিলজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক ও ক্রীড়াবিষয়ক বিতর্ক ও ক্ষোভ।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিল জাতীয় দলের জন্য একটি গাঢ় লাল (ক্রিমসন) জার্সি প্রকাশ করতে পারে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। আর এতেই ডানপন্থিদের মধ্যে শুরু হয়েছে আগুন জ্বালানো ক্ষোভ। 

কারণ, লাল রঙটি মূলত ব্রাজিলের বামপন্থি প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা, তার ওয়ার্কার্স পার্টি (পিটি) এবং ভূমিহীন কৃষক আন্দোলনের (এমএসটি) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।

এ নিয়ে বলসোনারোর ঘনিষ্ঠ ও মিনাস জেরাইসের গভর্নর রোমেউ জেমা এক ভিডিওতে সম্ভাব্য লাল জার্সির একটি ডিজাইন মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলেন, ‘আমাদের দলের জার্সি কখনোই লাল হবে না, আমাদের দেশও না’।

বলসোনারোর ছেলে ও সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমাদের পতাকা লাল নয় — কখনোই হবে না’।

শুধু ডানপন্থি নন, ফুটবল প্রেমীরাও বিরক্ত

কেবল বলসোনারো-পন্থিরাই নয়, রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে বহু ফুটবল অনুরাগীও প্রস্তাবিত এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। 

মূলত ব্রাজিল ফুটবল দলের জার্সির ঐতিহ্যবাহী রঙ হলুদ এবং অ্যাওয়ে জার্সির রঙ নীল। যা ১৯৫৮ সাল থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে আসন্ন বিশ্বকাপ থেকে সেই নীল রঙের পরিবর্তে লাল রঙের জার্সি চালুর প্রস্তাবনা দিয়েছে সিবিএফ। যদিও তাদের এই প্রস্তাবনাকে ‘অস্বাভাবিক’ ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন অনেকে।

বিশ্ববিখ্যাত ফুটবল বিশ্লেষক গালভাও বুয়েনো তো আরও এক কাঠি সরেস। তিনি একে ‘অপরাধ’ এবং ‘জাতীয় ফুটবল ইতিহাসের প্রতি একটি বিশাল অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে ফুটি হেডলাইনস নামের এক ওয়েবসাইটে সোমবার লাল রঙের ওই জার্সির একটি ছবি ফাঁস হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক শুরু হলে পরদিন সিবিএফ জানায়, অনলাইনে ছড়ানো লাল জার্সির ছবিটি আনুষ্ঠানিক নয়। এখনো নাইকির (ব্র্যান্ড) সঙ্গে ২০২৬ বিশ্বকাপের জার্সি নিয়ে কাজ চলছে।

বামপন্থিদের প্রতিক্রিয়া

অন্যদিকে দেশটির বামপন্থি ও প্রগতিশীলদের মধ্যে কেউ কেউ এই লাল জার্সিকে ইতিবাচক প্রতীক হিসেবেও দেখছেন। বিগত এক দশকে জাতীয় দলের হলুদ রঙের জার্সিটি বলসোনারো সমর্থকদের রাজনৈতিক প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ফলে অনেক বামপন্থি তা পরতে অস্বস্তি বোধ করেন।

মিলি লাকোম্ব নামে তাদেরই একজন সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘আমি গর্ব করে লাল জার্সি পরবো। কারণ লাল মানে বিপ্লব, পরিবর্তন, সংগ্রাম, জন্ম-মৃত্যু ও পুনর্জন্ম’।

‘রঙের রাজনীতি’ ও বিভক্ত জাতি

তবে বাম ঘরানার বিশিষ্ট ফুটবল লেখক জুকা কফুরি এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘লাল রং ব্রাজিলের সঙ্গে সেভাবে সম্পর্কিত নয়’। 

যদিও তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ব্রাজিলের নাম এসেছে লাল কাঠের গাছ পাউ-ব্রাজিল থেকে এবং ১৯ শতকের প্রথমদিকে দেশের পতাকাতেও লাল রং ছিল।

তিনি ধারণা করেন, এই লাল জার্সি বিতর্ক আসলে ‘একটি পরীক্ষামূলক বেলুন’—সম্ভবত জনমত বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ছড়ানো হয়েছে।

পটভূমিতে চাপা পড়ছে অন্য বিতর্ক

ব্রাজিলে এই জার্সি বিতর্ক এমন এক সময়ে উঠে এসেছে, যখন সিবিএফ-কে কার্লো আনচেলোত্তিকে কোচ হিসেবে না আনতে পারা এবং একটি কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত ম্যাগাজিন রিপোর্টের মুখোমুখি হতে হয়েছে। 

এ নিয়ে ফুটবল লেখক কফুরি মন্তব্য করেন, ‘এই জার্সি বিতর্ক আসলে আমাদেরকে মূল ইস্যু থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিচ্ছে’।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়