মনিরুল ইসলাম: [২] জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক বিরোধী দলীয় বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নাই। সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে। পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতি অনুরক্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো মতানৈক্য নাই। যারা পল্লীবন্ধুর নাম নিশানা মুছে ফেলতে চায়, তারাই আলাদা হয়ে থাকতে পারে।
[৩] শুক্রবার বিকেলে গুলশানস্থ নিজ বাসভবনে জাতীয় মহিলা পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জাপা চেয়ারম্যান।
[৪] রওশন এরশাদ বলেন, আমি কোনোভাবেই পার্টিকে ছোটো করতে পারি না। তাই এরশাদভক্ত যাদের দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিলো-যাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছিলো কিংবা যাদের বহিস্কার করা হয়েছিলো- আমি তাদের সবাইকে পল্লীবন্ধুর রেখে যাওয়া পতাকাতলে ফের নিয়ে এসেছি।
[৫] জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশের রাজনীতিতে একটা ইতিবাচক ধারা প্রবর্তন করে যেতে চাই। সেই রাজনীতির ধারক এবং বাহক হবে, জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, এর আগে যে দু’জন পার্টির শীর্ষ পদে ছিলেন, তাদের ব্যর্থতার জন্য পার্টিতে বিপর্যয় নেমে এসেছিলো। সেই দুই জনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। দল থেকে তাদের বাদ দেয়া হয়নি। তারা সংসদে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিত্ব করবেন। তারা সেখানে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
[৬] তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টির অগণিত নেতা-কর্মীর মনের যন্ত্রনা মোছানোর জন্যই আমাকে পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। ৯ মার্চ জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে পার্টি পরিচালনার জন্য যোগ্য নেতৃত্ব দায়িত্ব গ্রহণ করবে জাতীয় পার্টি।
[৭] সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। বিপুল এই জনসংখ্যার প্রতি বৈষম্য রেখে-জাতীয় অগ্রগতি সম্ভব নয়। জাতীয় উন্নয়নে সমানভাবে নারীদের কাজে লাগতে হবে। এটা নারীর অধিকার।
[৮] মহিলা পার্টির নেতৃবৃন্দের প্রতি রওশন এরশাদ বলেন, নারীর সেই অধিকার তোমাদের আদায় করে নিতে হবে। দলের মধ্যেও নারী নেতৃত্বকে নিজ অধিকার কেড়ে নিতে সচেষ্ট হতে হবে। শুধু দুঃখ-ক্ষোভের কথা মুখে বললেই চলবে না। প্রতিবাদ করে অধিকার আদায় করে নিতে হবে।
[৯] জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশের রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব, তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। দেশের তিন প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন তিনজন নারী। তারা কেউ ব্যর্থ নন। এটা দেশের নারী সম্মানের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
[১০] রওশন এরশাদ তাঁর বক্তব্যে মহিলা পার্টির নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, অনেক দিন পর আমি মেয়েদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হলাম। তোমাদের কাছে পেয়ে আমি আনন্দিত। তোমরা অনেক দুঃখ-বেদনা, ক্ষোভের কথা বলেছো। এতে আমার মনটাও অনেক ভারাক্রান্ত।
[১১] তিনি বলেন, মেয়েদের জন্য আমি দোয়া করি। মনের দৃঢ়তা নিয়ে নতুন প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে তোমরা এগিয়ে যাও। আল্লাহ নিশ্চয় তোমাদের সহায় থাকবেন। আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ তোমাদের সর্বোতভাবে সহযোগিতা করবেন। আর পিছিয়ে থাকার সময় নেই- এখন থেকে শুধু সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
[১২] জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহনাজ পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, দলের মহাসচিব কাজী মামুনূর রশিদ, পল্লীবন্ধুপুত্র রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গোলাম সরোয়ার মিলন, ঢাকা মহানগর উত্তর জাপার আহবায়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জাপার মুখপাত্র ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, সাবেক রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা রফিকুল হক হাফিজ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, সাবেক এমপি এমএ গোফরান, সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মিলন, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নূরু, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, শফিকুল ইসলাম শফিক, বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক ছাত্রনেতা খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, জাপা নেতা পীরজাদা জুবায়ের আহমেদ, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, জাপার যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন পারভিন লিজা, মাহমুদা রহমান মুন্নি, হাসনা হেনা, জাপা নেতা হাজি নাসির উদ্দিন ও নাফিস মাহবুবুব প্রমূখ।
এমআই/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :