একটি ব্যাগের ছবি দিয়ে ফেসবুক পোস্টে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, ‘আমার মেয়ে যখন আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল ঢাকা জেলে—এই ব্যাগটা আমি ওকে দিয়েছিলাম! ব্যাগটা জেলের ভেতরে এক বন্দী বানিয়েছিল! তার কাছ থেকে কিনেছিলাম! জানিনা, কাউকে কল্পনায় রেখে সে বানিয়েছিল কিনা—এই ব্যাগটা! প্রশ্ন করা হয়নি ছেলেটাকে!’ মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
ফখরুল লিখেন, ‘গত পনেরো বছরে বাংলাদেশের জেলে লাখ লাখ কর্মী বন্দী ছিলো, মিথ্যা মামলায়! আমার নিজের জেলার হাজার ছেলের পুরো জীবন শেষ হয়ে গেছে! আমি নিজে আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের করা ১১০-এর বেশি মামলার আসামি ছিলাম। ময়লার গাড়ি পোড়ানো থেকে শুরু করে হত্যা মামলা! সব মিথ্যা মামলা! আড়াই বছরের বেশি জেলে ছিলাম! কোর্টে কোর্টে আমার অসুস্থ স্ত্রী দৌড়ে গেছে! আসিফ নজরুল একবার পত্রিকায় লিখেছিলেন একটি কলাম ‘রাষ্ট্র বনাম মির্জা ফখরুল’! জেলে মাটিতেও শুতে হয়েছিল! আমাদের বলা হয়েছে—নির্বাচনে আসুন, মুক্তি পাবেন! আমরা প্রহসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি! ৭ বার জামিন রিজেক্টেড হয়েছে!’
তিনি আরও লিখেন, ‘আমি জেলে দেখেছি আমাদের ছেলেদের ওপর কী অত্যাচার হয়েছে! সারা শরীর জুড়ে অত্যাচারের দাগ! এদের অনেকের সারা জীবন, ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে গেছে জেলে! পড়াশোনা হয়নি, সংসার হয়নি! এদের পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে! যারা মাঠের রাজনীতি করে না, তারা কোনও দিন জানবে না এদের স্ট্রাগল! কথা নিয়ে অনেক রাজনীতি করা যায়, ফ্যাসিজম এর সামনে দাঁড়িয়ে জেলে যেতে পারে না সবাই!’
মির্জা ফখরুল ইসলাম লিখেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের করা প্রতিটি মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে! হাসিনার এবং তার মাফিয়া বাহিনীর প্রতিটি অপরাধের বিচার করতে হবে! আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাসী নই! আমরা প্রকৃত অন্যায়কারীর বিরুদ্ধেই মামলা করবো এবং শাস্তি নিশ্চিত করবো। যে যেই অন্যায় করেনি, তাকে সেই অন্যায়ের জন্য হয়রানি কেন করা হবে? কোনো নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার নাম রাজনীতি না। আমরা ইনসাফের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে!’
সূত্র: মানবজমিন