শিরোনাম

প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:১২ রাত
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সাথে বিএনপি মহাসচিবের দেড় ঘণ্টা বৈঠক

মনিরুল ইসলাম: দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেছেন।

গতকাল রোববার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকেল ৫টা থেকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ব্যবসায়ীরা এলডিসি গ্রাজুয়েশন (উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ), শ্রম আইন সংশোধন এবং ব্যবসায়িক খাতের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।

বৈঠকে বিজেএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএ সভাপতি এম এ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএ মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিবের সাথে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এসএম ফজলুল হক প্রমুখ।

'এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য বাংলাদেশ এখনো প্রস্তুত নয়'
বৈঠক শেষে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, "বাংলাদেশের বিজনেস কমিউনিটির প্রায় সকলেই আজ এখানে উপস্থিত ছিলেন। অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে পরিচিত দেশের বড় ব্যবসায়ীরা আজ এখানে এসেছেন। তাদের আসার পেছনে দুটি প্রধান কারণ রয়েছে: একটি হলো আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন এবং অন্যটি হলো শ্রম খাত সংক্রান্ত বিষয় (লেবার ইস্যু)। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা রক্ষায় আমাদের কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা তাদের বক্তব্য বিস্তারিত শুনেছি এবং তারা তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তুলে ধরেছেন। তাদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটা প্রতীয়মান হয় যে, এই মুহূর্তে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে না। বাংলাদেশ বর্তমানে একটি বড় উত্থানের পর অর্থনীতিকে রক্ষা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। বিগত দিনে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো প্রশ্নবিদ্ধ।"

"সবকিছু মিলিয়ে, যদি আমরা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই এবং যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, তা বাস্তবায়ন করতে চাই, তবে এই মুহূর্তে এলডিসি গ্রাজুয়েশন স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে," যোগ করেন তিনি।

"তারা এ ব্যাপারে তাদের মতামতও দিয়েছেন যে, বর্তমান সরকারের উচিত জাতিসংঘকে একটি চিঠি দিয়ে জানানো যে, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য সত্যিকার অর্থে প্রস্তুত কিনা। আমরা বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করছি, তারা যেন একটি চিঠি দেয় এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা এখানে এসে সরজমিনে বাংলাদেশের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করেন।"

শ্রম খাত ইস্যু
লেবার ইস্যু প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, "শ্রম আইন সংক্রান্ত বিষয়ে (লেবার ইস্যু) রেটিফিকেশনের ব্যাপারে তাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে অন্যান্য ইউনিয়নের সংখ্যা নিয়ে যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেখানে পরিবর্তন আনলে তা প্রকৃত অর্থে শ্রমিকদের ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক হবে কিনা, তা বিবেচনা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ইউনিয়নগুলো কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবে কিনা, সেটাও দেখতে হবে।"

"এগুলো বিবেচনা না করে তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা দেশের ভেতরে ও বাইরে একটি নেতিবাচক বার্তা দিতে পারে, যা থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন হবে," তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

'ব্যবসায়িক খাতে আমাদের বড় উদ্বেগের কথা বিএনপি নেতৃত্বকে বলেছি'
বিজেএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, "আমরা, যারা ব্যবসায়িক কমিউনিটির শিল্প পরিচালনা ও ব্যবসার সাথে জড়িত, আজ তাদের সাথে আলোচনা করেছি। আমাদের অনেক ব্যবসায়িক উদ্বেগ রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো এলডিসি গ্রাজুয়েশন স্থগিত রাখা এবং শ্রম আইনের সংশোধন।"

"শ্রম আইন সংশোধনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আপনারা জেনে থাকবেন, টিসিসিতে ১২৪টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যার মধ্যে আমরা ১২২টি বিষয়ে একমত হয়েছি। যে দুটি বিষয়ে আমরা একমত হতে পারিনি, তার বাস্তবসম্মত কারণ রয়েছে।"

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়