শিরোনাম
◈ জমেনি কলকাতার ঈদবাজার, ব্যবসায়ীরা  দুষছেন মোদি-হাসিনাকে  ◈ বিভাজনের পথ বেয়েই আ.লীগ আসবে, বিরোধ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হোন: মাহফুজ ◈ আ.লীগ পুনর্গঠন নিয়ে পিনাকীর বক্তব্য, যা বললেন সোহেল তাজ ◈ পুলিশ কনস্টেবল থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র কেনাবেচায় , যেভাবে পড়লেন ধরা ◈ আ’লীগের সমর্থনে মিছিল, যুবলীগ নেত্রীসহ আটক ৩ ◈ নিকেতন ক্লাব থেকে টার্গেট করে গুলশানে এনে ইন্টারনেট ব্যবসায়ীকে খুন ◈ আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে গণঅধিকার পরিষদ ◈ আওয়ামী লীগ একটি গাড়ি, তার ড্রাইভার খারাপ হতে পারে, কিন্তু গাড়িটা তো খারাপ নয়: জি এম কাদের ◈ শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের খুনিদের বিচারে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি: এনসিপি ◈ ইউনিভার্সিটি স্কয়ারে আবারো স্থাপিত হবে যুদ্ধ বিমান

প্রকাশিত : ১৪ মার্চ, ২০২৫, ১২:১১ রাত
আপডেট : ২০ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এবার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্য নিয়ে জামাত যে বিবৃতি দিলেন

‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল’—অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ বৃহস্পতিবার দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘গত ১২ মার্চ বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার দীর্ঘ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে “জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল” মর্মে যে মন্তব্য করেছেন আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি তার এ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বক্তব্যে বিস্মিত। মাহফুজ আলমের বক্তব্যের জবাবে আমি স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই যে, তিনি জামায়াত সম্পর্কে ভিত্তিহীন ও অসত্য বক্তব্য দিয়ে একটি প্রতিবেশী দেশের গুপ্তচর কারাবন্দী শাহরিয়ার কবিরদের ভাষাতেই কথা বলেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাহফুজ আলমের স্মরণ রাখা উচিত যে, তিনি একটি অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা। সে কারণে কোনো রাজনৈতিক দলকে টার্গেট করে সমালোচনা ও অসত্য বক্তব্য দেওয়ার কোনো নৈতিক ও বিধিগত অধিকার তিনি রাখেন না। রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে হলে রাজনীতির ময়দানে এসে বক্তব্য দেয়া সমীচীন। তার এ বক্তব্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অরাজনৈতিক চরিত্রকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘মাহফুজ আলমের জানা থাকার কথা যে, শেখ মুজিবের আমলে যুদ্ধাপরাধের জন্য যে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল তাতে যুদ্ধাপরাধের সাথে জামায়াতের কারও সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে শেখ মুজিব নিজেই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দিয়েছিল এবং আত্মসমর্পণকারী পাকিস্তানি সৈন্যদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়ে ঐ সমস্যার সমাধান করে গিয়েছেন। জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েই তিনি তার নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন। শেখ হাসিনা ক্যাঙ্গারু কোর্ট বসিয়ে জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল এবং তাদের দলীয় লোকদের দিয়ে মিথ্যা সাক্ষী সাজিয়ে জামায়াত নেতাদের যে বিচার করেছিল তা দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ বানিয়ে বিচারপতিদের ভয় দেখিয়ে যে বিচার করা হয়েছে তা ছিল বিচারের নামে একটি প্রহসন। তার প্রমাণ স্কাইপ কেলেঙ্কারি, সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্য, মাওলানা সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর বক্তব্য। এমনকি বৃটিশ সুপ্রিম কোর্ট-এ হাসিনা সরকারের ঐ বিচার গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে, ১৯৭১ সালে জামায়াত নেতাদের যুদ্ধাপরাধের সহযোগী হওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জনাব মাহফুজ আলমের বক্তব্যটি সম্পূর্ণ অসত্য, ভিত্তিহীন ও অনুমান নির্ভর। তবে তার এ বক্তব্য কোনো রাজনৈতিক অসৎ অভিপ্রায় থেকে বা কোনো অপশক্তির ইন্ধনে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপরিণামদর্শী আকাঙ্ক্ষা থেকেও হতে পারে বলে দেশবাসী মনে করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা জনাব মাহফুজ আলমের লেখার জবাবে আমি সুস্পষ্ট ভাষায় আরও জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আহলে সুন্নত আল জামায়াতের পূর্ণ অনুসারী। জামায়াতের আক্বিদার বিষয়ে প্রশ্ন তোলা সম্পূর্ণ অবান্তর ও এখতিয়ার বহির্ভূত। জামায়াতে ইসলামী, ফরায়েজী জামায়াত, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলামের সাথে বৃটিশ আমল থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে আসছে।

১৯৮৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম, চরমোনাইর পীর মাওলানা ফজলুল করিম ও খেলাফত মজলিসের নেতা শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক, জমিয়তে ওলামা ইসলামের নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন খান, নেযামে ইসলামের নেতা বিখ্যাত আলেম খতীবে আযম মাওলানা সিদ্দিক আহমেদ ও চট্টগ্রামের বাইতুশ শরীফের পীর মাওলানা আবদুল জব্বারসহ এ দেশের হক্কানী পীর এবং আলেমগণ মিলে ইত্তেহাদুল উম্মাহ গঠিত হয়েছিল। এ থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, জনাব মাহফুজ আলম না জেনে-বুঝেই জামায়াত সম্পর্কে ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। আশা করি আমাদের এই বক্তব্যের পর তার মনের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং তার ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বক্তব্যের জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করবেন এবং ভবিষ্যতে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।’ 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়