ভারতের পুনে শহরের ৪৪ বছর বয়সী এক ঠিকাদার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক অদ্ভুত বিজ্ঞাপনে প্রতারিত হয়ে ১১ লাখ রুপি হারিয়েছেন। ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারীকে অন্তঃস্বত্ত্বা করতে পারে, তবে তাকে ২৫ লাখ রুপি পুরস্কার দেয়া হবে। এ ঘটনা প্রকাশ পায় বানার থানায় দায়ের করা এফআইআরে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভুক্তভোগী একটি ভিডিও বিজ্ঞাপন দেখতে পান। সেখানে এক নারী হিন্দিতে বলছেন, ‘আমি এমন একজন পুরুষ চাই, যে আমাকে মা বানাবে।
মাতৃত্বের আনন্দ দেবে। আমি তাকে ২৫ লাখ রুপি দেব। সে শিক্ষিত কি না, কোন জাতের, গায়ের রং ফর্সা না কালো- এসব কিছুই আমার যায় আসে না।’ ভিডিওটির শেষে দেয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে ‘প্রেগন্যান্ট জব’ কোম্পানির সহকারী হিসেবে পরিচয় দেন।
তিনি জানান, ওই নারীর সঙ্গে বসবাস করতে হলে তাকে কোম্পানিতে রেজিস্ট্রেশন করে আইডি কার্ড নিতে হবে। প্রতারকরা নানান অজুহাতে টাকা দাবি করতে থাকে। রেজিস্ট্রেশন চার্জ, আইডি কার্ড ফি, ভেরিফিকেশন খরচ, জিএসটি, টিডিএস, প্রসেসিং ফি- এমন নানা কারণে একের পর এক টাকা পাঠাতে বলা হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
তদন্তে দেখা গেছে, ভুক্তভোগীকে এমনভাবে প্রলুব্ধ, বিভ্রান্ত ও কখনো জোর করে টাকা দিতে বাধ্য করা হয় যে, তিনি সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১০০টির বেশি ছোট ছোট লেনদেনের মাধ্যমে মোট ১১ লাখ রুপি পাঠান। সব অর্থই ইউপিআই ও আইএমপিএস ট্রান্সফারের মাধ্যমে দেয়া হয়। পরে তিনি প্রশ্ন করতে শুরু করলে প্রতারকরা তার নম্বর ব্লক করে দেয়। তিনি প্রতারিত হয়েছেন এটা বুঝতে পেরে ওই ঠিকাদার বানার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, আমরা প্রতারকদের ব্যবহৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল নম্বর শনাক্তের চেষ্টা করছি।
পুনের এক সাইবার তদন্তকারী জানিয়েছেন, এই ধরনের প্রতারণা ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতারকরা ‘প্রেগনেন্ট জব সার্ভিস’ বা অনুরূপ নামে নারীদের ভিডিও বিজ্ঞাপন তৈরি করে। তাতে পুরুষদের গর্ভধারণের জন্য নিয়োগ দেয়ার ভান করা হয়। প্রথমে রেজিস্ট্রেশন ফি চেয়ে অর্থ আদায় করা হয়।
পরে চিকিৎসা পরীক্ষা, আইনি প্রক্রিয়া বা সিকিউরিটি ডিপোজিটের নামে বড় অঙ্কের টাকা নেয়া হয়। টাকা হাতে পেলেই তারা অদৃশ্য হয়ে যায়। বিহার, উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যে কয়েকজন প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, এগুলো আসলে বৃহত্তর সাইবার অপরাধচক্রের অংশ। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভুয়া ভিডিও বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। উৎস: মানবজমিন।