শিরোনাম
◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু ◈ হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন আদায় করে নেবে: মির্জা ফখরুল ◈ প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০১:২৪ রাত
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০১:২৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইমরানের উদাহরণ কি বিএনপির জন্য প্রযোজ্য হয়? 

মাসুদ কামাল

মাসুদ কামাল: পাকিস্তানের নির্বাচনে ইমরান খান যে বিরাট চমক দেখিয়েছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই চমক অনেকের গালে চপেটাঘাতের মতো লেগেছে। পাকিস্তান মুসলিম লীগ অথবা পিপিপি, এমনকি পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ানো যুক্তরাষ্ট্রÑ সবাই বড় ধরনের  আঘাত পেয়েছে। প্রমাণ হয়েছে যে জনগণ যদি আপনার পেছনে থাকে তাহলে কেউ আপনাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। বিরাট একটি প্রতিকূল অবস্থা থেকে পাকিস্তানের নির্বাচনের এই ফলটি এসেছে এবং ইমরান খানের পক্ষে পাকিস্তানের জনগণ তাদের সমর্থন জানিয়েছে। 

এই নির্বাচনটি হয়ে যাওয়ার পর আমি অনেককেই বলতে শুনেছি যে, প্রতিকূল অবস্থায় তো ইমরান খানও ছিলেন, কিন্তু তারা নির্বাচন থেকে সরে যাননি। বরং তাদের একটির পর একটি অ্যাকশন ছিলো। তারা কোনো দলীয় প্রার্থীই দেয়নি, কিন্তু তাদের প্রার্থীরা সব স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেছে এবং তারা সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে জয়ী হয়েছে। পাকিস্তানে মোট ২৬৬টি আসনে নির্বাচন হয়। একজন প্রর্থী মারা যাওয়ার কারণে ২৬৫টি আসনে নির্বাচন হয়েছে। ২৬৫টি আসনের মধ্যে ১৩৩টি আসনে যারা জয় পাবে তারাই সরকার গঠন করতে পারবে। ইমরান খানের ১০২টি হয়েছে এবং তার আরো কমপক্ষে ৩১ জন এমপি দরকার। অন্যদিকে নওয়াজ শরীফের ৭৩ এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর ৫৪ যোগ করলে হয় ১২৭। তাদেরও ৬ জন এমপি লাগবে। তারা চেষ্টা করছে স্বতন্ত্র থেকে ৬ জনকে ভাগিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু এরকম ভাগিয়ে নিয়ে যদি আপনি সরকার গঠন করেন, তবুও কি সেটি খুব স্বস্থিকর হবে? 

অন্যদিকে ইমরান খানের প্রার্থীরা অনেকইে দাবি করছেন তাদের জোড় করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী যোগ করলে তারা ১৫০টির মতো আসন পেয়ে যাবেন। এটি বলা যায় যে, আগামীতে পাকিস্তানে একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হবে। যদি ইমরান খান বাইরে থাকতেন, দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারতেন, তাহলে হয়তো ফল অন্য রকম হতো। একজন ব্যক্তি যখন জনপ্রিয় হয় তখন তার পেছনে সবাই একত্রিত হন। উনার পার্টি কী বলে, পার্টির সঙ্গে কারা আছে এসব তখন গুরুত্ব পায় না। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও পিটিআই কিন্তু নির্বাচন করেছে এবং তারা প্রমাণ করেছে যে নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে যাওয়া কোনো কাজের মধ্যেই পড়ে না। তাহলে এই একই বিষয় কি বাংলাদেশে হতে পারতো না? নির্বাচনে যে বিএনপি মাঠ ছেড়ে দিলো, বর্জন করলো, এতে কি কোনো লাভ হলো? 

এখানে আমি বলবো যে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি এক নয়। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খানের সঙ্গে অনেক বৈরী আচরণ করেছে। তরপরেও গত কয়েকটি নির্বাচনের যে ইতিহাস সেদিকে তাকালে একথা বলা যাবে না যে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন দিনকে রাত এবং রাতকে দিন করে ফেলেছে। যে কারণে ইমরান খানের মতো পার্টি নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখতে পেরেছিলো। নির্বাচন কমিশন প্রশাসন দ্বরা নিয়ন্ত্রিত নয়, যার প্রমাণ এবারও পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে কি সেই বাস্তবতা আসলে আছে? ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ৬টি আসন পেয়েছিলো। আমি বলবো পায়নি, তাদের দেওয়া হয়েছিলো। সরকারি দল যদি চাইতো তাহলে আরো বেশি আসন পেতে পারতো। 

বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক বাস্তবতা সেখানে কি ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপি মাত্র ৬টি পাওয়ার যোগ্য? বাংলাদেশের নির্বাচনে কী পরিমাণ প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব সেটি যদি একবার ভেবে দেখেন তাহলে আমি বলবো এবারের নির্বাচনে বিএনপির না যাওয়াকে কোনো দোষ দেওয়া যাবে না। পাকিস্তানের নির্বাচনের পরপরই আমেরিকা একটি বিবৃতি দিয়েছে, ‘পাকিস্তানে যে সরকারই আসুক তাদের সঙ্গে তারা কাজ করতে আগ্রহী’। এগুলো হচ্ছে রুটিন বক্তব্য। আমাদের এখানেও অনেকরকম রুটিন বক্তব্য আসে। সেটি নিয়ে উল্লাসিত হওয়ার কিছু নেই। 

পরিচিতি: সিনিয়র সাংবাদিক। ‘কথা’ ফেসবুক পেজের ‘রাজনীতির কথা’ ভিডিও কনটেন্ট থেকে শ্রুতিলিখন করেছেন সঞ্জয় চন্দ্র দাস   

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়