শিরোনাম
◈ আবারও শাহবাগ অবরোধ করেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আহতরা ◈ গেজেট প্রকাশের পরই আ. লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত: সিইসি ◈ লড়াই রা‌তে, জিত‌লে বা‌র্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন ◈ পরিবারে মা হচ্ছেন এক বিস্ময়কর প্রতিষ্ঠান, খালেদা জিয়াকে নিয়ে আবেগঘন বার্তা তারেক রহমানের ◈ পাকিস্তানের শক্ত জবাবেই যুদ্ধবিরতি করতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারস্থ হয় ভারতঃ সিএনএনের সাংবাদিক (ভিডিও) ◈ মেসির গোলে কাজ হয়‌নি, বড় ব্যাবধা‌নে হে‌রে গে‌লো ইন্টার মায়ামি ◈ জনরোষ ঠেকাতে লুঙ্গি-গেঞ্জি-মাস্ক পরে বিমানবন্দরে যান আবদুল হামিদ, গোপনে তুলে দেওয়া হয় বিমানে ◈ রেকর্ড হ্যাটট্রিকসহ সরলথের চার গোল, জিত‌লো অ্যাথ‌লে‌তি‌কো মা‌দ্রিদ ◈ আরব আমিরাতের বিরু‌দ্ধে দুই ম‌্যা‌চের ‌টি- টো‌য়ে‌ন্টি খেল‌বে বাংলাদেশ  ◈ ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় চীনা জে-১০সি জেটের উত্থান: রাফায়েল ভূপাতিত, বিশ্বজুড়ে চীনা অস্ত্রপ্রযুক্তির চাহিদা বৃদ্ধি

প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০১:৩০ রাত
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০১:৩০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিখনবস্তুর চেয়ে শেখানোর কৌশলই এখন ও আগত সময়ের জন্য জরুরি

আশরাফুল আযম খান

আশরাফুল আযম খান: নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা শিখছে। শিখছে ভিন্নভাবে। আগের শ্রেণিকক্ষের চার দেয়ালটাই ছিলো তাদের শিক্ষা আহরণের একমাত্র ক্ষেত্র। এখন পুরো পৃথিবীটারই তাদের শেখার জায়গা। নতুন শিক্ষাক্রমে তারা শিখছে শ্রেণিকক্ষে, শিক্ষকদের কাছ থেকে; শিখছে পরিবারে অভিভাবকদের কাজ দেখে। শিখছে পাশের বিভিন্ন পেশাজীবীর জীবন অভিজ্ঞতা থেকে, তাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে। শিক্ষা এখন কেবল স্মৃতি বা মুখস্থনির্ভর নয়, হাতে-কলমেলব্ধ অভিজ্ঞতাই এখন শিক্ষা। তারা এখন কেবল এককভাবে শিখছে না, শিখছে জোড়ায় সহপাঠির সঙ্গে একাত্ম হয়ে, জোড়ায় জোড়ায়, দলগতভাবে। নিজে বলছে, অন্যের কথা শুনছে। দলীয় কাজে অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে, অন্যের মত মেনে নিতে শিখছে। শিখন এখন শিক্ষককেন্দ্রিক নয়, শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক। শিখন কাজে ছাত্র-ছাত্রীরা আর পেসিভ সত্তা নয়, তারা সক্রিয় ও জীবন্ত সত্তা। তাই শিক্ষার নব নব পদ্ধতিগুলো এখন তাদের কাছে সমান আনন্দদায়ক আর অংশগ্রহণমূলক। 

শিক্ষার্থীরা এখন বাসায়, শ্রেণিক্ষক্ষে বানাচ্ছে এআই প্রযুক্তিনির্ভর কমিউটারের সিমুলেশন, রোবট, বৈদ্যুতিক সার্কিট, গ্রিন হাউজ, প্রাণীকূলের বাস্তুভিটা, আগামী দিনের বিকল্প জ্বালানির মডেল, জ্যামিতির নানা আকৃতি, নিজের ব্যবহৃত স্কেলসহ নানা বিষয়। শিখছে নিজের শ্রেণিকক্ষের পরিমাপ, নিজের প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর জ্যামিতিক ও গাণিতিক প্রকাশ। কী করে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়, কী করে অপরিচিত জনের সঙ্গে মিশতে হয়, তাও শিখছে। শিখছে নিজেকে শিক্ষক, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, ডাক্তার, ইমাম, কৃষক, দোকানদার, রাঁধুনী ইত্যাদি চরিত্রের নাম ভূমিকায়। তাদের শেখানো হচ্ছে সৃজনশীলতা আর স্বনির্ভরতা। তাদের শেখানো হচ্ছে নিজের কাজ নিজেই কীভাবে করতে হয় তার গুরুত্ব ও নানা কলা-কৌশল। তারা শিখছে ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, সমাজ, বিজ্ঞান, গণিত ধর্ম-নৈতিকতা, শারীরিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার ইত্যাদি নানা বিষয়। কেবল রান্নাবান্না শিখছে না বা রাত জেগে কাগজ কেটে প্রজেক্ট তৈরি করছে না।

তথ্য-প্রযুক্তি, এ আই, ন্যনো টেকনোলজি, বায়ো টেকনোলজির প্রভাবে দুনিয়া যে দ্রুতগতিতে পাল্টাচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীদের কতগুলো বিষয় শেখালেই যথেষ্ট নয়, কীভাবে বিষয়টি শিখতে হবে সেটা শেখানই সবচেয়ে জরুরি। শিখনবস্তুর চেয়ে শিখন-শেখানোর কৌশলটিই এ সময়ে আর আগত সময়ের জন্য জরুরি। এ প্রক্রিয়ায় তারা অজানা ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তত করতে পারবে, পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে। বর্তমান শিক্ষাক্রম সে দিকটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।
পৃথিবী যে গতিতে বদলাচ্ছে এ সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি বলতে পারবেন না। আপনার যে ছেলে বা মেয়েটি এখন প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে, পঁচিশ বছর পর সে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ব্যাংকার হবে। কারণ ধারণা করা হচ্ছে, আজকে থেকে পঁচিশ বছর পর এখনকার অনেক পেশাই আর থাকবে না। এমনকি কোনো পেশাই বেশিদিন স্থায়ী হবে না। এ বাস্তবতায় এখন থেকেই শিক্ষার্থীদের কেবল কোনো একক বিষয় শিখানোর চেয়ে শেখার কলা-কৌশল শেখানোটাই মুখ্য। শেখার মানসিকতা তৈরি করে লার্নিং-আনলার্নি-রিলার্নিং প্রক্রিয়ার সাথে পরিচিত করানো গেলে তারা যে কোনো শিখনবস্তু আয়ত্ত করতে পারবে।

গত আড়াই দশকের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা, শিক্ষাবিজ্ঞান অধ্যয়নসূত্রে আমি নব প্রবর্তিত শিক্ষাক্রমের এই মর্ম অনুধাবন করছি। যারা এর বিরোধিতা করছেন তারা খন্ডিত জেনে বা না-জেনেই বিরোধিতা করছেন। অথবা অন্যকোনো উদ্দেশ্যে। আমাদের স্বাভাবিক প্রবণতা এই যে, আমরা না  জানলেও জানার ভান করি। কাজের চেয়ে কথা বলি বেশি। লেখক : অধ্যক্ষ, লিবার্টি স্কুল এন্ড কলে। ফেসবুকে ১-১২-২৩ প্রকাশিত হয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়