বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য একাধিক পাকিস্তানি মন্ত্রী ঢাকা সফর করছেন। সফরে প্রথাগত সম্পর্ক যেমন- অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মাধ্যমে স্বাভাবিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রথাগত সহযোগিতার সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্য ১৯৭১ সালে নিরীহ বাংলাদেশিদের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে গণহত্যা ও নৃশংসতা চালিয়েছিল, সেই ইস্যুর সুরাহা হওয়া দরকার বলে মনে করছে সরকার।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে অপকর্মের জন্য পাকিস্তান ক্ষমা না চাইলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক টেকসই না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে পৃথিবীর অনেক দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক ছিল এবং পরবর্তীতে ‘ক্ষমা চাওয়া’ ও ’ক্ষমা করার’ মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা হয়েছে। এক্ষেত্রেও সেটি সম্ভব এবং পাকিস্তানের সেটিই করা দরকার।
এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জার্মানি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আক্রমণ করে। কিন্তু বর্তমানে ওইসব দেশের সুসম্পর্ক বিরাজ করছে। কারণ জার্মানি তাদের ভুল বুঝতে পেরেছিল এবং সেজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছে।’
১৯৭১ সালের নৃশংসতার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মসৃণভাবে অগ্রসর হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর জন্য দুই পক্ষকে কাজ করতে হবে। পাকিস্তানকে যেমন এগিয়ে আসতে হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশকে তেমন আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
এ বিষয়ে আরেকজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে ১৯৭৪ এবং ২০০২ সালে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। কিন্তু এটি বাংলাদেশ মেনে নেয় না।’
পাকিস্তান সংসদে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে একটি রেজুলেশন গৃহীত হলে সেটি মেনে নেওয়া সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্ষমা বিষয়টি রাজনৈতিক এবং সেভাবেই এর সমাধান হওয়া দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্পর্ক নির্ভর করে দুই দেশের সমাজ বিষয়টিকে কীভাবে দেখে এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে টেকসই সম্পর্ক তৈরি করার জন্য অস্বস্তিকর উপাদানগুলো দূর করতে হবে।’ উৎস: বাংলাট্রিবিউন।