শিরোনাম
◈ জনরায় পেলে মিলেমিশে দেশ পরিচালনার অঙ্গীকার তারেক রহমানের ◈ কোথায় গেল ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর? ◈ শেখ হাসিনাকে যেভাবে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া ◈ বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব উপায়ে ব্যবসাবান্ধব হতে চেষ্টা করছে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ লাফার্জ হোলসিমের মাটি সংগ্রহে ফসলি জমি ও জলাশয় ধ্বংস: পরিবেশ ও কৃষি বিপর্যয়ের আশঙ্কা ◈ বাংলাদেশ ঋণের ‘২৬০ কোটি টাকা’ ফেরত দেয়নি, দাবি করল পাকিস্তান ◈ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক ◈ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী (ভিডিও) ◈ বিএনপিকে দুর্বল দেখাতে অপপ্রচারের চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল ◈ গোপনে ১৯০ মিলিয়ন ডলারের নজরদারি সরঞ্জাম কিনেছিল আওয়ামী লীগ সরকার: টেকনোগ্লোবাল ইনস্টিটিউটের চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রকাশিত : ১২ আগস্ট, ২০২৫, ০২:০১ দুপুর
আপডেট : ১২ আগস্ট, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার রাস্তার ফুটপাত ও মহল্লার অলিগলি দখল, জনগণের ভোগান্তি!

আমার জন্ম ঢাকাতেই, বর্তমানে আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ছি। এখন থাকি রামপুরার উলনে। বয়স বেশি না হলেও ঢাকার বহু জায়গা ঘুরে দেখেছি। বাস্তব চিত্র অবলোকন করলে বোঝা যায়, শুধু মৌচাক থেকে গুলশান থানাধীন বাড্ডা পর্যন্ত এলাকার বর্ণনা দিতেই হয়রান হয়ে পড়তে হয়।

ঢাকা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। প্রতিদিন লাখো মানুষের কর্মব্যস্ততায় মুখর এই শহরে ফুটপাত একসময় ছিল পথচারীদের নিরাপদ চলাচলের অন্যতম অবলম্বন, আর মহল্লার অলিগলি ছিল স্থানীয়দের অবাধ চলাফেরার পথ। কিন্তু বর্তমানে ফুটপাত ও অলিগলি ক্রমেই অবৈধ দখলের শিকার হচ্ছে। রাস্তার পাশে হকারদের দোকানপাট, গ্যারেজ, চায়ের টং, বাইকের ডিসপ্লে, সবজি ও হাঁস-মুরগির ভ্যান, নির্মাণসামগ্রী, এমনকি যত্রতত্র রিকশা, অটোরিকশা ও প্রাইভেটকার পার্কিং—সব মিলিয়ে পথচারীদের চলাচল কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

রামপুরা ছাড়াও নিউ মার্কেট, গুলিস্তান, ফার্মগেট, মতিঝিল ও পুরান ঢাকার চকবাজার—প্রায় সর্বত্রই ফুটপাতে হাঁটার সুযোগ নেই। কোথাও দোকান বসানো, কোথাও গাড়ি পার্কিং, আবার কোথাও সিটি কর্পোরেশন বা ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে পথ বন্ধ। এতে পথচারীরা বাধ্য হয়ে মূল সড়কে নেমে হাঁটেন, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।

অন্যদিকে আবাসিক এলাকার অলিগলিতেও একই চিত্র। কোথাও দোকান ও খাবারের স্টল, কোথাও গ্যারেজের জন্য রাস্তা সংকুচিত, কোথাও বা মাসের পর মাস ফেলে রাখা নির্মাণসামগ্রী—যা শুধু চলাচল বাধাগ্রস্ত করে না, জরুরি মুহূর্তে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশও ব্যাহত করে।

মালিবাগের বাসিন্দা সেলিনা সোয়ানা বলেন, “আমাদের গলিতে এমনভাবে দোকান বসানো হয়েছে যে রিকশাও প্রবেশ করতে পারে না। অসুস্থ কারও জন্য এটি ভয়াবহ।” সদরঘাটে ফুটপাত দখল করে স্থায়ীভাবে টং দোকান ও গুদামঘর গড়ে উঠেছে, যেখানে হাজারো মানুষের যাতায়াতের জন্য মাত্র এক ফুট জায়গা খোলা থাকে। মিরপুরের কালশীতে গ্যারেজের অবৈধ দখলে ফায়ার সার্ভিস ঢুকতে না পারায় একটি অগ্নিকাণ্ডে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

পুরান ঢাকায় অলিগলিতে মাসের পর মাস পড়ে থাকা নির্মাণসামগ্রীতে শিশু ও বৃদ্ধরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। আমার মতে, এ সমস্যার পেছনে রয়েছে হকারদের জন্য নির্দিষ্ট বিকল্প জায়গার অভাব, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়া, আইন প্রয়োগে দুর্বলতা এবং নাগরিক অসচেতনতা।

সমাধানের জন্য দরকার সমন্বিত পদক্ষেপ—হকারদের জন্য নির্দিষ্ট হকার জোন বা মার্কেট তৈরি, নিয়মিত দখলমুক্ত অভিযান, কঠোর জরিমানা ও শাস্তি কার্যকর, প্রভাবশালী মহলের দৌরাত্ম্য বন্ধ, এবং নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও নাগরিক সমাজকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।

অবৈধ দখলমুক্ত ফুটপাত ও অলিগলি শুধু চলাচল সহজ করবে না, বরং একটি নিরাপদ, বাসযোগ্য ও আধুনিক ঢাকা গড়তে সহায়তা করবে। প্রতিটি পথচারী ও বাসিন্দার প্রাপ্য এই অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে সরকারি সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।

লেখক: অদ্রিতা দাস
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়