মুরাদুল ইসলাম: ৫ বলে লাগে ১০ রান, মুশফিক দুই বলে দুইটা ৪ মাইরা নাচতে লাগল। পরের বলে সে আউট, এর পরের বলে আউট তার ভায়রা ভাই, এর পরের বলে আরেক রান আউট। খেলা শেষ, ইন্ডিয়া জিতে গেলো, মুশফিকের উদযাপন বৃথা গেলো। বাংলাদেশের হইছে এই দশা, আবেগ আবেগ। জিতার আগে উন্নয়ন উদযাপন করতে গিয়া এখন ধরা খাওয়ার দশাতে দেশ। যেই দেশ মে মাসে শ্রীলংকার দুঃখে সমব্যাথী হইয়ে ২০০ মিলিয়ন কারেন্সি সোয়াপ বা ডলারে ঋণ দিতে গেলো, সেই দেশ এখন আইএমএফের কাছে লোন চায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার। লাস্ট চাইছিল ২০১২ সালে। এই মে মাসেই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন সরকারকে সাবধান করে আসছিল এনার্জি ক্রাইসিস নিয়ে। উন্নয়নের উদযাপনে তা আমলে নেয়া হয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সরকার স্বীকার করল। লোডশেডিং দিল, আরও নানা রকম সেইভের কথা বলছে।
ঋণ দিতে আইএমএফ অন্যান্য শর্তের সাথে এটাও বলছে, ফরেন রিজার্ভ কত আছে তা আবার ভালোভাবে হিসাব করতে হবে। আইএমএফের হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ যা বলা হয় তার চাইতে কম। এতে বাংলাদেশের মন্ত্রী গোস্বা করে বলেছেন, আই এম এফের ঋণ নিবেন না। গোস্বা টিকবে না, এই মামলা পদ্মা সেতুর না, গ্লোবাল এনার্জি ক্রাইসিস এবং তৎপরবর্তী রিসেশন প্রায় দুয়ারে খাড়া। এনার্জি ছাড়া দেশ চলবে কেমনে। তাও কৃষিভিত্তিক দেশ, ৩০ ভাগ ইউরিয়া সারও উৎপাদন হয় না। সার তো লাগবে ফুড প্রডাকশনের জন্য। বাংলাদেশের এক্সপোর্টের ডাচ ডিজিজ তৈরি পোশাক শিল্প, ৮৫ শতাংশ এক্সপোর্ট রেভিনিউ আসে এখান থেকে। ইউরোপে অলরেডি রিটেইল সেল কমে গেছে, বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে প্রোডাকশন কমেছে ১০ শতাংশ এখন পর্যন্ত। জিতার আগে উদযাপনে গিয়া বাংলাদেশ রিস্কি খেলতেছিল।
এক্সপোর্ট ডেভলাপমেন্ট ফান্ডের স্কোপ বাড়াইয়া ডলারে ঋণ দেওয়া শুরু করছিল বাংলাদেশ, কারণ মনে করছিল রিজার্ভ বেড়ে গেছে, তাই আর ঠেকায় কে। কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলারে সুযোগ দেওয়া হইছিল ইডিএফ থেকে ডলার ঋণ নিয়ে এক্সপোর্টারদের ঋণ দিতে পারবে। দিছেও তারা। কথা ছিল উনারা ঋণ পে করবেন ডলারে লাভসহ। কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। লাভের গুড় পিঁপড়ায় খাইছে, আসলও হারাইয়া গেছে, বা জমা হইছে বিদেশের ব্যাংকে। পলিটিক্যাল ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্যবসার নাম করে ঋণ নিয়া বেশির ভাগেই আর দেয় নাই। এদিকে দেশে চলেছে অতি ব্যয়বহুল অকাজের বা ফ্লাই ওভারের উন্নয়ন। এইসব প্রায় ডেকে আনা দুরবস্থা। ফেসবুক থেকে