শিরোনাম
◈ ইরান কেন আমেরিকার কাছে নতিস্বীকার করে না: তাস‌নিম নিউজ এজ‌ন্সির প্রতি‌বেদন ◈ যে কারণে জোরপূর্বক লাখ লাখ আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান! ◈ সাঁথিয়ায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ৩ জন নিহত, আহত অন্তত ১০ ◈ ক্রিকেটার জা‌ভেদ মিয়াঁদাদ আমার বিয়ে বরবাদ করে দিয়েছিলেন, প্রথম বিয়ে নিয়ে অ‌ভি‌নেতা আমির খান ◈ দে‌শের রাজনী‌তি‌তে এনসিপি কি 'মব' দিয়ে প্রভাব বিস্তার করতে চায়? ◈ পারস্পরিক শুল্ক সংকট: চূড়ান্ত দর-কষাকষিতে বাংলাদেশ ◈ আরব আমিরাতের আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশির ভাগ্যবদল: লটারিতে জিতলেন ৮০ কোটি টাকা ◈ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় নিহত ১১৮, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনায় হামাস ◈ ‘মব এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সেনাবাহিনী’ ◈ হোটেলে নারীকে মারধর করা বহিষ্কৃত যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারের চেষ্টায় পুলিশ

প্রকাশিত : ১০ মার্চ, ২০২৪, ০১:৪১ রাত
আপডেট : ১০ মার্চ, ২০২৪, ০১:৪১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নারীর ক্ষমতায়ন এবং পুঁজিবাদী সমাজে নারী

আহসান হাবিব 

আহসান হাবিব: [১] নারীর ক্ষমতায়ন একটি ভুল কনসেপ্ট বলে মনে হয় আমার কাছে। পুরুষের বিপরীতে নারীর ক্ষমতার সাম্য যদি কখনো বাস্তবতা পায়, তাহলে কি নারীর উপর পুরুষের নির্যাতন বা দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যাবে? মনে হয় না। তখন যে দ্বন্দ্বটা উপস্থিত হবে, তা হবে স্থূল শারীরিক এবং অর্থনৈতিক তারতম্যজনিত। যদি পুরুষের ক্ষমতার দিকে তাকাই, তারা কি একে অপরের সংগে দ্বন্দ্বে লিপ্ত নয়? একজন পুরুষ পুঁজিপতি কি আর একজন পুরুষ পুঁজিপতির প্রতিপক্ষ নয়? তারা কি যুদ্ধে লিপ্ত থেকে হত্যালীলায় মত্ত নয় একে অপরে? এর উত্তর যদি হ্যা হয়, তাহলে একজন নারী যখন অর্থনৈতিক, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জ্ঞানের দিক দিয়ে পুরুষের সমকক্ষ হয়, তাহলে পুরুষের সংগে বিদ্যমান দ্বন্দ্বের মিমাংসা কিভাবে হবে? হবে না, বরং একটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করবে। 
[২] তখন যে শুধু পুরুষ প্রতিযোগী হবে, তা নয়, ক্ষমতায়িত অন্য নারীও তার প্রতিযোগী হয়ে দাঁড়াবে। তবে নারীর এই প্রতিযোগী হয়ে ওঠা একটি নারীপুরুষ ক্ষমতার বৈষম্যকে কমিয়ে আনবে এটা সত্য। যদি নারীর ক্ষমতায়ন বলতে এই অবধি বুঝি, তাহলে বিষয়টা ঠিকই আছে। বাকি থাকলো শারীরিক অসাম্য। এটা প্রাকৃতিকভাবেই সত্য যে শারীরিকভাবে নারী পুরুষের চেয়ে কিছুটা দুর্বল যদিও এই শারীরিক দুর্বলতা বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বলতার সমার্থক নয়। তথাপি পুরুষ এই সুযোগটা নেয়। এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। তাহলে দেখা যাচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন সত্যিকারভাবে নারীর উপর পুরুষ নির্যাতন কমায় না, বরং মুখোমুখি করে। শুধু পুরুষ নয়, নারীর বিরুদ্ধেও তাকে লড়তে হয়। এটা তখন রূপ নেয় খাঁটি শ্রেণীদ্বন্দ্বে। বিষয়টা স্বাভাবিক অন্তত আমরা যখন বসবাস করছি একটি পুঁজিবাদী বিশ্বে।
[৩] তাহলে নারীপুরুষ এই জেন্ডারজনিত দ্বন্দ্বের মিমাংসা কি করে সম্ভব? পুরষের বিপরীতে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়টিকে সমাধান করবে না। তবে এই ক্ষমতায়ন কিছু বৈষম্য কমিয়ে আনবে। এর দ্বারা বিষয়টির মিমাংসা হবে না, রূপ নেবে ভিন্ন দ্বন্দ্বের যা আমি আগেই বললাম। তাহলে নারীমুক্তি প্রশ্নে কি নারীর ক্ষমতায়ন কোন ভূমিকা রাখে? 
[৪] রাখে, কিন্তু শেষ করতে পারে না। আসলে নারীমুক্তি বলে যে ধারণাটি বিদ্যমান, তা একপেশে। নারীপুরুষ উভয়ে শৃঙ্খলিত একটি ব্যবস্থার কাছে, সেই ব্যবস্থার নাম পুঁজিবাদ। নারীকে যদি ক্ষমতায়িত করা হয়, তাহলে ব্যবস্থার কোন রকমফের ঘটে না, বরং পুঁজিবাদ এতে আরও শক্তিশালী হয়। দরকার এই ব্যবস্থার রূপান্তর। জেন্ডারভিত্তিক ক্ষমতায়ন নয়, মানুষভিত্তিক সাম্যাবস্থা কায়েমই কেবল নারীর উপর পুরুষ নির্যাতন তথা যে কোনো বৈষম্যমূলক নির্যাতন কমাতে পারে। নারীর ক্ষমতায়ন, প্রকৃতপ্রস্তাবে, পুঁজিবাদী ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার একটি কৌশল যেখানে নারী এবং পুরুষ উভয়ে ব্যস্ত থাকবে নিজের নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজে। একটি পুঁজিবাদী সমাজে নারী যতই নিজেদের ক্ষমতাবান করুক, মুক্তি নয়, তাতে বৈষম্য আরো বাড়ে এবং পরিণামে শোষিত হতে থাকে শুধু শ্রম বিক্রি করা সব হারানো মানুষের দল, নারী পুরুষ উভয়েই। লেখক: ঔপনাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়