শিরোনাম
◈ দেশে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু: ট্রাভেল পাসের আবেদন তারেক রহমানের ◈ হাসিনার অনুসারীদের জামিন বিতর্কে আইন উপদেষ্টার উদ্বেগ প্রকাশ ◈ প্রার্থীদের অস্ত্রের ঝুঁকি, নিরপেক্ষ প্রশাসন নিয়ে চ্যালেঞ্জ ইসির ◈ কূটনীতির রীতিনীতি কি উপেক্ষা করছেন প্রণয় ভার্মা ◈ ওসমান হাদির অস্ত্রোপচার হবে সিঙ্গাপুরে, অনুমতি দিয়েছে পরিবার ◈ দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করলো সরকার ◈ দুর্বল প্রতিপ‌ক্ষের বিরু‌দ্ধে  লড়াই ক‌রে জিত‌লো ‌রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ মেয়েকে নিয়ে ২৫ তারিখ সকাল ১১টায় ঢাকায় নামবেন তারেক রহমান ◈ নির্বাচন নিয়ে ভারতের 'নসিহতে' বাংলাদেশের তীব্র প্রতিক্রিয়া কেন? ◈ শেষ স্ট্যাটাসে ওসমান হাদিকে নিয়ে যা লিখেছিলেন এনসিপির নেত্রী রুমী

প্রকাশিত : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৮:১০ রাত
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আইন উপদেষ্টার বক্তব্য স্ববিরোধী ও একতরফা: ব্যারিস্টার কায়সার কামাল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টকে “স্ববিরোধী ও একতরফা” বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজনৈতিক বিষয়ে আলাপকালে প্রসঙ্গক্রমে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আইন উপদেষ্টা তার ফেসবুক পোস্টে একদিকে আইনজীবী ও আদালতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, অন্যদিকে মামলা দায়েরকারী ও তদন্তকারী সংস্থার কার্যক্রমের অসঙ্গতি ও সক্ষমতা নিয়েও কথা বলেছেন। তার ভাষায়, “ফেসবুক পোস্টের ২ নম্বর প্যারার ৯ নম্বর লাইন থেকে ১৪ নম্বর লাইন পর্যন্ত পড়লেই স্পষ্ট বোঝা যায় তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন।”

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল অভিযোগ করেন, আইন উপদেষ্টা ঢালাওভাবে বড় রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালী আইনজীবীদের দায়ী করলেও নিজ মন্ত্রণালয় কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়বদ্ধতার বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।
 
“কিভাবে বা কার ছত্রচ্ছায়ায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্যতম অর্থ জোগানদাতা ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার দিলীপ আগরওয়াল ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি আদালত থেকে জামিন পেয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে বের হয়ে যান—সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।” প্রশ্ন তোলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

এছাড়া সিআরপিসির ১৭৩ ধারার সঙ্গে সেকশন ১৭৩এ সংযোজনের পেছনের উদ্দেশ্য নিয়েও আইন উপদেষ্টার নীরবতার সমালোচনা করেন তিনি।

জুলাই যোদ্ধা হাদির ওপর হত্যাচেষ্টা মামলার প্রসঙ্গ টেনে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “গ্রেফতারের পর এফআইআর এবং ফরওয়ার্ডিংয়ে কেন অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন করা হয়েছিল, কেন তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও অতীত মামলার তথ্য আদালতে দাখিল করা হয়নি- এসব প্রশ্নের কোনো জবাব নেই।” একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এমন একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী কিভাবে এতদিন নির্বিঘ্নে চলাফেরা করেছে এবং আমাদের হাদির নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছে?”

নিজের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে বিএনপির আইন সম্পাদক হিসাবে আমার নাম একটি বিশেষ মহল ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রচার করছেন । আদালত অঙ্গনে আমাদের পরিচয় ‘আইনজীবী’ হিসেবে, বিএনপির আইন সম্পাদক হিসেবে নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমি একজন আইনজীবী হিসেবে শুধু বিএনপি নয়, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকারসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের জন্য ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত নিঃস্বার্থভাবে আইনি লড়াই করেছি।”

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ) গঠন করে তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথ ও আদালত অঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। সে কারণে একাধিক মামলার আসামি হওয়া এবং তৎকালীন প্রধান বিচারপতির প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে আদালত অবমাননার মামলার মুখোমুখিও হতে হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

জামিন সংক্রান্ত বিতর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “আমি একজন আইনজীবী। তাই আমার জবাবদিহিতা মাননীয় আদালত এবং বার কাউন্সিলের কাছে। কোনো আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন বা খণ্ডনের জায়গা আদালত ও বার কাউন্সিল, সোশ্যাল মিডিয়া নয়।”

তিনি আরও বলেন, “এই বিষয়ে জবাব দিতে গেলে মাননীয় আদালতকে সাক্ষী হিসেবে দাঁড় করাতে হয়, যা আমার পক্ষে কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। আমার ব্যক্তিগত মর্যাদার চেয়েও আদালতের মর্যাদা অনেক বড়।”

সবশেষে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল অভিযোগ করেন, একটি নির্দিষ্ট মহল ইচ্ছাকৃতভাবে তার রাজনৈতিক পরিচয়কে টার্গেট করে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তার ভাষায়, “ব্যক্তিগতভাবে আমি একটি সুনির্দিষ্ট মহলের ‘সুইট রিভেঞ্জ’ এর শিকার।”
 
হাদির জন্য দোয়া করে কায়সার কামাল বলেনম, ‘সে আবার আমাদের মাঝে সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক।’

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে আই উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পোস্টে ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের জামিন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “হাইকোর্ট বিচারিক কাজে স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান… আইন মন্ত্রণালয়ের সেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।”

পোস্টে তিনি দাবি করেন, “অস্ত্র মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন সহজে হওয়ার কথা নয়… প্রভাবশালী আইনজীবীদের ভূমিকা থাকলেই এসব জামিন সহজতর হয়।”

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, “জামিন বাণিজ্যে যারা লিপ্ত আছেন, তাদেরকে বলছি এবার থামুন… বিচারিক বিবেচনার বাইরে গিয়ে জামিন দিয়ে গণহত্যাকারীর অনুসারীদের সুযোগ করে দেবেন না।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়