শিরোনাম
◈ একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কোন দিকে? নানা প্রশ্ন ◈ স্থলপথে কেন বাংলাদেশি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা, জানাল ভারত ◈ খালেদা জিয়ার সঙ্গে কর্নেল অলির সাক্ষাৎ ◈ ভারতে কমেছে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার, বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে-সৌদি আরবে ◈ সাফ শি‌রোপা জেতা হ‌লো না বাংলা‌ে‌দে‌শের, ভার‌তের কা‌ছে টাইব্রেকারে হে‌রে গে‌লো ◈ ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, দিলীপ ঘোষের হুঁশিয়ারি: ‘বাংলাদেশ টক্কর দিলে বাঁচবে না’ ◈ যে ‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত হয় ◈ আইসিসি’তে জয় শাহ: ক্রিকেটে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করছে ভারত? ◈ সাবেক সেনাসদস্যদের বিক্ষোভ নিয়ে যা জানালেন আইএসপিআর ◈ ‘ইউনিফর্ম পড়ে আসছি, আমি কাপুরুষ না’- চাকরিচ্যুত সেনাদের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৯ মে, ২০২৫, ০১:২৩ রাত
আপডেট : ১৯ মে, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে ‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত হয়

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভরত ‎চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। আজ রোববার বিকেলে দাবিদাওয়া বিবেচনার আশ্বাস এবং কয়েক ঘণ্টা আলোচনার পর চাকরিচ্যুতদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

তিনটি শর্তে বিক্ষোভ স্থগিত করা হয়েছে বলে সন্ধ্যার পরে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া আট সদস্য জানান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরখাস্ত করা সৈনিক মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সৈনিক নাইমুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে সে কারাগারে। আগামীকাল সেনাবাহিনীর সদস্যরা ও আমাদের আট প্রতিনিধি গিয়ে তিনিসহ গ্রেপ্তার সবাইকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।’

কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘১০ বছরের নিচে যেসব সৈনিকের চাকরির বয়স ছিল, তাঁদের পুনর্বহালের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। যাঁদের চাকরির বয়স নেই, তাঁদের পেনশনের আওতাভুক্ত করা হবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। তবে নাইমুলসহ অন্যদের মুক্তি না দিলে ফের কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেই পর্যন্ত সবাইকে ঢাকায় অবস্থান করার আহ্বান জানানো হয়েছে।’

এর আগে আজ দুপুর থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিক্ষোভ শুরু করেন চাকরিচ্যুতরা। কর্মসূচির মধ্যেই সেনাবাহিনীর ‎ভেটেরান ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমানসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁদের কথা শোনেন।

বিকেলে প্রথম দফার আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাদের দাবিদাওয়াগুলো শুনেছি। আমরা সব দাবিদাওয়া নোট করেছি। এগুলো নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‎‎আমিনুর রহমান বলেন, ‘তাদের বলেছি, সবাইকে আলাদা আলাদা করে আবেদন করতে। আবেদনের ঠিকানা আমরা দিয়ে গেছি। ইনডিভিজুয়াল কেসের মেরিট অনুযায়ী আমরা বসব, আলাপ-আলোচনা করে আপনাদের যত দ্রুত সম্ভব, যতখানি দেওয়া সম্ভব, আমরা অ্যাড্রেস করব। এটাও বলেছি যে, সেনাবাহিনীর যে আইনশৃঙ্খলা, এটা অবশ্যই মেইনটেইন করতে হবে। আমরা মানবিকভাবে যতটুকু সাহায্য করার করব।’

‎‎তাঁরা কি আপনাদের কথা মেনেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে আমিনুর রহমান বলেন, ‘হ্যাঁ, তাঁরা মেনেছেন। তাঁরা অপেক্ষা করবেন। আমাদের কার্যক্রম চলবে।’

গতকাল শনিবার তাঁদের একজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আমিনুর রহমান বলেন, ‘ওটা একটা আইনগত বিষয়; মামলার বিষয় এবং তাঁকে আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সহায়তা করা যায়, আমরা করব। ৮০০-এর মতো অ্যাপ্লিকেশন পড়েছে, যার মধ্যে এক শর বেশি আমরা অ্যাড্রেস করেছি।

আপনাদের কথায় তাঁরা সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মনে তো হলো সন্তুষ্ট।’ সবশেষে তিনি এই কর্মসূচি সমাপ্ত করার অনুরোধ জানান।

‎‎পরে চাকরিচ্যুত নৌবাহিনীর নাবিক বাহাউদ্দিন বলেন, ‘নয় মাস ধরে আমাদের দাবিটি করে আসছি। আমাদের ব্যাপারটা কালক্ষেপণ হয়ে গিয়েছিল। তাই আমরা একটা অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আমাদের প্রধান সমন্বয়ককে ধরে নেওয়া হয়েছিল। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছে, কালকে বা পরশু দিনের মধ্যে প্রথম ধাপে একটা ফলাফল দেবে। চাকরিচ্যুত সবাইকেই বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে আসবে। যে অপরাধ করেনি, তাকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে আসা হবে। তবে গুরুতর অপরাধীকে দেওয়া যাবে না।’

‎বাহাউদ্দিন বলেন, ‘তাদের প্রতি বিশ্বাস রেখে আমরাও ধৈর্য ধরছি। তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখছি। তারা চাইলে আমাদের বিষয়গুলোর ডিসপোজাল দিতে পারে। তারা অবশ্যই দেবে, এই বিশ্বাস রয়েছে।’

এরপর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমানের গাড়িবহরের সামনে চাকরিচ্যুতরা শুয়ে পড়েন। পরে প্রেসক্লাবের ভেতর থেকে গাড়ি আর বের হতে পারেনি। পরে আমিনুর রহমান আবার গাড়ি থেকে নেমে সবাইকে বোঝান। তাঁর কথার বিপরীতে চাকরিচ্যুতরা প্রেসক্লাবে বসেই সমাধান করতে বলেন।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত এর কোনো সমাধান হয়নি। তখন থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছিল। প্রেসক্লাবের ভেতরে শতাধিক সেনাসদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সমঝোতার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রেসক্লাব থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। এরপর সেনা কর্মকর্তা সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

এদিকে এই অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকা সেনানিবাসের প্রবেশমুখ ও চারপাশে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া পাহারা। সকাল থেকে জাহাংগীর গেট, বিএএফ শাহীন কলেজ, মহাখালী রেলগেট, কাকলী, বনানীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়, ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্যরাও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জাহাংগীর গেট এলাকায় উভয় পাশে পুলিশ ও সেনাবাহিনী দিনব্যাপী কড়া পাহারায় ছিল। এ ছাড়া বিএএফ শাহীন কলেজের সামনে মহাখালী রেলগেটে, কাকলী, বনানী ও কচুক্ষেতেও ছিলেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে এসব এলাকায় কাউকে জড়ো হতে দেখা যায়নি। সূত্র: আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়