মাজহারুল মিচেল: [২] কানাডীয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিবিসির (কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন) শনিবার (বাংলাদেশ সময়) সকাল ৮টায় জনপ্রিয় অনুসন্ধানী বিভাগ ‘দ্য ফিফথ স্টেট’ এ ‘দ্য অ্যাসাসিন নেক্সট ডোর’ শিরোনামের ৪২ মিনিটের প্রতিবেদনে তাকে দেখানো হয়।
[৩] বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজ হাতে গুলি করে হত্যা ও আত্মস্বীকার করা এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে নিয়ে এই অনুসন্ধানী ভিডিও প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো তাকে একটি গাড়িতে পরিবারের লোকসহ দেখা যায়। গাড়িটি তিনি নিজেই চালাচ্ছিলেন। এমনকি ভিডিওতে টরন্টোর একটি এলাকাতে নিজের বাড়ির বারান্দায় তিনি কাজ করছেন বলে দেখানো হয়।
[৪] ভিডিওতে নূর চৌধুরী কোথায় আছেন, কী করছেন, এটা দেখালেও সুনির্দিষ্টভাবে তার গাড়ি ও বাড়ির নম্বর দেখানো হয়নি। জানা থাকলেও তথ্য আকারে সামনে আসেনি তেমন। তার অবস্থান নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রচারের মধ্য দিয়ে সেই ধোঁয়াশা কেটে যাবে এবং কানাডীয় সাধারণ মানুষ তাদের পাশের বাসায় থাকা ভয়ানক এই খুনি সম্পর্কে পরিষ্কার একটি ধারণা পাবে।
[৫] প্রতিবেদনে নূর চৌধুরীর কানাডায় পালিয়ে যাওয়া, ২৭ বছর সেখানে থেকে যাওয়া এবং খুনের অভিযোগে হওয়া শাস্তি কার্যকরে তাকে বাংলাদেশের ফেরত চাওয়ার বিষয়গুলো উঠে এসেছে। কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার বলেছেন, এই ইস্যু বাদে কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। কেবল বাংলাদেশি হাই কমিশনার হিসেবে নয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি চাই তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হোক।
[৬] ভিডিওতে, টরন্টোর নিজ ফ্লাটের ব্যালকনিতে নূর চৌধুরীকে এক ঝলক দেখানো হয়। গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আত্মগোপনে থাকা নূরকে ড্রাইভিং সিটে বসা অবস্থায় দেখা যায়। দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যান তিনি। দীর্ঘদিন অনুসরণ করে তাকে খুঁজে বের করেছে ফিফথ স্টেটের অনুসন্ধানী দলটি।
[৭] বঙ্গবন্ধুকে নিজ হাতে গুলি করে হত্যার পর কূটনীতিক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করেন নূর চৌধুরী। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে তিনি পালিয়ে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র, পরে কানাডায় ঢোকেন দর্শনার্থী হিসেবে। এরপর ১৯৯৯ সালে শরণার্থী হিসেবে থেকে যাওয়ার আবেদন করলে কানাডা সরকার তা নাকচ করে দেয়। আপিল করেও হেরে যান নূর চৌধুরী।
[৮] ২০০৯ সালে কানাডা থেকে নূরকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন কানাডীয় সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু বাংলাদেশে পাঠালে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে এমন শঙ্কার কথা জানিয়ে ২০১০ সালের দিকে সরকারের কাছে ‘প্রি রিমুভাল রিস্ক এসেসমেন্ট’র আবেদন করেন নূর চৌধুরী। যেহেতু কানাডা মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না, সেহেতু এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রায় ১৪ বছর ধরে সেখানে মুক্ত জীবনযাপন করছেন তিনি। সম্পাদনা: ইকবাল খান
এমএম/আইকে/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :