শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১১:৩২ দুপুর
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০১:৫৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শ্লোগানের কবি নাজমুল হক নজীরের ৬৮তম জন্মদিন আজ 

শ্লোগানের কবি নাজমুল হক নজীর

সনতচক্রবর্ত্তী: চিরায়ত বাংলার ঋতু বৈচিত্র্যের শরৎ প্রেমের অনন্য সুন্দর ছবি যেমন এঁকেছেন তাঁর কবিতায় তেমনি শরৎের শুভক্ষণেই শ্লোগানের কবি নাজমুল হক নজীর এর আবির্ভাব। একজন কবির স্বার্থকতা তো এখানে, পাঠককে কল্পনা আর সুন্দরের স্বপ্নে স্বপ্নচারী করে তোলা। সেদিক থেকে নাজমুল হক নজীর সফল ও স্বার্থক। আজ ২৫শে সেপ্টেম্বর কবির ৬৮তম আগমনী দিন।

কাশবন ফুলে ফুলে সাদা হয়
মেঘগুলো পাল তুলে ভেসে রয়
রোদ বৃষ্টির খেলা।
শিশির নাওয়া দূর্বাঘাসে
ঢেউয়ের দোলায় শাপলা হাসে
রংধনু রং মেলা।

জোনাক জ্বলে জোসনা হাসে
তারা হাসে মিটিমিটি
কাশবন মেঘের বহর
শরৎকালের রঙিন চিঠি।

পঙক্তিগুলি নাজমুল হক নজীরের অপ্রকাশিত কবিতার অংশ। 

ত্রিশোত্তর আধুনিক বাংলা কবিতায় নাজমুল হক নজীর একজন স্বতন্ত্র কাব্যসাহসী আধুনিক কবি। ১৯৫৫ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর  তিনি ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিয়ালদী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা বজলার রহমান মোল্লা, মাতা আছিরণ নেছা। একজন কবিকে সময়ের প্রয়োজনে কবিতা আর কলমকে করতে হয় প্রতিবাদের হাতিয়ার, কথা বলতে হয় প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হয়ে,একজন সময় সচেতন কবি হিসেবে নাজমুল হক নজীরের বেলায়ও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ১৯৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনীতির যে টানাপোড়ন দেখা দেয়, বাংলাদেশ হাঁটতে থাকে অন্ধকারের পথে, ঠিক সে সময়ে কবি “প্রেমের দাবিতে বলছি ” কবিতায় লেখেন–

পতাকা দুলছে বুনো হাওয়ায়/নেতা যাচ্ছে শহীদ মিনারে/ঘোষণা হতে আর কতোক্ষণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে একজন কিশোরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কবির জীবনী থেকে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে তিনি কখনো কোন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা নেননি এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বরণের পর তিনি নিজেকে আর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেননি।

পেশাগত পরিচয়ে নাজমুল হক নজীর সংবাদপত্রের সাথে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিকে কাজ করেছেন। দীর্ঘদিন পাক্ষিক ‘‘নজীর বাংল”র প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন। দেশে ও দেশের বাইরে লিটল ম্যাগাজিনে কবিতা লিখেছেন নিয়মিত। প্রথম কবিতা “হাওয়া থেকে পাওয়া” প্রথম কাব্যগ্রন্থ “স্বৈরিণী স্বদেশ”। এছাড়া নাজমুল হক নজীরের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ এছাড়া  “কালো জোছনার এক চুমুক”, “কার কাছে বলে যাই”, “ঘুরে দাঁড়াই স্বপ্ন পুরুষ”, “স্বপ্ন বাড়ি অবিরাম”, “এভাবে অবাধ্য রঙিন”, “ভিটেমাটি স্বরগ্রাম”, "বকুল ভেজা পথঘাট " প্রভৃতি তাঁর কাব্যগ্রন্থ। “সাধনার ফসল”, “আবার শ্লোগান”, “ইষ্টি কুটুম মিষ্টি কুটুম”কবি’র ছড়ার বই। সম্পাদিত গ্রন্থ- গাজী খোরশেদুজ্জামানের কিশোর কবিতা ফরিদপুর অঞ্চলের ইতিহাস বিষয়ক গবেষণা গ্রন্থ-“আমাদের  ফরিদপুর-১ অঞ্চল”।

সাহিত্যে অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ  পেয়েছেন ভারতের  রাহিলা সাহিত্য পুরস্কার, নজরুল পদক,  কবি শামসুর রাহমান স্মৃতি পুরস্কার, কবি খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার, কবি গোবিন্দ চন্দ্র দাস স্মৃতি পদক, শ্রী হরিদর্শন পুরস্কার, আমীর প্রকাশন সাহিত্য পুরস্কার, গীতিকার ক্লাব সম্মাননা, এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন সম্মাননা, মেরিট অব ডিএক্স পুরস্কার, নির্ণয় কবি বাবু ফরিদী স্মৃতি পদক, মির্জা আবুল হোসেন পদক ও পাঠক আন্দোলন বাংলাদেশ সাহিত্য পুরস্কর প্রভৃতি।

প্রিয় এই কবি, ২০১৫ সালের ২৩শে নভেম্বর রাজধানী ঢাকাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পরদিন কবিকে তাঁর প্রিয় প্রাঙ্গণ ঝর্ণাধায় সমাহিত করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়