পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে চপস্টিক দীর্ঘদিন ধরেই খাবার খাওয়ার প্রধান উপকরণ। তবে এখন শুধু এশিয়াতেই নয়, পশ্চিমা দেশগুলোতেও সুশি, নুডলস বা বিভিন্ন এশীয় খাবারের সঙ্গে চপস্টিক ব্যবহারের চল বেড়েছে।
অনেকের কাছে এটি নিছক একটি সাংস্কৃতিক অভ্যাস হলেও, গবেষণা বলছে, চপস্টিক দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস শরীর ও স্নায়ুর স্বাস্থ্যের ওপর বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
চপস্টিক ব্যবহার করতে গেলে হাতের আঙুল, কবজি ও চোখের মধ্যে নিখুঁত সমন্বয় প্রয়োজন হয়। এই কারণেই বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত চপস্টিক ব্যবহার স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে।
স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে
চপস্টিক ব্যবহার মূলত একটি সূক্ষ্ম মোটর স্কিলের কাজ। এতে হাতের ছোট পেশি ও স্নায়ুগুলোকে নির্দিষ্ট ছন্দে কাজ করতে হয়। এর ফলে মস্তিষ্কের মোটর কর্টেক্স অংশ সক্রিয় হয় এবং স্নায়ুর সংযোগ আরো শক্তিশালী হতে পারে।
বিশেষ করে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের সূক্ষ্ম কাজ মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং জ্ঞানীয় অবক্ষয়ের গতি কিছুটা হলেও কমাতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
মস্তিষ্কের দুই গোলার্ধের সমন্বয় বৃদ্ধি
চপস্টিক ব্যবহারের সময় মস্তিষ্কের বাম ও ডান অংশ একসঙ্গে কাজ করে। হাত ও চোখের মধ্যে দ্রুত তথ্য আদান-প্রদান হয়, যা সামগ্রিক স্নায়বিক কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
খাওয়ার গতি নিয়ন্ত্রণে রাখে
চামচ বা কাঁটার তুলনায় চপস্টিক দিয়ে একবারে কম খাবার তোলা যায়। ফলে খাবার খাওয়ার গতি স্বাভাবিকভাবেই ধীর হয়। ধীরে ধীরে খেলে খাবার ভালোভাবে চিবানো সম্ভব হয়, যা হজমের পক্ষে উপকারী।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ধীরে খাওয়ার ফলে মস্তিষ্ক সময়মতো পেট ভরা থাকার সংকেত পায়। এতে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
সচেতনভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে
চপস্টিক দিয়ে খেতে গেলে খাবারের প্রতি মনোযোগ বাড়ে।
খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও গঠনের দিকে বেশি নজর পড়ে। এতে ‘মাইন্ডফুল ইটিং’-এর অভ্যাস তৈরি হয়, যা খাবার উপভোগের পাশাপাশি অযথা খাওয়ার প্রবণতাও কমায়।
চপস্টিক ব্যবহার শুধু একটি ভিন্নধর্মী খাদ্যাভ্যাস নয়, বরং এটি স্নায়বিক স্বাস্থ্যকে সক্রিয় রাখতে এবং খাওয়ার অভ্যাসে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতেও সাহায্য করতে পারে। যদিও চপস্টিক কোনো রোগের চিকিৎসা নয়, তবুও এটিকে একটি স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস হিসেবে ধরা যেতেই পারে।