রিজিক বা জীবিকা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রদত্ত নিয়ামত। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া শুধু পরিশ্রমের মাধ্যমে কেউ একবিন্দু রিজিকও লাভ করতে পারে না। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় তার আয় আছে; কিন্তু বরকত নেই; আবার কেউ সামান্য আয়েও সুখে-শান্তিতে থাকে। এর পেছনে রয়েছে কিছু আধ্যাত্মিক ও নৈতিক কারণ। রিজিকের বরকত কমিয়ে দেয় এমন কয়েকটি কারণ হলো:
এক. গুনাহ ও অবাধ্যতা রিজিক হ্রাসের অন্যতম কারণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ রিজিক থেকে বঞ্চিত হয় গুনাহের কারণে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪০২২)। হারাম উপার্জন রিজিকের বরকত নষ্ট করে দেয়। মিথ্যা বলা, সুদ খাওয়া, অন্যায়ভাবে উপার্জন করা, প্রতারণা, পরনিন্দা, ব্যভিচার—এসব গুনাহ মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। ফলে জীবনে অশান্তি ও সংকট দেখা দেয়। অন্যের হক নষ্ট করে অর্জিত অর্থ বাহ্যিকভাবে অনেক মনে হলেও তাতে প্রশান্তি থাকে না।
দুই. অকৃতজ্ঞতা ও অহংকার রিজিক কমিয়ে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, আমি অবশ্যই তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেব; আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে আমার শাস্তি কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
তিন. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা রিজিককে সংকুচিত করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে চায় তার রিজিক বৃদ্ধি পাক এবং আয়ু দীর্ঘ হোক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৮৬)
চার. জাকাত ও দান-সদকা না করা রিজিকে সংকীর্ণতা সৃষ্টি করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা যা কিছু ব্যয় করো, তিনি তদস্থলে অন্য জিনিস দিয়ে দেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।’ (সুরা সাবা: ৩৯)
এ ছাড়া নামাজে গাফিলতি, অপচয়, হিংসা, কপটতা, পারিবারিক কলহ ও আল্লাহর ওপর ভরসার অভাবও রিজিক কমে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
রিজিক বৃদ্ধির উপায় হলো তাকওয়া অবলম্বন করা, নামাজে যত্নবান হওয়া, ইস্তিগফার করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক দৃঢ় রাখা, হালাল উপার্জনে অটল থাকা এবং দান-সদকা করা।
সূত্র: আজকের পত্রিকা