শিরোনাম
◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু ◈ হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন আদায় করে নেবে: মির্জা ফখরুল ◈ প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর, ২০২৩, ১২:১৭ দুপুর
আপডেট : ১৪ অক্টোবর, ২০২৩, ০২:৫৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভূয়া ডাক্তারদের লাইসেন্স বাতিল জরুরি, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

মুসবা আলিম তিন্নি: [২] বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের অ্যাডভাইজার ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেছেন চিকিৎসা ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রথম ধাপ হিসেবে ভূয়াডাক্তারদের চিহ্নিত করে তাদের লাইসেন্স বাতিল এবং যারা এসব অবৈধ সার্টিফিকেট দিচ্ছে তাদের বিরূদ্ধে কঠোর কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডেন্টাল এণ্ড মেডিকেল কাইন্সিল(বিএমডিসি) মূলত এ সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। কিন্তু কিভাবে একজন ভূয়া ডাক্তার সার্টিফিকেট পাচ্ছে সেটা সন্ধান করা উচিত এবং কারা এই মেডিকেল প্রশ্নপত্র ফাঁস করার মতো গর্হিত কাজের সাথে লিপ্ত আছে তাদের দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে । এ ক্ষেত্রে পুলিশ, সিআইডিকে আরও সতর্ক হতে হবে।

[৩] রাশনা ইমাম জানান, চিকিৎসাক্ষেত্রে অনিয়ম রোধে ‘আলাপ’ নামে একটি সংস্থা কাজ করছে। অপ্রয়োজনীয় সি-সেকশন রোধ এবং একজন প্রসূতির জটিল পরিস্থিতি দেখা না দিলে তাকে সিজারে বাধ্য করা না হয়, এসব বিষয় দেখভাল করা হচ্ছে। মুনাফালোভী ডাক্তার প্রসূতি দেখলেই হালকা পরীক্ষার পর সিজার করার পরামর্শ দেয়। এটি রোধে হাইকোর্ট একটি নীতিমালা দিয়েছে। জনসচেতনতা তৈরি করতে নীতিমালাগুলো আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে বলেছেন আদালত। 

[৪] ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ এর বেশি সিজার কোনো দেশেই প্রয়োজনীয় হতে পারে না। বাংলাদেশে প্রায় ৩১ শতাংশ এমনকি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৮৩ শতাংশ এবং সরকারি হাসপাতালে এর হার ৩৫ শতাংশ। এনজিও হাসপাতালগুলোতে ৩৯ ভাগ সিজার হচ্ছে। এটা যে এলার্মিং রাইজ, রেটটা যে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা থামানোর জন্য এ মামলা করা হয়। 

[৫] রাশনা ইমাম বলেন, চীনে সিজারের হার বিশ্বের মধ্যে খুবই খারাপ অবস্থায় ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে নতুন রুলস রেগুলেশন প্রণয়ন করে তা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামেগঞ্জে যে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো আছে সেগুলো কোনো ধরনের সরকারি মনিটরিং ছাড়াই সিজারিয়ান সেকশন করছে এবঙ কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেকের অমানবিক মৃত্যুও ঘটেছে।

[৬] তিনি আরও জানান, আমরা জরুরি স্বাস্থ্য সেবার ওপরেও কাজ করেছি। আগে জরুরি স্বাস্থ্য সেবার ওপরে কেনো আইন ছিলো না এখন হাইকোর্ট থেকে জনস্বার্থমূলক একটি নীতিমালা রয়ের মাধ্যেমে এসেছে এবং বর্তমানে এটি সবাই মানতে বাধ্য। এছাড়া অর্গান ডেনেশন নিয়ে একটি আইন আছে যেটি আমাদের মামলা করার প্রেক্ষিতেই সংশোধন করা হয়। নিকট আত্মীয়ের যে তালিকা রয়েছে অর্থাৎ যারা অর্গান ডোনেট করতে পারবে সেই তালিকাটা বাড়ানো হয়েছে কারণ আমাদের দেশে এমনিতেই অর্গান ডোনেটে ঘাটতি রয়েছে। 

[৭] রাশনা ইমাম বলেন , চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় আইনের ঘাটতিগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুসরণে এবং সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় অতিরিক্ত আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয় সেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি আমরা। তিনি বলেন ২০১০ সালেই চিকিৎসকদের বিএমডিসির সার্টিফিকেট প্রদানের ক্ষেত্রে একটি আইন করার পর তা অনুসরণ না হলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত। 

[৮] এই বিষয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ডেন্টাল হাসপাতালের ডাক্তার সিহাব জানান, বিএমডিসির তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তাদের অনেকে টাকার বিনিময়ে এমন ভুয়া ডাক্তারি সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। যারা এমবিবিএস এবং যারা বিডিএস তাদের একটা তালিকা অনলাইনে থাকে এই তালিকার বাইরে যারা সার্টিফিকেট কেনে তাদের তালিকা মূলত অনলাইনে পাওয়া যাবে না কারণ ভূয়ারা তালিকাভুক্ত হয়না। তারা কেবল টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট কিনে চেম্বার বসায়। 

[৯] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আমাদের নতুন সময়কে বলেন, সামাজিক অবক্ষয়ের অংশ হিসেবে শুধু ভুয়া ডাক্তার নয়, বিশ^বিদ্যালয়ে হচ্ছে, বিসিএসএ হচ্ছে এমনকি চাকরির পরীক্ষাতেও হচ্ছে। এভাবে কিছু অসৎচক্রের প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে যাদের মেধা নাই তারা টাকার বিনিময়ে এই প্রশ্নপত্রগুলো কিনে নিচ্ছে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে । 

[১০] অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে দশম শ্রেনী পর্যন্ত নীতির শিক্ষা আরও বাড়াতে হবে। দরকার হলে অবিভাবকদেরও এই শিক্ষার আওতায় নেয়া উচিত। আর এভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসে যদি দেশ মেধাহীন হয়ে পড়ে তাহলে যে বাংলাদেশের ভবিষৎ শঙ্কার মুখে এটা বললে বাড়িয়ে বলা হবে না। এজন্য প্রয়োজন প্রশাসনিক অনুসন্ধান। যারা ভুয়া সার্টিফিকেট কিনছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে এবং যতবড়ই নামীদামী, ক্ষমতাধর মানুষ হোক না কেনো এদের বিরূদ্ধে যদি কঠোর আইনত ব্যবস্থা নেয়া না হয় যদি এক্ষেত্রে আইনের ফাঁক থাকে তাহলে তো এটা ব্যপক হারে বেড়ে যাবে এবং দেশ পুরোপুরি মেধাশূন্য হয়ে পড়বে। সম্পাদনা: রাশিদ 

এমটি/আর/এইচএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়