খালিদ আহমেদ: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের যুক্তরাষ্ট্র সফরের একদিন পরই ইরানের পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোকেমিক্যাল কেনার কারণে একটি ভারতীয় কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র। ভারত-ভিত্তিক পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি তিবালাজি পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ দপ্তর। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং হংকংয়ের-সহ একটি গ্রুপ অব কোম্পানির অংশ এই ভারতীয় প্রতিষ্ঠান।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আমলে নেয়নি ভারত। ভারতের যুক্তি ছিল ইউরোপ ওই নিষেধাজ্ঞার পরও যে পরিমান রুশ তেল কিনছে তারচেয়ে খুব কম পরিমান তেলই ভারত কিনছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে রুবল ও রুপিতে লেনদেনে বেশ কিছুটা অগ্রসর হয়েছে নয়াদিল্লি। এর আগে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ কেনার পরও ভারতের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র যেমনটি ওয়াশিংটন দিয়েছিল একই কারণে ইস্তাম্বুলের বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছে ইরানের ব্রোকার এবং ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও হংকংয়ের বেশ কয়েকটি ফ্রন্ট কোম্পানি। এরা ইরানের পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের জন্য অর্থ স্থানান্তর এবং শিপিংয়ের কাজ করেছে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারি অফিসের ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (ওএফএসি) দপ্তরের তথ্য অনুসারে, তিবালাজি পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড মিথানল এবং বেইজ অয়েল-সহ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কিনেছে। ট্রিলিয়ান্স নামে একটি ইরানি কোম্পানির কাছ থেকে তারা এসব পণ্য কিনেছে, যারা মূল্য চীনে শিপিংয়ের জন্য বিদেশি ক্রেতাদের কাছে ইরানি পণ্য বিক্রির মধ্যস্থতা করে।
মার্কিন ট্রেজারি দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘আজ, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারি অফিসের ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল বিভাগ দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোর একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।’
‘আজকের পদক্ষেপটি ইরানের ব্রোকারদের এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং ও ভারতের বেশ কয়েকটি ফ্রন্ট কোম্পানিকে লক্ষ্য করে নেওয়া। এরা ইরানি পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের বিপরীতে অর্থ স্থানান্তর এবং শিপিংয়ে জড়িত।’ যোগ করে মার্কিন ট্রেজারি দপ্তর।
অবশ্য ভারত সরকার এ ব্যাপারে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে ওয়াশিংটন এও বলে দিয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে যেসব দেশ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে ২০১৯ সালে ভারত ইরান থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করে দেয়। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশের জন্য ইরানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞায় ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নবায়ন করেনি। সম্পাদনা: রাশিদ
আপনার মতামত লিখুন :