শিরোনাম
◈ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে আজ: সালাহউদ্দিন আহমদ (ভিডিও) ◈ সিলেট পৌঁছেছেন তারেক রহমান ◈ আজ রাজধানীতে চলাচলে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা ◈ হাদি হত্যাকাণ্ডের পর নিরাপত্তা শঙ্কা: গুরুত্বপূর্ণ ১২৭ নেতা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ◈ ৩০০ ফিট ও কুড়িল এলাকায় জনসমাগম, প্রস্তুত ১৭ অ্যাম্বুলেন্স ◈ ১৭ বছর পর তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: কনকনে শীত উপেক্ষা করে সূর্যোদয়ের আগেই পূর্বাচলে মানুষের ঢল (ভিডিও) ◈ সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন নির্দেশনা হাইকোর্টের ◈ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরীর পদত্যাগ ◈ হঠাৎ করে ওএমএসের চাল-আটা বিক্রি বন্ধ, বিপাকে দরিদ্র মানুষেরা ◈ দেশে ফিরতে সপরিবারে হিথ্রো বিমানবন্দরে তারেক রহমান (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:৩৫ সকাল
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করলে ২০ বছরের জেল: ভেনেজুয়েলায় নতুন আইন পাস

ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অবরোধকে সমর্থন বা অর্থায়নে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে নতুন একটি আইন পাস করেছে দেশটির জাতীয় পরিষদ। এই আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর শাসক দল নিয়ন্ত্রিত জাতীয় পরিষদে মঙ্গলবার আইনটি অনুমোদন পায়।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনটি পাস হওয়ার ঠিক আগের দিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মাদুরো সরকার এসব পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি ‘সমুদ্রদস্যুতা’ হিসেবে আখ্যা দেয়।

আইনটি সংসদে উপস্থাপন করার সময় আইনপ্রণেতা জিউসেপ্পে আলেসান্দ্রেল্লো বলেন, এই আইন দেশের অর্থনীতি সুরক্ষা এবং মার্কিন অবরোধের ফলে জনগণের জীবনমানের অবনতি ঠেকানোর উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশি চাপ ও নিষেধাজ্ঞা ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্বের জন্য সরাসরি হুমকি।

কারাকাসের অভিযোগ, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আগ্রাসী নীতি আরও জোরদার করেছে। এর মধ্যে লাতিন আমেরিকায় ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি, তেলবাহী জাহাজ জব্দ, মাদক পাচারের অভিযোগে নৌকায় হামলা এবং ভেনেজুয়েলায় স্থল অভিযান চালানোর হুমকির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। ভেনেজুয়েলা সরকার দাবি করেছে, এসব পদক্ষেপের বৈধতা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত সামুয়েল মোনকাদা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে কাজ করছে এবং ভেনেজুয়েলার জনগণকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার চেষ্টা করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, হুমকি ভেনেজুয়েলা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র সরকারই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।

এই পরিস্থিতিতে চীন ও রাশিয়া প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া মন্তব্য করেন, ট্রাম্প প্রশাসন এমন একটি রাজনৈতিক ও সামরিক ‘ছক’ তৈরি করছে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য লাতিন আমেরিকান দেশের বিরুদ্ধেও প্রয়োগ করা হতে পারে।

রাশিয়া ও চীনের পাশাপাশি কলম্বিয়াসহ কয়েকটি দেশ ভেনেজুয়েলার প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা ও উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। তবে আর্জেন্টিনা, পানামা ও চিলির মতো ডানপন্থি সরকারগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিশেষ অভিযানের জন্য বিমান ও সেনা পরিবহনকারী উড়োজাহাজ মোতায়েন করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, এটি দক্ষিণ আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌবহর।

মাদুরো সরকারের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হলো ভেনেজুয়েলার সরকার উৎখাত করে দেশটির বিপুল তেলসম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। অন্যদিকে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ বলেন, তেল বিক্রিই মাদুরো সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং তিনি আবারও ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগ তোলেন।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করে বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে মাদুরো সরকার দেশের অভ্যন্তরে বিরোধী দল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়ন বাড়িয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর পরিস্থিতি আরও কঠোর হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিরোধীদের দাবি, নির্বাচনে প্রকৃত বিজয়ী তারাই হলেও আন্তর্জাতিকভাবে মাদুরোর জয় খুব কম দেশই স্বীকৃতি দিয়েছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়