শাহীন খন্দকার: ঢাকার পাঁচটি এলাকার সাতশত অস্থায়ী কেন্দ্রে কলেরার মুখে খাওয়ার দ্বিতীয় ডোজ টিকার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (৩ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহায়তায় আইসিডিডিআরবি ৩ আগস্ট থেকে আগামী বুধবার (১০ আগস্ট) পর্যন্ত দ্বিতীয়-ডোজ কলেরা টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করবে। তবে, শুক্রবার (৫ আগস্ট) ও আশুরার ছুটির দিন মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) টিকা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী, সবুজবাগ, দক্ষিণখান, মিরপুর ও মোহাম্মদপুরের প্রথম-ডোজ কলেরা টিকা গ্রহণকারী ২৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫৮৫ জনকে দ্বিতীয়-ডোজ কলেরা টিকা দেওয়া হবে। এর আগে গত ২৬ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত প্রথম-ডোজ কলেরা টিকা গ্রহণকারীরা, তাদের স্ব স্ব কেন্দ্রে টিকাদান কার্ড দেখিয়ে দ্বিতীয়- ডোজ কলেরা টিকা খেতে পারবেন।
বুধবার সরেজমিনে কয়েকটি টিকা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কোন ধরনের অপেক্ষা ছাড়াই কার্ড নিয়ে আসলেই সব বয়েসের মানুষ স্বল্প সময়ের মধ্যেই টিকা নিতে পারছেন। প্রায় কেন্দ্রেই মানুষ ব্যাপক আগ্রহসহকারে টিকা খাচ্ছেন।
মোহম্মদপুর আদাবর ১৬ নম্বর রোডের টিকা দান কর্মী শামিম বলেন, সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষকে আমরা টিকা খাইয়েছি। এই কেন্দ্রে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিলেন প্রায় ৫২০০ জন। আশা করছি ১০ আগস্ট পর্যন্ত যারা প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন, তাদের সবাইকে আমরা টিকা দিতে পারবো।
একই এলাকায় আরেকটি টিকা কেন্দ্রে কর্মরত শাহেদ খান বলেন, সকাল থেকেই আমরা টিকা দিচ্ছি। প্রায় ২০০ লোক এ পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে। মানুষ আগ্রহসহকারে টিকা নিচ্ছেন। আজকে আমরা শুধু দ্বিতীয় ডোজ টিকা খাওয়াচ্ছি। অনেকেই প্রথম ডোজ নিতে আসছেন, কিন্তু নির্দেশনা মোতাবেক তাদেরকে টিকা খাওয়াতে পারছি না।
তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে আমরা প্রথম ডোজ টিকা প্রতিদিন প্রায় আটশত থেে নয়শত মানুষকে টিকা খাওয়ানো হয়েছে। আরও বেশি প্রচারণা হলে অনেক বেশি লোক টিকার জন্য আসতেন। এদিকে কলেরার দ্বিতীয় ডোজ টিকা খাওয়া উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, আশা করি যারা প্রথম ডোজ কলেরা টিকা খেয়েছেন, তারা অবশ্যই দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়ে নিজেদেরকে এ রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখবেন।
আইসিডিডিআরবির সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, সবার প্রতি অনুরোধ কলেরা টিকা নেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে ও প্রিয়জনদেরকে অন্যান্য রোগ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম যেমন, নিরাপদ পানির ব্যবহার, নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করবেন এবং ডায়রিয়াসহ অন্যান্য সংক্রমক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।
টিকা কার্যক্রমে দক্ষিণ কোরিয়ার ইউবায়োলোজিক্স কোম্পানির তৈরি ইউভিকল প্লাস নামের কলেরার টিকা এক বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সীদের দেওয়া হচ্ছে। এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত। গর্ভবতী নারী এবং যারা বগত ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনো টিকা নিয়েছেন, তারা ছাড়া সবাই এই টিকা নিতে পারবেন। এই টিকা নেওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনো টিকা নেওয়া যাবে না।
আপনার মতামত লিখুন :