ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল এলাকায় প্রকাশ্যে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে চলছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। এই নৃশংস ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মতো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান দেশের প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।
ঘটনার ভিডিও দেখে ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন জানিয়ে আজহারী ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে লেখেন—
"আহ, কী নৃশংস দৃশ্য! কী বিভৎস! আমরা মানুষ হবো কবে? ভিডিউটা দেখে সত্যিই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। মানুষ এতো নিষ্ঠুর আর নির্দয় হতে পারে!
দুর্বৃত্তদের শক্ত হাতে দমন না করলে, তারা এভাবেই নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিবে। দিনের আলোয় জনসমক্ষে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে কেউ পার পেয়ে যেতে পারে না। এসব খুনি, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
আমরা সকল জুলুমের অবসান চাই। বাংলাদেশে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর কখনো না ঘটে। আমরা আমাদের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই।”*
আজহারীর এই স্ট্যাটাস মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নানা স্তরের মানুষদের হৃদয়ে নাড়া দেয়।
প্রসঙ্গত, ৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থলে পিটিয়ে এবং মাথায় ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করা হয় তাকে। এমনকি হত্যার পর মরদেহের উপরও পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়।
এই ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়— একটি হত্যা মামলা এবং অপরটি অস্ত্র আইনে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে এজাহারভুক্ত আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন এবং তারেক রহমান রবিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়। এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের দুই নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, তাদের কোনো অপরাধের দায় সংগঠন নেবে না এবং নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখতে বলা হয়েছে।
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে আজহারীর মতো অনেকেই রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি প্রশ্ন তুলছেন এবং দোষীদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।